মুখের আকার বুঝে নিন
চশমা ফ্যাশন- মারিয়া নূর
- ২৭ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০
প্রয়োজনের পাশাপাশি অবশ্যই স্টাইলের জন্যও অনেকে নানা নকশার চশমা পরেন। সঠিক চশমার ফ্রেম আপনার চেহারা কিছুটা হলেও বদলে দেবে। এ জন্য আসুন জেনে নেই, মুখের আকার অনুযায়ী চশমার ফ্রেম কেমন হওয়া উচিত।
লম্বা চেহারা
লম্বা চেহারায় অ্যাভিয়েটর ফ্রেমের চশমা বেশি মানানসই। এতে চেহারায় লম্বাটে ভাব কমে আসবে। কিছুটা চওড়াও লাগবে। অ্যাভিয়েটর ফ্রেম ছাড়াও কিছু চার কোনা ফ্রেমের চশমা আপনাকে ভালো মানাবে।
ডায়মন্ড চেহারা
ডায়মন্ড আকৃতির চেহারায় চোখের পাশে ও চোয়ালের কাছে সঙ্কীর্ণ হয়। এই চেহারায় গাল হয় চওড়া। এ রকম চেহারায় চোখগুলো তুলে ধরাই চশমা পরার মূল লক্ষ্য। এতে চওড়া গালেও কিছুটা নমনীয়তা চলে আসবে। চশমার উপরের দিকে স্বতন্ত্র নকশা থাকলে দেখতে ভালো লাগবে। নিচের দিকে রিম লেস হলেই ভালো। ওভাল অথবা ক্যাট আই আকারের চশমাও মানাবে।
চার কোনা আকারের চেহারা
চার কোনা চেহারায় কপাল ও চোয়াল চওড়া হয়। চিবুকের কাছটাও হয় চওড়া। প্রস্থে কম এমন ওভাল ও গোল ফ্রেমের চশমা বেছে নেয়া উচিত এ ক্ষেত্রে। এতে চেহারায় লম্বাটে ভাব ও চেহারার বিভিন্ন কোণে নমনীয়তা চলে আসে। এ ধরনের ফ্রেমের চশমায় চোখের ওপর বেশি নজর যাবে ও নাকটাও কিছুটা লম্বাটে দেখাবে। ভুল করে যদি চার কোনা ফ্রেমের চশমা বেছে নেন, তাহলেই হিতে বিপরীত হয়ে যাবে।
ত্রিভুজাকৃতির চেহারা
এই চেহারার প্রশস্ত কপাল ও চওড়া চিক বোন থুতনির কাছে গিয়ে চাপা হয়ে যায়। চেহারার উপরের বেশির ভাগ অংশ চওড়া হয়ে থাকে। চশমা বাছার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখুন, ফ্রেমের নিচের অংশটি যেন চওড়া হয়। কিন্তু চশমাটির রঙ ও উপকরণ যেন হালকা হয়। রিম লেস ফ্রেমের চশমা মানানসই এ ধরনের চেহারায়।
গোলগাল চেহারা
প্রশস্ত কপাল, ভরাট গাল ও গোল আকারের চিবুক। গোলাকার চেহারার জন্য আয়তাকার ফ্রেমের চশমা প্রয়োজন। এতে চেহারায় কিছুটা শুকনো ও লম্বাটে ভাব চলে আসবে। চাপা আয়তাকার চশমা চোখকে উপরের দিকে তুলে ধরবে।
চাইলে রঙিন ফ্রেমও ব্যবহার করতে পারেন।
উপবৃত্তকার চেহারা
এই আকারের চেহারা যাদের, তারা কিছুটা ভাগ্যবানই। কারণ, এ ধরনের চেহারায় প্রায় সব ফ্রেমের চশমাই মানিয়ে যায়। চওড়া আকারের ফ্রেম যেমন মানিয়ে যাবে, তেমনি ওয়ালনাট আকারের ফ্রেমও মানাবে।
