ঈদের সাজ
- ০৭ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০, আপডেট: ২২ আগস্ট ২০১৯, ০০:০৪
কাভার স্টোরি
এবারের ঈদ আসছে ভরা বর্ষায়। এক দিকে যেমন বৃষ্টিতে সাজগোজ ধুয়ে মুছে যাওয়ার সম্ভাবনা, অন্য দিকে ভ্যাপসা গরমে ঘেমে মেকআপ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। তাই বলে তো সাজগোজ একেবারে না করলেও চলবে না। ঈদ বলে কথা। তাহলে কেমন হবে এই ঈদের সাজ? লিখেছেন কাজী তানজিলা মেহনাজ
দিনের সাজে স্নিগ্ধতা
সকালের সাজ বা যেকোনো সাজই হোক না কেন, শুরুটা করতে হবে ময়েশ্চারাইজার দিয়ে। ময়েশ্চারাইজার এক দিকে যেমন আপনার ত্বককে সতেজ রাখবে, অন্য দিকে মেকআপও বসবে ভালো। কিন্তু খেয়াল রাখবেন যেন আপনার ময়েশ্চারাইজারটি হয় অয়েল ফ্রি। ময়েশ্চারাইজারটা ত্বকে মিশে যাওয়ার পর সানস্ক্রিন লাগাতে ভুল করবেন না। সানস্ক্রিন শুকিয়ে এলে এবার লাগাতে হবে প্রাইমার। প্রাইমার দু’টি কাজ করে। প্রথমটি হলো ফাউন্ডেশন ত্বকে সুন্দরভাবে বসতে সাহায্য করে, দ্বিতীয়টি হলো মেকআপকে নিজ স্থানে ধরে রাখে। দিনের সাজে স্নিগ্ধতা ধরে রাখতে লাইট কভারেজ ফাউন্ডেশন বেছে নিন। এটি আপনাকে দেবে ন্যাচারাল লুক। ফাউন্ডেশনের একটি হালকা লেয়ার লাগান। ফাউন্ডেশনটি যেন লিকুইড এবং অয়েল ফ্রি যেন তা খেয়াল রাখবেন। ফাউন্ডেশনের রঙ আপনার ত্বকের রঙের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। বড়জোর এক শেড হালকা হতে পারে। বেশি সাদা ফাউন্ডেশন লাগালে সেটা বেমানান লাগতে পারে। এবার ফাউন্ডেশনের ওপর চোখের নিচের অংশে, থুতনির ডগায়, নাকের হাড়ের ওপরের অংশে হালকা কন্সিলার লাগিয়ে নিন। কন্সিলার হবে ফাউন্ডেশনের চেয়ে এক শেড হালকা রঙের। চোখে লাগান হালকা রঙের শেড যাতে চোখ দুটো ন্যাচারাল মনে হয়। যদি রঙ নিয়ে একটু খেলতে চান, এখানে সুযোগ আছে। নীল, ধূসর ও সবুজের বিভিন্ন শেডের নন-গ্লিটারি শেড লাগাতে পারেন। আই শেডের রঙ ফুটে ওঠার জন্য এবং তা দীর্ঘস্থায়ী রাখার জন্য শেড লাগানোর আগে আই প্রাইমার লাগিয়ে নিতে হবে। এরপর লাগিয়ে নিন পানি নিরোধক কাজল, আই লাইনার ও মাস্কারা। লিপস্টিক ও ব্লাশ অন বেছে নিন হালকা রঙের। এই গরমে দিনের বেলায় বেশি গাঢ় রঙের লিপস্টিক ও ব্লাশ অন লাগালে সাজের স্নিগ্ধতা নষ্ট হয়ে যায়। এ সময় ভারী গ্লসি লিপস্টিকের জায়গায় হালকা রঙের ম্যাট লিপস্টিক, লিপটিন্ট, বা ম্যাট লিকুইড লিপ কালার লাগানো উচিত। সবশেষে মুখের এক ফুট দূর থেকে স্প্রে করুন মেকআপ সেটিং স্প্রে। ঈদের দিনের ঘোরাঘুরি হোক বা অতিথি আপ্যায়ন, সব কিছুর জন্য আপনি প্রস্তুত।
সন্ধ্যার জমকালো সাজ
