বাংলাদেশে রেনেসাঁ হোটেলস
- তামিম হাসান
- ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০
রেনেসাঁ ঢাকা গুলশানের মাধ্যমে বাংলাদেশে পা রাখল রেনেসাঁ হোটেলস। বিজনেস সেন্টারের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত, অত্যাধুনিক ডিজাইনের এই হোটেল স্বদেশী দৃষ্টিভঙ্গিরমাধ্যমে অতিথিদের এক অপ্রত্যাশিত অভিজ্ঞতা প্রদানের জন্য এখন প্রস্তুত। অপ্রত্যাশিত অভিজ্ঞতা আবিষ্কারে অতিথিদের সাহায্য করার জন্য সুপরিচিত আন্তর্জাতিক লাইফস্টাইল হোটেল ব্র্যান্ড, রেনেসাঁ হোটে ঢাকার গুলশানে উদ্বোধন হয়েছে। এই উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশে পা রাখল রেনেসাঁ হোটেলস, যেটি দেশে চারটি আন্তর্জাতিক হোটেল ব্র্যান্ড হিসেবে ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনাল পোর্টফোলিওকে আরো বর্ধিত করল।
প্রিমিয়ার হোটেল ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড প্রিমিয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. এইচ বি এম ইকবাল এই মনোমুগ্ধকর নতুন হোটেলের সূচনালগ্নে গর্বিত হয়ে বলেন, ‘ঢাকায় ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনালের এই নবতম সংযোজন আনতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত, আমি বিশ্বাস করি সর্বোচ্চ পর্যায়ের সেবা প্রদানের মাধ্যমে এই শহরে আগত সব পর্যটকদের জন্য এটি তীর্থস্থান হতে যাচ্ছে।’
এই আনন্দঘন পরিবেশে প্রিমিয়ার হোটেল ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড প্রিমিয়ার গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মইন ইকবাল বলেন, ‘রেনেসাঁ ঢাকা গুলশান সম্পূর্ণ নিজের মতো করে একটি প্রশান্তিমূলক এবং আরামদায়ক পরিবেশ প্রদানে প্রস্তুত। ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনালের প্রশিক্ষিত এবং চমৎকার আতিথেয়তায় সাদরে অভ্যর্থনা জানিয়ে গুলশানে আমাদের অতিথিদের জীবনের ভারসাম্যতা উপলব্ধিতে দারুণ সুযোগ প্রদানে আমরা বদ্ধপরিকর।’
ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়ার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নীরজ গোভিল বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনালের পোর্টফোলিওতে নবতম সংযোজন, রেনেসাঁ ঢাকা গুলশানে ব্যবসায়ের কাজে এবং অবসর সময় কাটাতে আসা উভয় ধরনের আগতদের স্বাগত জানাতে আমরা অপেক্ষা করছি। তিনি আরো বলেন, যারা সর্বদা নতুন কিছু আবিষ্কারের জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকেন, প্রত্যেকবার তারা যখন শহরে আসবেন, তখন তাদের অনুপ্রেরণা জোগাতে রেনেসাঁ গুলশান হোটেলটির বদ্ধপরিকর। বাংলাদেশে দ্রুত উদীয়মান সাংস্কৃতিক অথবা ব্যবসার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত লাভ করা ঢাকায় এই নয়া উদ্বোধনের মাধ্যমে স্থানীয় বা স্বদেশী দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে প্রাণচঞ্চলশহর এবং এটির প্রকৃত স্বাদ অনুভব করতে অতিথিদের দারুণ সুযোগ প্রদান করা হচ্ছে।’
ব্র্যান্ডের সুপরিচিত জাঁকজমকপূর্ণ ডিজাইন রণকৌশলের সাহায্যে, ২১১টি রুম বিশিষ্ট রেনেসাঁ ঢাকা গুলশানের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের সংস্কৃতি নতুনরূপে তুলে ধরা হয়েছে, যেটি সমসাময়িক স্টাইল এবং স্থানীয় সংস্কৃতির সংমিশ্রণে তৈরি করা হয়েছে।
অপূর্ব সুন্দর শাপলা আকার ফুটিয়ে তোলা কারপেট এবং স্থানীয় হস্তশিল্পের মাধ্যমে প্রস্তুত করা বুননচিত্র রুমগুলোকে বাড়তি আকর্ষণ প্রদান করে। সুতো এবং গোল্ড থ্রেডের মিশ্রণ ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন প্যাটার্নে নিখুঁতভাবে বোনা জামদানির কাজ দিয়ে সাজানো প্রতিটি রুমের জন্য হেড বোর্ড হোটেলের রঙ এবং রূপকে আরো আকর্ষণীয় এবং সমৃদ্ধতর করে তুলেছে। দৃষ্টিনন্দন লবি, রেস্তোরাঁ এবং স্থানগুলোর ডিজাইন এই হোটেলের স্থানীয় সংযোগকে আরো জোরালো করেছে।