চশমা ছাড়া কষ্ট করে দেখার জন্য চোখ কুঁচকে তাকানো ঠিক নয়। এতে চোখের চারপাশের চামড়া কুঁচকে ভাঁজ পড়ে যেতে পারে, বাড়তি কালচে ভাবও আসতে পারে একসময়। চোখের ওপর চাপ না ফেলে বরং চশমা পরেই তাকান।
আবার কারো হয়তো শুধু দূরে দেখতে চশমা প্রয়োজন, কারো হয়তো শুধু কাছে দেখতে প্রয়োজন। যারা সব সময় চশমা ব্যবহার করেন না, তাদেরও চশমাটা সব সময় সাথে রাখা উচিত, যাতে প্রয়োজনের সময় চোখ কুঁচকে দেখতে না হয়।
সম্ভব হলে ছয় মাসে অন্তত একবার চশমার ফ্রেম পরিবর্তন করে নিন। ভিন্ন ধাঁচের ফ্রেম বেছে নিন। যাতে একই ধাঁচের ফ্রেমের কারণে ক্রমাগত একই জায়গায় চাপ না পড়তে থাকে।
চোখের যতœ
চোখের কিছু সাধারণ বিষয় সবারই মনে রাখা উচিত। স্মার্টফোন, ট্যাবলেট বা ল্যাপটপ কম্পিউটারের মতো যন্ত্রপাতি দীর্ঘ সময় ব্যবহার করা উচিত নয়। এগুলো ব্যবহার করার সময় ৩০ মিনিট পর ৫-১০ মিনিটের বিরতি দেয়া ভালো। ঘণ্টার পর ঘণ্টা টানা ব্যবহার করলে মাথাব্যথা ও শ্রান্তি হতে পারে। অল্প আলোতে এগুলো ব্যবহার করাও ঠিক নয়।
চোখ কখনো চুলকালে বা অস্বস্তি লাগলে ঘষা দেয়া যাবে না। এতে যে কারো চোখের চার পাশেই ছোপ ছোপ দাগ ও ভাঁজ পড়তে পারে। চোখের ক্ষতিও হয়ে যেতে পারে।
শাকসবজি খেতে হবে প্রতিদিন।
ঘুম কম হলে, অসুস্থ থাকলে, মানসিক চাপ বেশি হলে চোখের চারপাশে কালচে ছোপ পড়তে পারে। শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে চেষ্টা করুন। চাপমুক্ত থাকুন।
চশমার যতœ
কখনোই চশমা সাধারণ গ্লাস ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করবেন না। গ্লাস ক্লিনারে থাকে অ্যামোনিয়া যা ধীরে ধীরে আপনার লেন্সগুলোর ক্ষতি করবে।
প্রতিদিন কমপক্ষে একবার কুসুম গরম পানিতে চশমা পরিষ্কার করবেন। এ সময় চাইলে পি-এইচ নিউট্রাল কোনো বাসন মাজার লিকুইড ব্যবহার করতে পারেন।
শুধু লেন্সই নয়। চশমার ফ্রেম ও নাকের ব্রিজ অংশও পরিষ্কার করা উচিত নিয়মিত।
হাতের কাছে যা পান তা দিয়ে কখনো চশমা মোছা ঠিক নয়। ধোয়ার পর সবচেয়ে ভালো উপায় হলো বাতাসে চশমা শুকাতে দেয়া। কিন্তু তা সম্ভব না হলে একটি মসৃণ চশমা পরিষ্কার করার কাপড় দিয়ে চশমা মুছুন।
আর মনে রাখবেন মোছার সময় চশমার যে অংশটি আমাদের নাকের ওপর দিয়ে গেছে সে অংশটি ধরে রাখবেন। ফ্রেমে ধরে মুছবেন না। এতে ফ্রেম বেঁকিয়ে যাবে।