২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

শরীরচর্চা : বিলাসিতা নয়, প্রয়োজন

-

শীত শুরুর আগে অনেকেই জিমে ভর্তি হওয়ার চিন্তা করেন। অবশ্য শরীর সুস্থ রাখতে বছরের ১২ মাসই সবার ব্যায়াম করা উচিত। আধুনিক জীবনধারায় শরীরচর্চা এখন আর বিলাসিতা নয়, প্রয়োজন। তবে জিমে গিয়ে ব্যায়াম করার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। নইলে হিতে বিপরীত হতে পারে। লিখেছেন আলমগীর কবির

শীত শুরুর আগে অনেকেই জিমে ভর্তি হওয়ার চিন্তা করেন। অবশ্য শরীর সুস্থ রাখতে বছরের ১২ মাসই সবার ব্যায়াম করা উচিত। তবে জিমে গিয়ে ব্যায়াম করার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। নইলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
বর্তমানে তরুণ-তরুণীরা স্বাস্থ্যসচেতন। সঠিক ডায়েটের সাথে নিয়মিত মর্নিংওয়াক, এক্সারসাইজ, জিম সবকিছুই আমাদের দৈনন্দিন রুটিনে জায়গা করে নিয়েছে। জিমে ওয়াকআউটের পাশাপাশি সেখানকার নিয়ম-কানুন, আচরণবিধি সম্পর্কে সচেতন থাকা, সঠিক ব্যবহার ও পাশাপাশি নিয়ম-কানুন মেনে জিম করতে হবে। জিমের কিছু করণীয়-
জিমে ভর্তি হওয়ার আগে খোঁজখবর নিয়ে ভেবে নিন কোন জিম সেন্টারে আপনি ভর্তি হতে পারবেন। আপনার বাসার কাছাকাছি কোনো ভালো জিম সেন্টার থাকলে সেখানেই ভর্তি হতে পারেন; এতে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট ও যাতায়াতে সুবিধা হবে। প্রথমেই জিমের ফিটনেস ট্রেনারের সাথে যোগাযোগ করুন। আপনি কী ধরনের ফিটনেস তৈরি করতে চান তা ট্রেনারের সাথে খোলাখুলি আলোচনা করে নিন। জিম করার জন্য কতটা সময় আপনি বরাদ্দ রেখেছেন, কোন সময়টা আপনার জন্য উপযোগী, কোনো শারীরিক অসুস্থতা আছে কিনাÑ সেসব বিষয় নিয়ে ফিটনেস এক্সপার্টের সাথে কথা বলে আপনার ফিটনেস পরিকল্পনা তৈরি করুন।
জিমের প্রাথমিক পর্যায়ে প্রতিদিন ঘণ্টাখানেক জিম করুন এবং তা আস্তে আস্তে বাড়ান। প্রথম দিকে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা করে ব্যায়াম করলে শরীরের ওপর চাপ পড়তে পারে।
জিম করার সময় অবশ্যই জিমের উপযোগী পোশাক এবং ফিটনেস জুতা ব্যবহার করবেন। এ ছাড়া অন্যান্য সুবিধার জন্য একটি ব্যাগ সবসময় নিজের কাছে রাখবেন। এতে তোয়ালে, পানির বোতল ইত্যাদি প্রয়োজনীয় জিনিস রাখতে পারেন।
প্রথম মাসে জিম করার জন্য আধঘণ্টা বরাদ্দ রাখলে হাতে মোট ১ ঘণ্টা সময় রাখুন। জিমের সময় সকাল বা বিকেলে নির্ধারণ করুন। সকাল বা বিকেলে জিম করার জন্য প্রস্তুতি নিতে বেশ কিছু দিন লাগবে। মনোযোগ দিয়ে জিমের যন্ত্রপাতির ব্যবহার শেখার চেষ্টা করুন। জিম শেষ করার পর অন্তত ১৫ মিনিট রিল্যাক্স করুন।
