২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

শরতের শুভ্র সাজ

-

কবির ভাষায়Ñ এই ঋতুটা বর্ষাশেষে/ আসে নতুন সাজে/ জুঁই শিউলি শাপলা কাশের/দারুণ কারুকাজে। নীল আকাশে শুভ্র মেঘের কারুকাজ দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে বাকি নেই এখন শরতের মধ্যলগ্ন। কখনো সাদা, কখনো কালচে রূপ ধারণ করে শরতের আকাশে ভাসা ভাসা মেঘের দল। ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদলায় শরতের আকাশ। তাই প্রকৃতির সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে নিজেকে স্নিগ্ধ সাজে সাজিয়ে তুলুন। শরতের সাজ নিয়ে লিখেছেন আলমগীর কবির
শরতের এখন মধ্যলগ্ন। ভাদ্র চলে গেছে। আশ্বিন মাসও মাঝামাঝি অবস্থায়। এ সময়টায় প্রকৃতির মায়াবী ¯িœগ্ধ ছোঁয়া সহজেই মনে আনে প্রশান্তি। বহুরূপী আকাশ! কখনো রোদ, কখনো বৃষ্টি খরতাপে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দেয় হঠাৎ এক পশলা বৃষ্টি। নদীর ধারে দুধসাদা ঘ্রাণহীন কাশফুল বাতাসে দুলতে দুলতেই মাতাল। প্রকৃতির এই বিচিত্র রঙের খেলার সাথে তাল মিলিয়ে জীবনকে আরো রঙিন করতে পোশাকেও আনতে পারেন বৈচিত্র্য। আবার সাজগোজ করে বাইরে বেরিয়ে হঠাৎ বৃষ্টির ঝাপটায় যেন পুরোটাই ম্লান না হয়, সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। তাই সাজ হতে হবে সময়োপযোগী।
ষড়ঋতুর এই দেশে প্রতিটি ঋতু ভিন্নরূপে উপস্থিত হয়, প্রতিটির আলাদা আবেদনও রয়েছে। তাই ঋতুভেদে সাজগোজের পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তন নির্ভর করে নিজস্ব রুচি ও চিন্তার ওপর।
পোশাকের ক্ষেত্রে সুতি, সিনথেটিক, জর্জেট, চিনন ইত্যাদি রকমের শাড়ি বা সালোয়ার-কামিজ পরতে পারেন। তবে সালোয়ার-কামিজের জন্য সুতিই সবচেয়ে ভালো। রঙের দিকে তো নজর রাখতেই হবে! গাঢ় নয়, হালকা রঙ বেছে নেবেন। নীল, সবুজ, ফিরোজা, গোলাপি, অফ-হোয়াইট রঙগুলো মানাবে ভালো। জরিপাড়-সমেত ফিকে নীল শাড়ি, ধানি রঙ, চাঁপাফুল রঙ, সাদা জমিনে বুটি তোলা জামদানি শাড়ি এবং সাথে ম্যাচিং ব্লাউজ তো অবশ্যই।
এখন যেহেতু বাইরে রোদ-বৃষ্টির খেলা, তাই সাজের ক্ষেত্রে উপকরণটি অবশ্যই যেন পানিরোধক হয়। এ সময়ে দিনের বেলা গরমে গাঢ় সাজ যেমন মানানসই নয়, তেমনি অন্যদের চোখেও তা দৃষ্টিকটু লাগে। তাই সব মিলিয়ে সাজসজ্জায় স্নিগ্ধভাব থাকা চাই। এ জন্য হালকা মেকআপই ভালো। আর সাজের উপকরণের রঙে অবশ্যই উজ্জ্বল রঙ বেছে নেয়া উচিত। এ সময় লাল, নীল, বেগুনি, হলুদ, সবুজ রঙে ইচ্ছেমতো সেজে উঠতে পারেন। সে ক্ষেত্রে সাজের আগে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন মুখটা। তারপর ময়েশ্চারাইজার দিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
এবার সাজের শুরু। যেহেতু চোখ আর ঠোঁট রাঙাবেন রঙিন করে, তাই হালকা বেইজ নিয়ে নিন আগে। এর ওপর লাগাতে পারেন পাউডারও। চোখের কোণের অংশটায় খুব মন দিয়ে বেইজটা মিশিয়ে শুরু করে দিন চোখের সাজ। পোশাকের রঙের সাথে মিলিয়ে বেছে নিতে পারেন রঙিন কাজল। যারা রঙ একটু বেশিই পছন্দ করেন, তারা পোশাকের রঙের বিপরীত রঙটিও বেছে নিতে পারেন। এটি চোখের কাজল, শ্যাডো, লিপস্টিক সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
চুলের সাজের ক্ষেত্রে আকারও কিন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। পাশ্চাত্য পোশাকের সাথে খুলে দিন চুলটি। আর দেশীয় পোশাকের সাথে করতে পারেন ইচ্ছেমতো খোঁপা বা ঝুঁটিÑ এই হলো রঙের সাজ। লম্বা চুলে বেণী করে পাঞ্চ ক্লিপ দিয়ে আটকে নেয়া যেতে পারে। আর দু-একটা ফুল কিংবা ফুলের কুঁড়ি গুঁজে নিতে পারেন। হতে পারে গোলাপ সেটা কিংবা রজনীগন্ধা। যদি খোঁপা বাঁধতে চান, অনুষ্ঠান কিংবা এমনিতেও, ফুল থাকলে ভালো। ছোট্ট মালা গেঁথে খোঁপায় জড়িয়ে নিতে পারেন। চাইলে, মালা ঝুলিয়েও রাখতে পারেন খোলা চুলের এক পাশে। ছোট চুল যাদের, তাদের জন্য পনিটেল তো আছেই; খোঁপা বা পাঞ্চ ক্লিপও ব্যবহার করতে পারেন। তবে যেটাই করেন না কেন, চুল বাঁধার সময় চুলের ধরন এবং আপনার বয়সের দিকটা খেয়াল রাখতেই হবে। বাইশ-তেইশ যদি না পেরোয় বয়স, বেণী বাঁধবেন লম্বা। ফেঞ্চ রোল, উঁচু চূড়া খোঁপা কিংবা এম খোঁপাও বাঁধতে পারেন। যদি পেরিয়ে যায় বাইশ-তেইশ, বাঁধতে পারেন এলো খোঁপা, গোল খোঁপা কিংবা বিড়া খোঁপা। পোশাক যখন হালকা, চুলের স্টাইলও যেন তাই-ই হয়; খেয়াল রাখবেন।


আরো সংবাদ



premium cement