ত্বকের সমস্যা ও পরিচর্যা : রূপ কথা
- ফাহমিদা জাবীন
- ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০
সবার ত্বকের গঠন এক রকম হয় না। কারো কারো ত্বক এমন স্পর্শকাতর হয় যে সামান্য একটু অনিয়মে, বিশেষ কোনো দ্রব্যের স্পর্শেই ত্বকে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। হয়তো ত্বক লাল হয়ে যায়, খসখসে হয়ে যায়, ফুসকুঁড়ি দেখা দেয়, অথবা চুলকাতে শুরু করে। একে বলে স্পর্শজনিত চর্মরোগ। ত্বকের ছোটখাটো সমস্যাকে কখনো হালকাভাবে নেয়া ঠিক না। এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিন। এমন কতগুলো ত্বকের সমস্যা আছে যা বিশেষ বিশেষ বয়সেই দেখা দেয়। যেমন ব্রণ, ব্ল্যাক হেডস, অ্যাকনে। এ সম্বন্ধে আলোচনা করা হলো।
ব্রণ
ব্রণ সাধারণত দু’রকমের হয়। এক রকম ব্রণ হয় শুকনো ছোট ছোট ধরনের বিশেষ করে গালে, নাকের পাশে বা কপালে হয়ে থাকে। এই ব্রণ বিশেষ কিছু ক্ষতিকর না। সাধারণত, ১৩-২০ বছর বয়স পর্যন্ত এই ব্রণ ওঠে। আর এক রকম ব্রণ বেশ বড় আকারের হয়ে এক সাথে অনেকগুলো ওঠে। গালে, চিবুকে, কপালে বা মুখের যেকোনো জায়গাতেই এই ব্রণ হতে পারে। পুঁজ জমার ফলে এতে প্রায়ই বেশ যন্ত্রণা হয়।
নখ লেগে কিংবা অন্য কোনো কারণে বিষিয়ে গেলে কখনো ভয়ায়ক ও মারাত্মক হয়ে ওঠে। তাই এ ধরনের ব্রণ হলে বিশেষভাবে সাবধান হওয়া উচিত। প্রথমত কোনো কারণেই হাত বা অন্য কোনো কিছু দিয়ে খোঁটা ঠিক নয়। পুঁজ বা যন্ত্রণা বেশি হলে সময় নষ্ট না করে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। ব্রণযুক্ত ত্বকে কোনো ধরনের প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহার করা উচিত নয়।
ব্লাক হেডস
এটি ত্বকের আর একটি সমস্যা। গালে, বিশেষ করে মুখের যে অংশ বেশি তেলতেলে থাকে সেখানেই ব্লাক হেডস হয়। খেয়াল রাখতে হবে খালি হাত, নখ যেন না লাগে। হালকা কুসুম গরম পানিতে নরম কাপড়ের টুকরা বা তুলো দিয়ে সেঁক নেবেন।
বেশ কিছুক্ষণ সেঁক নেয়ার পর ত্বক বেশ নরম হয়ে উঠলে নরম কাপড়ের টুকরো বা এক খণ্ড গজ আঙুলের ডগায় জড়িয়ে ভেতরের ময়লাগুলো চেপে বের করে দেবেন। কোনো অবস্থাতেই জোরে ঘষবেন না বা খুঁটবেন না।
ত্বকের যতœ নেবেন কিভাবে
ত্বকের এসব সমস্যা এড়িয়ে চলতে প্রথমেই চেষ্টা করবেন পেট পরিষ্কার রাখতে। কারণ কোষ্ঠকাঠিন্যই ব্রণ হওয়ার মূল কারণ বলে ধরে নেয়া হয়। প্রথমত প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। শাক-সবজি, ফল, দুধ, ডিম, মাছ নিয়মিত খেতে হবে। বেশি তেল, ঝাল, মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। তেল, চর্বি, ঘিজাতীয় খাবার ও মিষ্টিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। যতটুকু সম্ভব খোলা হাওয়ায় বেড়াবেন। সকাল-সন্ধ্যা আধা ঘণ্টা হাঁটাহাঁটি করবেন, ইচ্ছা করলে ইয়োগাও করতে পারেন। প্রতিদিন আমলকী একটি করে খেতে পারলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি পাওয়া যায়। ভিটামিন-সি যুক্ত ফল প্রতিদিন খাবেন এ ছাড়াও প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ খাবেন।
ষ দিনে অন্তত দু’তিনবার বেশি করে পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুবেন।
ষ ত্বকে খুব বেশি রোদ না লাগানো।
ষ বেশি গরম বা ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার না করা।
ষ ত্বকের ওপর প্রসাধনের অবশিষ্ট বা ধুলো ময়লা জমতে না দেয়া। কারণ এই জমে থাকা অবশিষ্ট ধুলো ময়লা মুখে বিশেষ করে তেল তেলে অংশগুলোতে বসে গিয়ে লোমকূপের মুখ বন্ধ করে দেয়। যার ফলে অ্যাকনে, ব্লাকহেডস ছাড়াও নানা রকম দাগের সৃষ্টি হয়।
ষ তোয়ালে, স্পঞ্জ, মুখে ব্যবহার করার তুলি বা পাউডার পাফ সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে।
ষ খুশকিও অনেক সময় ত্বকে ব্রণের সৃষ্টি করে। তাই চুলের পরিচর্যা করুন নিয়মিত এবং চুল খুশকিমুক্ত রাখুন।
ষ সাবান ব্যবহার করবেন না। ত্বকের অতিরিক্ত সমস্যায় ব্লিচ, থ্রেডিং, কেমিক্যাল ফেসিয়াল করা, স্টিম নেয়া থেকে বিরত থাকুন।