২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বাঙালির ইলিশ

-


বাংলাদেশের ইলিশ সারা বিশ্বের কাছে জনপ্রিয়। আর বছরের এই সময়টাতেই সবচেয়ে বেশি ইলিশ পাওয়া যায়। বাঙালির পাতে এরকম সময়ে ইলিশ থাকবে না, তা কী করে হয়? এই সময়ে ইলিশ না খেলে তো বাঙালিয়ানায় কিছুটা দাগই লেগে যায়। তাই আজকের আয়োজনে থাকছে চার রকম ইলিশ। রেসিপি : তাসলিমা সুলতানা
ইলিশ পোলাও

উপকরণ : ইলিশ মাছ ৭-৮ টুকরো, বেরেস্তা ১ কাপ, পোলাওয়ের চাল ৩ কাপ (ভালোমতো ধুয়ে ৩ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন), পেঁয়াজ কুচি ৪ টেবিল চামচ, আদা-রসুন বাটা ৩ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বাটা ১ টেবিল চামচ, গোলমরিচ গুঁড়ো ১ চা চামচ, ধনে গুঁড়ো আধা চা চামচ, জিরা ভাজা গুঁড়ো আধা চা চামচ, টকদই আধা কাপ, চিনি ১ চা চামচ, দুধ ১ কাপ, এলাচ ৩-৪টি, দারুচিনি ২টি মাঝারি সাইজের, তেজপাতা ২টি, কাঁচা মরিচ ৬টি, তেল পরিমাণমতো, লবণ পরিমাণমতো।
প্রণালী : ইলিশ মাছ পরিষ্কার করে ধুয়ে টুকরো করে নিন। আলাদা একটি পাত্রে টকদই আধাকাপ, বেরেস্তা আধাকাপ, ২ চা চামচ আদা-রসুন বাটা, জিরা ও ধনে গুঁড়ো, গোলমরিচ গুঁড়ো ও লবণ দিয়ে মাছের টুকরোগুলো ভালোভাবে মাখিয়ে ১ ঘণ্টা রাখুন। ১ ঘণ্টা পর একটি হাঁড়িতে তেল গরম করে তাতে প্রথমে পেঁয়াজ কুচি, তারপর মশলা মাখানো মাছ পুরোটা মসলাসহ দিয়ে দিন। আধা চা চামচ চিনি দিন। মাছ ভালোমতো কষিয়ে রান্না করে নিন। তেলের ওপর এলে চুলা বন্ধ করে দিন। এবার আলাদা একটি হাঁড়িতে তেল গরম করে তাতে বেরেস্তা বাদে বাকি সব মসলা দিন। কষিয়ে নিয়ে এতে চাল দিন। ভালোমতো নেড়েচেড়ে চাল ভাজা ভাজা করে নিন। এবার এতে পরিমাণমতো পানি ও দুধ দিন। পোলাও রান্না হয়ে গেলে পোলাওয়ের ওপর মাছ ও ঝোল ছড়িয়ে একদম মৃদু আঁচে কিছুক্ষণ চুলায় রাখুন। তার পর উপরে বেরেস্তা ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।
কাঁটাবিহীন আস্ত ইলিশ