অসীম দিগন্তের রূপ, অন্যান্য নৈশভোজের বিপুল সম্ভার প্রদানকারী পাঁচটি রেস্তোরাঁ অতিথিদের অভিজ্ঞতাকে স্মরণীয় করে রাখবে। স্থানীয় থেকে আন্তর্জাতিক, সব রকম খাবার এখানে পাওয়া যাবে। সুপরিচিত রেস্তোরাঁ সিয়ারে পাবেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খাবারের সংমিশ্রণের অভিজ্ঞতা। সিয়ার বার হল শহরের প্রথম জ্যাজ বার এবং স্থানীয় স্বাদের ককটেল ও মকটেলসহ লাইভ মিউজিক উপভোগ করার একমাত্র ১৯ তলে অবস্থিত সুপরিচিত, আর বার হল নতুনভাবে সাজানো পুলসাইড রেস্টুরেন্ট যেখানে শহরের অসাধারণ রূপ প্রত্যক্ষ করার পাশাপাশি পাবেন অভিনবটাটকা জুস, চা এবং বিয়ার। দ্য গুলশান বেকিং কোম্পানি হল একটি ফরাসি স্টাইলের বিপণি যেখানে পাবেন কফি, বিভিন্ন রকমের চা এবং স্যালাড। এর সাথে পাওয়া যাবে স্থানীয় উপাদান থেকে প্রস্তুত করা জিলাটোর বিপুল সম্ভার। ৬,৫০০ বর্গফুটেরও বেশি এলাকাজুড়ে অবস্থিত বৈঠক এবং আহারের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা, সাথে যথাযোগ্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে নির্মিত পরিকাঠামো এই হোটেলকে ঘনিষ্ঠ, ব্যক্তিগতএবং সামাজিক অনুষ্ঠান সহযোগে বড় মাপের বৈঠক, সম্মেলন এবং বিয়ের আয়োজনের জন্য উপযুক্ত করে তুলেছে। অবসর যাপনের অতিরিক্ত সুবিধা হিসেবে এখানে রয়েছে একটি সম্পূর্ণ ফিটনেস সেন্টার, একটি বড় পুল এবং বিলাসবহুল স্পা।
দ্য রেনেসাঁ হোটেল তাদের সুপরিচিত নেভিগেটর কেয়ারটেকার প্রোগ্রামও চালু করবে, যেখানে অতিথিদের সাথে পরিচয় হবে স্থানীয় বাছাই করা রতœদের। এ ছাড়া এই ব্র্যান্ডের পরিচিত ইভনিং অ্যাট রেনেসাঁ সেরা সঙ্গীত, শিল্প, খাবার ও হোটেলে আরো নানা অভিজ্ঞতা প্রদান করবে। স্থানীয়দের সাথে পরিচিত হতেও অতিথিদের উৎসাহ প্রদান করা হবে।
দ্য রেনেসাঁ ঢাকা গুলশানের জেনারেল ম্যানেজার জেরোমি লিয়েনার্ট বলেন, ‘ঢাকায় আতিথেয়তার ক্ষেত্রে একটি আধুনিক এবং নতুন মুখ হয়ে উঠতে চলেছে রেনেসাঁ ঢাকা গুলশান। এটি শহরে একটি নতুন নজির সৃষ্টি করবে। তিনি আরো বলেন, আমাদের আকর্ষণীয়, নতুন নৈশভোজের সুবিধা, অবসর সময় কাটানোর নানা সুবিধা এবং অনসাইট নেভিগেটর শহরে অতিথিদের নতুন অভিজ্ঞতা প্রদান করবে। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে, এই হোটেল পর্যটক এবং স্থানীয় বাসিন্দা, উভয়ের কাছেই আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।’ ছবির মতো সুন্দর নদী, বাঘ এবং চাসহ পর্যটকদের একাধিক আকর্ষণীয় স্থানের সৌজন্য দক্ষিণ এশিয়ায় রতœ ভাণ্ডারে সবুজ হিসেবে বাংলাদেশ পরিচিত। মেট্রোপলিটন সিটিতে বুড়িগঙ্গা নদীর অপূর্ব রূপ দর্শন অথবা লালবাগ ফোর্ট এবং আহসান মনজিলে দেশের সমৃদ্ধশালী ইতিহাসের একঝলক পর্যটকরা ঢাকায় উপভোগ করতে পারেন।
রেনেসাঁ হোটেল আর পাঁচটি হোটেলের থেকে একটু পৃথক। বিশ্বে ৩০টিরও অধিক দেশে অবস্থিত ব্র্যান্ডের ১৬০টি হোটেলের প্রতিটিতে বিজনেস ট্রাভেলারদের চিরাচরিত প্রথার বাইরে গিয়ে তাদের স্থানীয় সংস্কৃতি আবিষ্কার করতে সহায়তা প্রদান করা হয়।
গুলশানের প্রাণকেন্দ্রে আপনি আমাদের হোটেল খুঁজে পাবেন। দৃষ্টিনন্দন এফঅ্যান্ডবি আউটলেট, তৎসহ অত্যাধুনিক মিটিং রুম, রুফটপ পুল থেকে আপনি শহরের অসীম দিগন্ত প্রত্যক্ষ করতে পারবেন। রেনেসাঁ নেভিগেটররা হলেন স্থানীয় এলাকার ব্যাপারে ওয়াকিবহাল, যারা প্রকৃত স্থানীয় স্বাদ এবং কার্যক্রম আবিষ্কারে আপনাকে সহায়তা প্রদান করবে।