৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫ পৌষ ১৪৩১, ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ঘরেই হেয়ার স্পা

-

হেয়ার স্পা হচ্ছে একটি থেরাপি যা আপনার চুলকে তার সেরা অবস্থায় নিয়ে যেতে এবং সেই অবস্থাটি ধরে রাখতে সাহায্য করে। হেয়ার স্পার প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ। এই প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারতে আপনিও পেতে পারেন সুন্দর, স্বাস্থ্যবান, ঝলমলে ও বাউন্সি চুল।
কিভাবে করতে হয় হেয়ার স্পা : হেয়ার স্পা চুলের একটি পরিপূর্ণ ট্রিটমেন্ট যা বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপের সমন্বয়ে গঠিত। এই ধাপগুলোর একটিও বাদ দেয়া যাবে না। ঝলমলে সুন্দর চুল পেতে প্রতিটি ধাপ নিষ্ঠার সাথে অনুসরণ করতে হবে।
মাথার ত্বক ম্যাসাজ করা : চুলের ট্রিটমেন্ট শুরু করার এটিই সর্বপ্রথম ধাপ। নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল হালকা গরম করে নিয়ে মাথার তালুতে ঘষে ঘষে লাগাতে হবে। এতে করে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং নতুন চুল গজায়। আপনার চুল তৈলাক্ত হলে আমন্ড অয়েল বা আমলা তেল লাগাতে হবে, কারণ এই দু’টি তেল খুব হালকা। যদি আপনার চুল হয় স্বাভাবিক, আপনি বেছে নিতে পারেন নারকেল তেল, আমন্ড অয়েল বা অলিভ অয়েল। আর আপনার চুল যদি হয় রুক্ষ বা শুষ্ক, আপনাকে কয়েকটি তেলের মিশ্রণ বানিয়ে চুলে লাগাতে হবে। নারকেল তেল, আমন্ড অয়েল, অলিভ অয়েলের যেকোনো একটি বা দু’টির তেল একটি ছোট পাত্রে নিয়ে এর সাথে তিলের তেল বা ক্যাস্টর অয়েলের যেকোনো একটি মিশিয়ে চুলে ভালো মতো ঘষে ঘষে লাগিয়ে নিতে হবে।
স্টিমিং : হেয়ার স্পা গুরুত্বপূর্ণ ধাপগুলোর একটি হলো স্টিমিং। দু’টি প্রক্রিয়াতে চুলে স্টিমিং করা যায়। চুল স্টিম করার জন্য বিশেষভাবে তৈরি স্টিমার পাওয়া যায় বাজারে। এটি কিনে নিলে শুধু স্টিম তৈরি করে চুলে খুব সহজেই স্টিম দেয়া যায়। স্টিমার হাতের কাছে না থাকলেও কোনো সমস্যা নেই। ঘরে স্টিম করার আরেকটি পদ্ধতি আছে যা খুবই সহজ ও সাশ্রয়ী। দুই লিটার পানি ফুটিয়ে নিন। এবার এই পানিতে একটি তোয়ালে ভিজিয়ে নিংড়ে নিন। খেয়াল রাখবেন যেন তোয়ালে গরম থাকে। এবার এই গরম তোয়ালে দিয়ে সারা চুল ও মাথার তালু পেঁচিয়ে ঢেকে রাখুন। ২ মিনিট পরপর তোয়ালেটি আবার গরম পানিতে চুবিয়ে নিংড়ে আবারো চুলে পেঁচিয়ে রাখুন। খেয়াল রাখবেন যেন সব চুল ও পুরো মাথা ঢেকে থাকে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চুলের গভীরে তেল পৌঁছায়। ১৫-২০ মিনিট স্টিম দিতে হবে।
চুল ধোয়া : ঘরে হেয়ার স্পা করার সেরা দিকটি হলো আপনি প্রথম দু’টি ধাপ আগের রাতে করে পরের তিনটি ধাপ পরের দিন সকালে করতে পারছেন, এতে করে আপনার চুল সারারাত তেলের সব পুষ্টি পাবে। তাই চেষ্টা করবেন চুলে তেল দিয়ে ম্যাসাজ করা ও স্টিম দেয়ার কাজটি আগের রাতে করতে এবং পরের তিনটি ধাপ পরের দিন করতে। তৃতীয় ধাপে এবার শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুতে হবে। আপনার চুলে যে শ্যাম্পুটি সবচেয়ে বেশি সুট করে সেটা দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
কন্ডিশনিং : শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধোয়ার পর কন্ডিশনিং করতেই হবে। চাইলে কেনা কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন, অথবা ঘরেই প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে কন্ডিশনার বানিয়ে নিতে পারেন।
হেয়ার মাস্ক : এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ধাপ কারণ এটিই সমস্ত পুষ্টি চুলে লক করে দেয়। বাজারে বিভিন্ন ধরনের হেয়ার মাস্ক পাওয়া যায়। সেগুলোও ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে সবচেয়ে ভালো হয় ঘরে তৈরি হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করলে। চুলকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করতে ও চুলের ড্যামেজ মেরামত করতে যে মাস্কটি ব্যবহার করবেন তা হলো : ২টি ডিম, ৩ টেবিল চামচ মধু, একটি কলা ও ৩ টেবিল চামচ নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল একসাথে ব্লেন্ড করে নিন। এই হেয়ার মাস্কটি সারা চুল ও তালুতে লাগান। ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
ডাবল ক্লিনিং : হেয়ার মাস্ক লাগানোর ৩০ মিনিট পর আবারো শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুতে হবে। তবে এবার প্রথমে পানি দিয়ে ভালোভাবে চুল ধুয়ে চুল থেকে হেয়ার মাস্ক দূর করতে হবে। তারপর একদম অল্প পরিমাণ শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ধুতে হবে যেন চুলে হেয়ার মাস্ক একটুও অবশিষ্ট না থাকে।
চুল শুকানো : চুল ধোয়া শেষে আলতো করে তোয়ালে দিয়ে চুল মুছে নিয়ে চুল ছেড়ে রাখুন যাতে চুল প্রাকৃতিকভাবেই শুকিয়ে যায়। হেয়ার স্পা যেদিন করবেন সেদিন ভুুলেও হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকাবেন না। এতে চুলের ক্ষতি হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement