গরমে স্বস্তি টি-শার্ট : রঙের ঝলক
- এ কে রাসেল
- ২৩ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০
শুরু হয়ে গেছে গরমের মওসুম, সারা দিন যেমন প্রচণ্ড গরম, তেমনি আছে সাথে ধুলো-ময়লা আর ঘামের বিরক্তি, আর বলা তো যায় না, যেকোনো সময়ে এসে পড়বে বৃষ্টি। আর তাই এ সময়ের আরামদায়ক আর উপযুক্ত পোশাক হলো একমাত্র টি-শার্ট। আরামদায়ক পোশাক হিসেবে তরুণ প্রজন্ম তো বটেই, সাথে বিভিন্ন বয়সী তরুণ-তরুণীসহ সবারই বর্তমান জনপ্রিয় পোশাক এই টি-শার্ট। আর তাই তারুণ্যের ট্রেন্ড টি-শার্টকে আরো জনপ্রিয় ও সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে যুগোপযোগী করে উপস্থাপন করতে সব সময়ই নানা রকম গবেষণার মধ্য দিয়ে সব শ্রেণিপেশার সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে ব্যস্ত থাকে বিভিন্ন ব্র্যান্ড শপ ও ফ্যাশন হাউজগুলো।
চাহিদা অনুযায়ী পছন্দ ও সব ধরনের হাল-ফ্যাশনের টি-শার্ট পাওয়া যাবে। ব্র্যান্ডের শপগুলোতেই। বর্তমানে সাদা-কালো, ধূসর ছাড়াও একরঙা, মিশ্রণসহ নানা রঙের কাপড়ের বর্ণিল টি-শার্টও পাওয়া যায়। আর সেই টি-শার্টের ক্যানভাসে হ্যান্ড পেইন্ট, রাবার, ব্লক, স্ক্রিন-প্রিন্টসহ নানা মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে নানা রকম রঙ ও নকশায় ফুল, পাখি, প্রকৃতি, ভালোবাসা, প্রতিবাদ, প্রিয় উক্তি, অভিব্যক্তি, ছন্দ-কবিতা, বর্ণমালা, বিখ্যাত কবি-লেখক, দেশপ্রেমিক যোদ্ধাদের অবয়ব; বিজয়, একুশ, স্বাধীনতাসহ হাজারো মোটিফ! কী নেই? কোনটা পছন্দ হবে না আপনার, নাকি কোনটা রেখে কোনটা নেবেন, আপনাকে পড়তে হবে সেই দ্বিধা-দ্বন্দ্বে!
বেশি তাপ শোষণ করে বলে এই গরমে কালো, ধুসর রঙ বাদ দেয়া উচিত। বরং একটু বর্ণিল আর আরামদায়ক কাপড় বেছে নেয়াই উত্তম। আর সেটি অবশ্যই আপনার নিজের সাথে মানানসই হতে হবে। এ সময়ে পোশাক আরামদায়ক করতে টি-শার্টের কাপড় হিসেবে ব্যবহার করা হয় ডেনিম, কটন, হাফ কটন, ফুল কটন, মিক্সড কটন, জ্যাকার্ড কটন ও ভিসকোস। ভিসকোস ফেব্রিক্স বিশেষ করে ব্যবহার করা হয় স্পোর্টস ড্রেসগুলোর জন্য। কারণ, এর শোষণ ক্ষমতা বেশি। টি-শার্টের কাটিংয়েও এসেছে নানা ভিন্নতা। গোল-গলা, ভি-গলা, ফুলহাতা, হাফহাতা, স্লিভ-লেস, রোল-হাতা, রেগুলার ও টাপ্পার্ড কাটিং। আপনার গঠন অনুযায়ী লুজ না নিয়ে, স্লিম-ফিট টি-শার্টই পরা উচিত। এতে সুদর্শন ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন দেখাবে।
বর্তমানে প্রায় সব ব্র্যান্ডের ফ্যাশন হাউজই নিজস্ব কারখানায় ভালো মানের ও ঐতিহ্যবাহী টি-শার্ট তৈরি করে থাকে। এর মধ্যে ইজি, এক্সটেসি, দর্জি বাড়ি, আড়ং, ক্যাটস আই, কাজী ক্রাফট, ব্যাঙ এবং দেশী দশ খ্যাত সাদা-কালো, রঙ বাংলাদেশ, কে-ক্রাফট, বাংলার মেলা, সৃষ্টি, অঞ্জন’স, দেশাল, নিপুণ, নগরদোলা, বিবিআনা অন্যতম। এ বিষয়ে বেশ কয়েকটা হাউজে কথা হয়। বিশেষ করে ফ্যাশন হাউজ ইজির স্বত্বাধিকারী তৌহিদ চৌধুরী জানান, তারা তাদের তৈরীপোশাকের জন্য ফেব্রিক হিসেবে নানা ধরনের সুতিকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। কেননা, যেকোনো ঋতুতেই সুতি ফেব্রিক্স হিসেবে জনপ্রিয়, আরামপ্রদ আর মানানসই। আর তাদের টি-শার্ট তৈরিতেও সুতি ও জ্যাকার্ড সুতির গুরুত্ব দেন বেশি। আর নিত্যনতুন ডিজাইন, কাটিং ও দেশীয় থিমের ওপর ভিত্তি করে, সময়ের চাহিদা আর তারুণ্যের কথা মাথায় রেখেই সব আকর্ষণীয় ও বর্ণিল টি-শার্ট তৈরি করে থাকেন তারা। প্রায় একই কথা জানান ফ্যাশন হাউজ দর্জি বাড়ির স্বত্বাধিকারী ফজলুর রহমান। তবে তারা টি-শার্ট তৈরিতে দেশীয় থিমের পাশাপাশি ওয়েস্টার্ন ও রাফ অ্যান্ড টাফ লুক ও থিমের ওপরই গুরুত্ব দিয়ে থাকেন বেশি। তবে কাজ ও মানের সাথে আপস নেই কারোরই। প্রতিটি হাউজের একেকটি টি-শার্টের আছে একেকটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। আর কাজের মানের ওপর গুরুত্ব দিয়েই ধরা হয়ে থাকে এর বিপণন মূল্য। আর তাই এই গরমে সচেতন ব্যক্তি মাত্রই আরাম আর ফ্যাশনকে একই সাথে ঠিক রাখতে নিশ্চয়ই দামের কথা ভাববেন না। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজে মান ও কাপড় ভেদে দামেরও আছে ভিন্নতা। ব্র্যান্ডের টি-শার্টগুলোর দাম পড়বে ৪৫০, ৬০০, ৮০০ থেকে শুরু করে এক হাজার ৮০০ থেকে তিন হাজার ৬০০ টাকা পর্যন্ত।