অঝোরে কেঁদেছেন ইউসুফ বিন সাদ; কাঁদিয়েছেন লাখো মুসল্লিকে
- শেখ আজিজুল হক, গাজীপুর মহানগর
- ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৩৫
বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতে অঝোরে কেঁদেছেন মাওলানা সাদ কান্ধলভির জ্যেষ্ঠ ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ কান্ধলভি। লাখো মুসল্লিও তার সাথে অঝোরে কেঁদেছেন। এ সময় মহান পরওয়ারদিগারের দরবারে লাখো কণ্ঠে উচ্চারিত আমিন; ছুম্মা আমিন ও কান্নার ধ্বনিতে ইজতেমা ময়দান ও আশপাশ এলাকায় অভূতপূর্ব ভাবগম্ভীর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
আখেরি মোনাজাতের আগে তাবলিগের মেহনতের বিভিন্ন দিক নিয়ে সমাপনি বয়ান করেন মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ। তার আলোচনায় দ্বীনের দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এদিকে রোববার আখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে শিল্প নগরী টঙ্গী ও আশপাশের এলাকা ধর্মীয় উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়। বেলা ১১টা ১৭ মিনিট থেকে ১১টা ৪৩ মিনিট পর্যন্ত প্রায় ২৬ মিনিট স্থায়ী মোনাজাত চলাকালে ইজতেমার মূল ময়দান ও আশপাশের এলাকায় পিনপতন নীরবতা নেমে আসে। থেমে থেকে এই নীরবতা ভঙ্গ করে আমীন; ছুম্মা আমীন; আল্লাহুম্মা আমীন ধ্বনীতে মুখরিত হয়ে উঠে ইজতেমা ময়দান। পবিত্র কুরআনের বেশ কিছু প্রার্থনামূলক আয়াত হুবহু উচ্চারণের মাধ্যমে ইজতেমার আখেরি মোনাজাতের সূচনা করেন মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ।
এদিকে উর্দু ভাষায় পরিচালিত এ মোনাজাতে বিশ্বের সকল মুসলিমের হেফাজত, উম্মতে মুহাম্মদির মাগফিরাত, দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ, জাহান্নাম থেকে মুক্তিলাভ, নবী-রাসূল-সাহাবিদের সাথে হাশর নশর ও কায়মনোবাক্যে জান্নাত কামনা করা হয়। এছাড়া বাংলাদেশের উত্তরোত্তর উন্নতি, হেফাজত, মুসলিম জাহানের মজবুতী ইমান, দ্বীনের দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার তৌফিক কামনা, সুন্নতী জিন্দিগী, মসজিদ আবাদ, মসজিদ ও দ্বীন ইসলামের হেফাজত, তাবলিগ জামাত ও ইজতেমাকে কবুলসহ দুনিয়া ও আখেরাতের কামিয়াবি, কল্যাণ কামনা এবং যাবতীয় আজাব-গজব, অকল্যাণ থেকে হেফাজত কামনা করা হয়।
জানা গেছে, আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে শনিবার রাত থেকেই আশপাশের জেলা থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা বাস, ট্রেন, ট্রাক ও ট্রলারসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে ইজতেমাস্থলে আসতে থাকেন। শনিবার রাতে এসব মুসল্লি শীত উপেক্ষা করে রেলস্টেশন, হাসপাতাল ও বিভিন্ন বিপণি বিতানের বারান্দায়, নির্মাণাধীন ও পরিত্যাক্ত বিভিন্ন ভবনে অবস্থান নেন। রোববার ভোর থেকে নারায়ণগঞ্জ, রাজধানী ঢাকা, আশুলিয়া, সাভার ও গাজীপুরের প্রত্যন্ত এলাকার মুসল্লিরা দলে দলে ইজতেমা অভিমুখী রওনা হন। ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, টঙ্গী-আশুলিয়া সড়ক, টঙ্গী-কালিগঞ্জ-নরসিংদী সড়কে যানজটের পরিবর্তে জনজটে রূপ নেয়।
আরো জানা গেছে, রোবাবার ভোর থেকেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরে ভোগড়া চৌরাস্তা, দক্ষিণে কুড়িল বিশ্বরোড, টঙ্গী-আশুলিয়া সড়কের পশ্চিমে ধৌড় মোড় এবং টঙ্গী-কালিগঞ্জ সড়কের পূর্বে করমতলা পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। ফলে আখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে ইজতেমা ময়দান যেন সব পথের মোহনায় পরিণত হয়। মোনাজাত শেষে এসব সড়কে বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ারের মতো জনস্রোত তৈরি হয়।
এ সময় মাওলানা সাআদপন্থী বা ‘তাবলিগ জামাতের মূলধারা, ভারতের নিজামুদ্দিন মারকাজ অনুসারী’ মিডিয়া সমন্বয়কারী মো: সায়েম জানান, ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ভাগে শনিবার রাতে ইজতেমা ময়দানে আরো একজন মুসল্লি মারা যান। এ নিয়ে ইজতেমা ময়দানে তাদের মোট সাতজন তাবলিগ সাথীর মৃত্যু হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা