২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

কোন নবী কী ভাষায় কথা বলতেন?

নবী-রাসূলগণ মাতৃভাষাতেই মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দিতেন - প্রতীকী ছবি

ভাষা মহান আল্লাহর বিরাট দান। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তাঁর নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। এতে জ্ঞানীদের জন্য অবশ্যই বহু নিদর্শন রয়েছে।’ (সূরা রুম, আয়াত : ২২)। মানুষ এবং পশু-পাখির মধ্যে পার্থক্যের গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক এই ভাষা। কারণ, আরবরা মানুষের পরিচয় দেয় ‘হায়াওয়ানে নাতেক’ শব্দযোগে। যার অর্থ ‘বাকশক্তিসম্পন্ন প্রাণী’।

আর স্থান ও কাল ভেদে মানুষের ভাষা বৈচিত্রে ভরা। তারা নিজেদের মাতৃভাষায় যার যার মনের ভাব প্রকাশ করে আসছে আদিকাল থেকে। মহান আল্লাহতায়ালাও পৃথিবীতে যতজন নবী-রাসূল আ: পাঠিয়েছেন, তাদের প্রত্যেকে স্বজাতির ভাষায় বিজ্ঞ ছিলেন। পবিত্র কোরআনে কারিমে এসেছে, ‘আমি প্রত্যেক রাসূলকেই তার স্বজাতির ভাষাভাষী (মাতৃভাষী) করে পাঠিয়েছি, তাদের কাছে পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য।’ (সূরা ইবরাহিম, আয়াত : ৪)।

পবিত্র কোরআনের বর্ণনা থেকে স্পষ্ট হয় যে নবী-রাসূল আ: মাতৃভাষায় কথা বলতেন এবং মাতৃভাষাতেই মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দিতেন। নবী-রাসূলদের মধ্যে কে কোন ভাষায় কথা বলতেন, সে সম্পর্কে যেসব ঐতিহাসিক বর্ণনা পাওয়া যায়, তা তুলে হলো—

১. পৃথিবীর প্রথম মানুষ ও প্রথম নবী আদম আ: জান্নাতে আরবি ভাষায় কথা বলতেন। তবে পৃথিবীতে আগমনের পর তিনি সিরিয়াক (ঝুত্রধপ) ভাষায় কথা বলেন। যাকে সিরিয়াক অ্যারামিক ভাষাও বলা হয়।

২. নুহ, শিশ, ইউনুস ও ইদরিস আ: সিরিয়াক ভাষায় কথা বলতেন।

৩. হুদ ও সালিহ আ: আরবি ভাষায় কথা বলতেন।

৪. ইবরাহিম আ: তাঁর মাতৃভাষা ছিল সিরিয়াক। তবে তিনি আরবি ভাষায়ও পারদর্শী ছিলেন।

৫. লুত ও ইয়াকুব আ:-ও সিরিয়াক ও আরবি উভয় ভাষায় পারদর্শী ছিলেন।

৬. ইসমাইল, আইয়ুব ও শোয়াইব আ: আরবি ভাষায় কথা বলতেন।

৭. ইউসুফ আ: শৈশবে আরবি ভাষায় কথা বলতেন। তবে মিসরে আগমনের পর প্রাচীন মিসরীয় ভাষা কিবতি ভাষায় কথা বলতেন।

৮. দাউদ ও সুলাইমান আ: অ্যারামিক (সিরিয়াক ভাষার উপভাষা ও হিব্রুর প্রাচীনরূপ) ভাষায় কথা বলতেন। তবে তাঁরা আরবি ভাষায়ও পারদর্শী ছিলেন।

৯. মুসা ও হারুন আ: প্রাচীন মিসরীয় কিবতি ভাষায় কথা বলতেন। তবে তিনি মাদায়েনে হিজরত করার পর আরবি ভাষা রপ্ত করেন। তবে মিসরের বনি ইসরাঈলরা অ্যারামিক (হিব্রু) ভাষায় কথা বলত।

১০. ইউশা বিন নুন আ: মূলত আরবি ভাষায় কথা বলতেন। তবে প্রাচীন মিসরীয় কিবতি ভাষাও জানতেন।

১১. জাকারিয়া, ঈসা ও ইয়াহইয়া আ: অ্যারামিক ভাষায় কথা বলতেন। তবে তাঁরা আরবি ভাষাও জানতেন।

১২. সর্বশেষ নবী হজরত মোহাম্মদ সা: আরবি ভাষায় কথা বলতেন। তিনি ছিলেন আরবের সবচেয়ে বিশুদ্ধ ভাষার অধিকারী।

মতভিন্নতা ও সমাধান
নবীদের মাতৃভাষা নিয়ে ঐতিহাসিকদের ভেতর মতভিন্নতা আছে। তবে বেশিভাগ মতের মধ্যেই সমন্বয় করা সম্ভব। যেমন ঈসা আ:-এর ভাষার বিষয়ে দুটি মত হলো- অ্যারামিক ও হিব্রু। মূলত অ্যারামিক হলো- হিব্রু ভাষার প্রাচীনরূপ। হিব্রু অ্যারামিকের বিবর্তিত রূপ। তাই মৌলিকভাবে উভয় মতের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই।

তথ্যসূত্র : ফিকরাহ ডটকম, আল-মুলাক্কাস ডটকম ও অন্যান্য

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
বছরে ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলার জলবায়ু অর্থায়নের দাবি বাংলাদেশ অরবিসের সাথে কাজ করতে আগ্রহী : অধ্যাপক ইউনূস ঢাবি সিন্ডিকেটে এখনো বহাল আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা হাসিনা বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করতে দিগন্ত টেলিভিশনসহ অসংখ্য গণমাধ্যম বন্ধ করেছে : ফখরুল শীত শুরু হচ্ছে তবু কমেনি ডেঙ্গুর প্রকোপ ব্যয়বহুল তদন্তেও শনাক্ত হয়নি লাশটি কার ‘রহস্যজনক’ কারণে নেয়া হয়নি ডিএনএ নমুনা নবনির্মিত ওয়ামি কমপ্লেক্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন যুদ্ধবিরতির মার্কিন চেষ্টার মধ্যে লেবাননে ইসরাইলি হামলায় চিকিৎসাকর্মী নিহত অস্বস্তিতে ক্রেতারা : কমিয়ে দিতে হচ্ছে কেনাকাটা গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৪৪ হাজার ছাড়াল আমরা মানুষের সম্মিলিত প্রজ্ঞাকে সম্মান করি

সকল