উপকরণ : ইলিশ ১টি, টকদই আধাকাপ, বেরেস্তা ১ কাপ, আদা বাটা ১ চা চামচ, দারুচিনি ২টি, এলাচ ২টি, চিনি আধা চা চামচ, কাঁচামরিচ ৪-৫টি, লবণ পরিমাণমতো, ঘি বা তেল আধাকাপ।
প্রণালী : ১টি আস্ত ইলিশ মাথা ও লেজ আলাদা করে কেটে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এবার মাছের সাথে সব উপকরণ ভালোভাবে মাখিয়ে নিন। একটি প্রেশার কুকারে সব মশলাসহ মাছটি রাখুন। অর্ধেক প্রেশার কুকার ভরে পানি দিন। ঢাকনা লাগিয়ে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা মাঝারি আঁচে রান্না করুন। দেড় ঘণ্টা হওয়ার পর ঢাকনা খুলে একবার চেক করবেন পানি কতটুকু আছে। খেয়াল রাখবেন যেন পুড়ে না যায়। প্রয়োজনে আরো পানি দিন। আড়াই ঘণ্টা পর একটি চাকুর আগা মাছের ঠিক মেরুদণ্ড বরাবর আলতো করে ঢুকিয়ে দেখবেন কাঁটা গলে একদম নরম হয়ে গেছে কিনা। কাঁটা গলে গেলে মাছটি সাবধানে প্রেশার কুকার থেকে তুলে নিন যেন ভেঙে না যায়। যদি বেশি ঝোল রয়ে যায়, জ্বাল দিয়ে ঝোল শুকিয়ে ঘন করে নিন। মাছের সাথে মাথা ও লেজ সুন্দর করে সাজিয়ে নিন, উপরে ঝোল সাজিয়ে পরিবেশন করুন। এটি পোলাওয়ের সাথে খেতে বেশি ভালো লাগে।

লাউপাতায় ইলিশ

উপকরণ : ইলিশ মাছ ৪-৫ টুকরো, লাউপাতা বড় সাইজের ৩টি, পেঁয়াজ কুচি আধাকাপ, পেঁয়াজ বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, শুকনা মরিচ গুঁড়ো পরিমাণমতো, হলুদ গুঁড়ো আধা চা চামচ, জিরা গুঁড়ো ১ চা চামচ, তেল- ভাজার জন্য, লবণ পরিমাণমতো।
প্রণালী : মাছ কেটে ধুয়ে নিতে হবে। এবার সব মসলা একটি পাত্রে নিয়ে একসাথে মেশান। তার পর ইলিশের টুকরোগুলো মশলায় ভালোভাবে মাখান। লাউপাতাগুলো ধুয়ে পানি শুকিয়ে নিয়ে তাতে মসলা মাখানো মাছের টুকরোগুলো রেখে ভালোভাবে মুড়ে নিন। প্রয়োজন হলে পরিষ্কার সুতা দিয়ে বেঁধে নিন। এবার ভাতের উপরে দিয়ে ভালোভাবে সেদ্ধ করতে হবে। অল্প আঁচে আধঘণ্টা রেখে নামিয়ে নিন। চাইলে ভাতের সাথে সেদ্ধ না করে আলাদা ভাপে সেদ্ধ করতে পারেন।
ইলিশ ভর্তা

উপকরণ : ইলিশ সেদ্ধ (কাঁটা ছাড়িয়ে কিমা করা) ২ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি ১ টেবিল চামচ, ধনেপাতা কুচি ১ টেবিল চামচ, কাঁচামরিচ কুচি ১ টেবিল চামচ, লেবু পাতা ২-৩টি, লেবুর রস সামান্য, হলুদ সামান্য, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, লবণ পরিমাণমতো।
প্রণালী : ইলিশ মাছ পরিষ্কার করে ধুয়ে টুকরো করে নিন। এবার সামান্য হলুদ ও পরিমাণমতো পানি দিয়ে সিদ্ধ করুন (পানি এমনভাবে দিন যাতে মাছ সিদ্ধ হবে, সেই সাথে পানিও শুকিয়ে যাবে)। সিদ্ধ মাছের কাঁটা বেছে কিমা করে নিন। এবার অন্য একটি পাত্রে সয়াবিন তেল গরম করতে দিন। তেল সামান্য গরম হয়ে এলে তাতে পেঁয়াজ কুচি দিন। পেঁয়াজ কুচি হালকা বাদামি রঙ হয়ে এলে তাতে একে একে ইলিশ সিদ্ধ কিমা, টমেটো কুচি, ধনে পাতা কুচি, কাঁচামরিচ কুচি, লেবু পাতা এবং লবণ দিয়ে নাড়তে থাকুন। নামানোর আগে আগে সামান্য লেবুর রস দিয়ে নামিয়ে নিন।

 


আরো সংবাদ



premium cement