ফ্যাশনে জ্যামিতিক নকশা
রঙের ঝলক- ঝরনা রহমান
- ৩০ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০
ফ্যাশনের ক্ষেত্রে যে কয়েকটি নকশা বা প্যাটার্ন
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য তার মধ্যে একটি জ্যামিতিক
নকশা। সব ধরনের পোশাকে জ্যামিতিক নকশা ব্যবহার
হতে পারে। শুধু পোশাকে নয়, ফ্যাশন অনুষঙ্গের
ডিজাইনেও রয়েছে এই নকশার ব্যাপক উপস্থিতি
ষ ঝরনা রহমান
নকশা অলঙ্করণ ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। অলঙ্করণ বা মোটিফের ওপর নির্ভর করে পোশাকের ধরন, ম্যাটেরিয়াল ও অনুষঙ্গ। শুধু তাই নয়, মোটিফ তুলে ধরে বিভিন্ন উৎসব ও দিবসের তাৎপর্য। বিভিন্ন ধরনের মোটিফ বা অলঙ্করণ ব্যবহার করে ফ্যাশন ডিজাইনাররা কাজ করেন। এর মধ্যে ফ্যাশন ডিজাইনাররা যেসব মোটিফ বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন তার মধ্যে অন্যতম জ্যামিতিক নকশা। ফ্যাশন ডিজাইনাররা এই মোটিফকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।
শুধু ফ্যাশন নয়, জীবনযাত্রার প্রতিটি ধাপেই জ্যামিতিক নকশার ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়। যেমন প্রোডাক্ট ডিজাইন, কমিউনিকেশন ডিজাইন ও ডিজিটাল এনিমেশন।
জিওম্যাটিক ডিজাইন জনপ্রিয় হয়ে ওঠার অন্যতম কারণ এই প্যাটার্ন প্রায় সব ধরনের পোশাকে এবং সবার জন্য করা যায়। একইভাবে সব ধরনের উৎসবে পরাও যায় অনায়াসে।
আধুনিক ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে শুধু অলঙ্করণের ক্ষেত্রে নয়, ডিজাইনেও জ্যামিতিক প্যাটার্ন দেখা যায়। বিশেষ করে কাটিংয়ের ক্ষেত্রে জ্যামিতিক ডিজাইন লক্ষ্য করা যায়। বিভিন্ন ফ্যাশন রাওয়েতে জ্যামিতিক প্যাটার্নের পোশাক পরে মডেলদের হাঁটতে দেখা যায়।
পোশাকের নকশায় পলকা ডটস, ফ্লোরাল ও স্ট্রাইপ মোটিফগুলোই সাধারণত বেশি দেখা যায়। তবে এ সময়ের আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ট্রেন্ড হিসেবে জ্যামিতিক নকশা বেশ আলোচিত হচ্ছে। তাই পোশাকে বৈচিত্র্য আনতে চেষ্টা করে দেখতে পারেন জ্যামিতিক নকশা।
জিওপ্রিন্ট পোশাকের আকর্ষণ বাড়াতে অদ্বিতীয়।
জ্যামিতিক নকশার সবচেয়ে সুবিধাজনক দিকটি হচ্ছে এটি যেকোনো অনুষ্ঠানে পরা যায়। যেমন অফিস, হাসপাতাল বা ফর্মাল ড্রেস হিসেবে ফ্লোরাল প্রিন্ট মানায় না, স্ট্রাইপ ফর্মাল ড্রেস হিসেবেই ভালো মানায়। অন্যদিকে জ্যামিতিক নকশা ফর্মাল, ইনফর্মাল, উৎসব সব ধরনের অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা যায়। এই প্রিন্টের আরেকটি সুবিধাজনক দিক হচ্ছে এটি স্লিম দেখাতে সাহায্য করে। যারা কিছুটা মোটা তারা কন্ট্রাস করে এই প্রিন্টের পোশাক পরতে পারেন।
জ্যামিতিক নকশাগুলো বিভিন্নভাবে ব্যবহার করে পোশাকে ডিজাইন ফুটিয়ে তোলা হয়। কখনো শুধু একটা নকশা, হতে পারে সেটা ট্রায়েঙ্গেল বা রেকটেঙ্গেল অথবা সার্কেলের কোনো প্যাটার্ন ব্যবহার করে আবার কখনো একই সাথে একাধিক প্যাটার্ন ব্যবহার করে পোশাকে নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়। রঙের ক্ষেত্রে মূলত দুই বা তিনটি রঙের উপস্থিতিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। আজকাল অবশ্য জ্যামিতিক নকশার ডিজাইনে মাল্টি কালারের ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়।
জ্যামিতিক নকশার পোশাক বাছাই করার সময়ও কয়েকটি বিষয় গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। যারা লম্বা তাদের বোল্ড ও বড় আকারের নকশা করা পোশাক বেশি মানাবে। অন্য দিকে, শর্টদের ছোট নকশা করা পোশাক ভালো দেখাবে। তবে কেউ যদি বৈচিত্র্য আনতে চান তাহলে এর বিপরীত প্যাটার্নও বেছে নিতে পারেন। ভার্টিক্যাল স্ট্রাইপস ব্যক্তিকে স্লিম ও লম্বা দেখাতে সাহায্য করে। একটু মোটা ধাঁচের জন্য এই প্যাটার্ন আদর্শ। অন্য দিকে, হরাইজোনটাল স্ট্রাইপে ব্যক্তিকে অনেক বেশি মোটা দেখায়। তবে জামার বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন প্যাটার্ন ব্যবহার করে পোশাককে আকর্ষণীয় করে তোলা যায় যা চমৎকার মানিয়ে যেতে সাহায্য করে।
শুধু পোশাক নয় জ্যামিতিক নকশার উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে এটি বিভিন্ন ধরনের ফ্যাশন এক্সেসরিজেও ব্যবহার করা হয়। জুতা ও ব্যাগে জ্যামিতিক নকশার নানা ব্যবহার সব সময়ই হয়ে আসছে। সেই সাথে গয়নার ক্ষেত্রেও এই প্যাটার্ন ব্যবহার করে ফুটিয়ে তোলা হয় অভিনবত্ব। তাই তো ফ্যাশন জগতে জ্যামিতিক নকশা বিশেষ গুরুত্ব নিয়েই টিকে আছে।