২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ঐতিহ্যের হাজী বিরিয়ানি : রঙের ফিচার

-

রাজধানীর পুরান ঢাকার কাজী আলাউদ্দিন রোডের ৭০ নম্বর দোকানটি ঐতিহ্যবাহী হাজীর বিরিয়ানি নামে সবাই চেনে জানে। এ জন্য কর্তৃপক্ষ হয়তো দোকানে সাইনবোর্ড দেয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। দোকানটিতে নামসংবলিত কোনো সাইনবোর্ড না থাকলেও বেচাবিক্রির কোনো অংশে কমতি নেই। দোকানের কর্মচারীদের ব্যতিব্যস্ততার জন্য আমাদেরকেই কষ্ট করে পাশের দোকানের সাথে মিলিয়ে হাজীর বিরিয়ানির দোকানের নম্বর বের করতে হলো। দোকানিদের সাথে কথা বলার সুযোগ নেই, এক রকম জোর করেই কথা বলা। সোহাগ নামে মধ্যবয়সী এক যুবক বড় হাঁড়ি থেকে বিরিয়ানি প্লেটে দিচ্ছেন। আর যারা পার্সেলে নেবেন তাদের শালপাতার মোড়ানো পাত্র স্থানীয় ভাষায় যাকে বলে দওনা, তাতে দিচ্ছেন। সোহাগ জানায়, সকাল ৮টা থেকে বিক্রি শুরু হয়ে চলে গভীর রাত পর্যন্ত। দুপুরের পর থেকে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। বিকেলের পর দোকানের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে সুস্বাদু হাজীর বিরিয়ানি নিতে হয়। দোকানিদের খাবার সরবরাহ করতে করতে দেহ-মন ক্লান্ত তবু একটু অবসরের সুযোগ নেই। সপ্তাহের সাত দিনের চিত্র প্রায় একই রকম।
জানা যায়, ১৯৩৯ সালে কাজী আলাউদ্দিন রোডে বর্তমান দোকানটিতে মোহাম্মদ হোসেন নামে এক ব্যক্তি বিরিয়ানির ব্যবসা শুরু করেছিলেন। সেই থেকে পথচলা। কালক্রমে বংশ পরম্পরায় হাজীর বিরিয়ানির মালিকানার দায়িত্বে আছেন মোহাম্মদ হোসেনের নাতি শাহেদ হোসাইন।
পুরান ঢাকার বাসিন্দারা খাবারের ব্যাপারে বেশ শৌখিন। খাবার ঠিকঠাক থাকলে সব ঠিক এমন ধ্যান-ধারণা তাদের। কাজী আলাউদ্দিন রোডে একাধিক বিরিয়ানির দোকান থাকলেও তুলনামূলক বিক্রি কম। পুরান ঢাকাসহ রাজধানীর বাইরের ভোজনরসিক মানুষজন বিরিয়ানির জন্য ভিড় করে এ দোকানটিতে।
হাজীর বিরিয়ানির আলাদা বৈশিষ্ট্য হলো ঘি কিংবা চর্বিজাতীয় কোনো পদার্থ বিরিয়ানি রান্নায় ব্যবহার করা হয় না। কেবল সয়াবিন তেল এবং দেশীয় মসলা ব্যবহারে অতুলনীয় স্বাদের কারণে সব বয়সের মানুষের পছন্দ হাজীর বিরিয়ানি। প্রতি প্লেট হাজির বিরিয়ানি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা। গত বছর হাফ প্লেট বিরিয়ানি ৬০ টাকা বিক্রি করলেও এ বছরের জানুয়ারি থেকে নতুন দাম নির্ধারিত করে কর্তৃপক্ষ। হাজীর বিরিয়ানির আরো দুটি শাখা খোলা হয়েছেÑ একটি ৯১ করিম চেম্বার, মতিঝিলে আর অন্যটি ক ১১/৬ বসুন্ধরা-বারিধারায়।


আরো সংবাদ



premium cement