প্রাথমিক পর্যায়ে জিম থেকে ফিরেই কাজে বেরোনোর জন্য তাড়াহুড়া করবেন না। নিজের শরীরের জন্য উপযোগী পরিমাণ খাবার খেয়ে একটু রেস্ট নিয়ে অফিস কিংবা অন্য কোনো কাজে বের হবেন। ঘরে ও বাইরে অতিরিক্ত কাজের চাপ থাকলে সপ্তাহে তিন দিন জিম করতে যেতে পারেন। বাকি দিনগুলো বাসাতেই ফ্রিহ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে পারেন। ব্যায়াম করার সময় নিজেকে নির্দিষ্ট জায়গার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখুন, যাতে অন্যদের সাথে ধাক্কাধাক্কি না হয়। ব্যায়ামের পর ইনস্ট্রুমেন্ট যথাস্থানে রেখে দিন। সেগুলো যদি নিজের সুবিধামতো অ্যাডজাস্ট করে থাকেন তবে তা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে দিন, যাতে অন্যদের অসুবিধা না হয়। ব্যায়ামের কোনো ইনস্ট্রুমেন্ট যদি একাধিকবার ব্যবহার করতে হয়, তবে সেটা আটকে না রেখে রেস্টের সময় তা অন্যদের ব্যবহার করতে দিন। জিমে ব্যায়ামের সময় খুব বেশি শব্দ বা চেঁচামেচি করবেন না। ইনস্ট্রুমেন্টগুলো নাড়াচাড়া করার সময় শব্দ করবেন না। নিজের জামাকাপড়, জুতা, তোয়ালে, পানির বোতল এবং অন্যান্য সামগ্রী ছড়িয়ে রাখবেন না।
ব্যায়ামের সময় মোবাইলে গল্প করবেন না। পরিচিত কারও সাথে খোশগল্পে মেতে উঠবেন না। এতে ব্যায়ামের প্রতি আপনারসহ অন্যদেরও মনোযোগ নষ্ট হবে। চুল শক্ত করে বাঁধুন। চুল খোলা রাখলে আপনার পাশাপাশি অন্যদের অসুবিধা হতে পারে।
জিমের খাদ্য তালিকা
নতুন কেউ জিমে ভর্তি হলে একটা বেপার ঘটে, অনেক উপদেষ্টা আসে, তারা সাপ্লিমেন্ট (হাই প্রোটিন) নিতে বলে তাড়াতাড়ি বডি বাড়াতে। ওদের প্রধান কাজ এগুলো বিক্রি করা। এসব নেয়া ঠিক নয়, অন্তত শুরুতে তো নয়ই। বডি যখন সেইপে চলে আসবে তখন নেয়া যায়, তাও দেশের বাইরে থেকে ক্রয় করা ভালো। এ দেশে সস্তায় ইন্ডিয়ান যেটা পাওয়া যায় ওটা অতটা ভালো হয় না। না খাওয়াটা বেশি ভালো।
যেই দিন থেকে জিম শুরু করবেন, ওই দিন ভুলেও একসাথে পুরা রুটিন ফলো করবেন না। তাহলে আমাকে গালি দিয়ে জিম ছেড়ে দিবেন। আর ব্যথায় তো রাতের ঘুম হারাম হবেই।
জিমের শুরুর দিন বডির টিস্যু ছিঁড়বে এবং এক্সপান্ড করবে। ভয়ের কারণ নেই, এই ব্যথা ৩ দিন থাকে, এই ব্যথার কারণে ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়। আর ব্যথার ভয়ে জিম না ছেড়ে হালকা হালকা ব্যথার ওপর জিম করা ভালো, ব্যথা দ্রুত কমবে তাতে।
জিমে ঢুকেই নিজে যতটা পারেন তার চেয়ে বেশি ওয়েট নিয়ে টানাটানি শুরু করবেন না, এখানে পাওয়ার দেখানোর দরকার নেই, আস্তে আস্তে অ্যানার্জি বাড়বে, তখন হেভিওয়েট নিতে পারবেন (অতিরিক্ত ওয়েট নেয়ার কারণে লিগামেন্ট ছিঁড়ে যেতে পারে, মেরুদণ্ডে টান খেতে পারেন, যা আজীবন ভোগাবে)।
কাঁচা ছোলা দ্রুত মাসল বিল্ড করে, কলা বেশ কাজে লাগে, রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধ ভালো কাজ করে, মাছ আর গোশত পাইলে ইচ্ছেমতো খান, চর্বি ছাড়া হলে ভালো, ডিম কুসুম ছাড়া খাওয়া ভালো, যাদের বডি বেশি শুকনা তারা একটা কুসুম খেতে পারেন (ডিমের সাদা অংশ প্রোটিন, কুসুমে ফ্যাট)।

 


আরো সংবাদ



premium cement