ঈদের সন্ধ্যায় বন্ধুদের গেট টুগেদার হোক বা কোনো দাওয়াত হোক, সাজটা হতে হবে জমকালো। সাজের শুরু করতে হবে অয়েল ফ্রি ময়েশ্চারাইজার দিয়ে। ময়েশ্চারাইজার মুখে সেট হয়ে এলে এবার লাগান প্রাইমার। এবার প্রাইমার সেট হয়ে গেলে লাগান কালার কারেক্টর। হাতের আঙুল বা বিউটি ব্লেন্ডার, অথবা ব্রাশের সাহায্যে চেহারার যেসব জায়গায় দাগ আছে যেমন চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল, ব্রনের দাগ, ঠোঁটের দু’পাশের কালো দাগ ইত্যাদি ঢেকে দিন কালার কারেক্টর দিয়ে। একটু সময় দিন কালার কারেক্টর শুকাতে। তার পর লাগান মিডিয়াম টু হাই কভারেজ ফাউন্ডেশন। একটি বিউটি ব্লেন্ডারের সাহায্যে ফাউন্ডেশন সারা মুখে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। খেয়াল রাখবেন কোথাও কম কোথাও বেশি যেন না হয়। ফাউন্ডেশনটি যেন লিকুইড এবং অয়েল ফ্রি যেন তা খেয়াল রাখবেন। ফাউন্ডেশনের রঙ আপনার ত্বকের রঙের মতোও হতে পারে, চাইলে এক শেড বা দুই শেড হালকা রঙও বেছে নিতে পারেন রাতের মেকআপের জন্য। খেয়াল রাখবেন, নিজের গায়ের রঙের চেয়ে অনেক বেশি সাদা ফাউন্ডেশন লাগালে আপনার সাজ অদ্ভুত মনে হতে পারে। এবার চোখের নিচের অংশে, থুতনির ডগায়, নাকের হাড়ের ওপর লম্বালম্বিভাবে এবং নাকের ঠিক ওপরে কপালের সামনের অংশে ফাউন্ডেশনের রঙের চেয়ে এক বা দুই শেড হালকা কন্সিলার লাগিয়ে নিন। এতে এই অংশগুলো বেশি উঁচু মনে হবে, যা আপনার চেহারার সৌন্দর্যকে আরো বেশি ফুটিয়ে তুলবে। এবার কনটোরিং করার পালা। কপালের ওপরের অংশে, চিবুকের হাড়ের নিচের অংশে, নাকের হাড়ের দুই পাশে, দুই ভ্রƒর ওপরে এবং গালের একদম নিচের অংশে একটি ব্রাশ দিয়ে কনটোরিং করুন। এবার আই ব্রো দুটো এঁকে নিন সুন্দর শেপ করে। ভ্রƒ বেশি গাঢ় করবেন না। আপনার ভ্রƒর যে রঙ সেই রঙেরই আই ব্রো পেন্সিল বা পাউডার দিয়ে এঁকে নিন ভ্রƒ। চোখে লাগান আই প্রাইমার। তার ওপর পছন্দমতো আই শেড লাগিয়ে নিন। রাতে গাঢ় রঙের শেড ভালো মানায়। ব্রো বোন হাইলাইট করে নিন। ব্লাশ অন লাগিয়ে নিন পছন্দসই রঙের, চিকবোনের ওপর। এবার মেকআপ সেটিং স্প্রে দিয়ে লক করে ফেলুন আপনার মেকআপ। তার পর হাইলাইটার দিয়ে হাইলাইট করুন নাকের হাড়ের ওপর, ব্লাশ অনের ওপর, থুতনির ডগা, ওপরের ঠোঁটের কিউপিডস বো ও আই ব্রোর ওপরের উঁচু জায়গাটি। এরপর লাগিয়ে নিন পানি নিরোধক কাজল, আই লাইনার ও মাস্কারা। লিপস্টিক লাগান মনমতো। রাতের পার্টি সাজে গাঢ় রঙ বেছে নিতে কোনো বাধা নেই। এরপর হালকা একটু সুগন্ধি ও পছন্দসই গয়না পরে নিলেই রাতের সাজ পরিপূর্ণ হয়ে গেল।