২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

টানা ১৮ ঘণ্টায় নির্ভুলভাবে সম্পূর্ণ কোরআন শোনালো বিস্ময়বালক রায়হান

বিস্ময়বালক হাফেজ রায়হান আহমাদ - ফাইল ছবি

পবিত্র কোরআনে কারিমের হিফজ সম্পন্ন করা সৌভাগ্যের বিষয় হলেও তা খুব সহজ নয়। তারপরও আমাদের দেশে প্রতিবছর অসংখ্য হাফেজে কোরআন তৈরি হচ্ছে। তারা তাদের অসাধারণ তিলাওয়াত ও মুখস্থ-প্রতিভা দিয়ে আমাদের মুগ্ধ করে চলেছেন প্রতিনিয়ত। ঠিক তেমন-ই একজন বিস্ময়বালক হাফেজ রায়হান আহমাদ। যে টানা ১৮ ঘণ্টায় নির্ভুলভাবে শুনিয়েছে সম্পূর্ণ কোরআনে কারিম।

বৃহস্পতিবার ফজরের পর চাশতের নামাজ আদায় করে হাফেজ রায়হান তার শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মাহবুব রায়হানকে পবিত্র কোরআন শোনানো শুরু করে এবং এর মধ্যে শুধুমাত্র নামাজ ও খাবার গ্রহণের জন্য সামান্য বিরতি নেয় সে। এভাবে মাত্র ১৮ ঘণ্টায় নির্ভুলভাবে কোরআন শোনানো সম্পন্ন করে এই হাফেজ রায়হান।

হাফেজ রায়হান আহমদ সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সাদারাই জামেয়া ইসলামিয়া মাদরাসার হিফজ বিভাগের ছাত্র। এই মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আবুল খায়ের নয়া দিগন্তকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে তার শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মাহবুব রায়হান বলেন, ফজরের পর চাশতের নামাজ আদায় করে হাফেজ রায়হান আহমাদের থেকে পবিত্র কোরআন শোনা শুরু করি। নামাজের সময় ও খাবারের সংক্ষিপ্ত বিরতি ছাড়া সে আর কোনো বিরতি নেয়নি। এভাবে টানা ১৮ ঘণ্টায় পুরো কুরআনুল কারিম শুনিয়েছে সে। গড়ে প্রতি পারায় ৩০ মিনিট সময় লেগেছে তার। পুরো সময়ের মধ্যে তার কোনো লুকমা (ভুল) যায়নি।

‘তাকে শর্ত দেয়া হয়েছিল- একটানা খতমের উদ্দেশ্যে পড়া শুরু করলে তা শেষ হওয়া পর্যন্ত কোরআন দেখা যাবে না এবং খতম শুরুর আগে হাফেজ রায়হান আহমদকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, নির্ভুল শুনাতে পারবা তো? পূর্ণ আত্মবিশ্বাস ও সাহসের সাথে সে বলছিল ‘জ্বি ইনশাআল্লাহ’। আমি মনে মনে ধরে নিয়েছিলাম, প্রতি ১০ পারায় একটা লোকমা ক্ষমাযোগ্য। তবে ৩০ পারায় তিনটির বেশি ভুল হলে এই খতম আর শোনা হবে না। নতুন করে আবার শুরু থেকে শোনাতে হবে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে- রায়হান আহমাদ আমাকে অবাক করে দিয়েছে। পুরো কুরআনুল কারিম নির্ভুলভাবে শুনিয়েছে সে। না কোনো শব্দ ভুল করেছে, না কোনো ইয়াদ ছুটে গেছে।’ যোগ করেন শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মাহবুব রায়হান।

তিনি উচ্ছ্বসিত হয়ে আরো বলেন, রায়হান আমার জীবনের প্রথম ছাত্র, যে পূর্ণ কুরআনুল কারিম বিনা লোকমায় আমাকে শুনিয়েছে। এটা আমার সবচাইতে বড় অর্জন। আলহামদুলিল্লাহ।

এ খবর শুনে আনন্দিত সাদারাই জামেয়ার মুহতামিম মাওলানা আবুল খায়ের ও নাযিমে তালিমাত মুফতি আব্দুল হাইসহ এখানকার সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। এ প্রসঙ্গে মুহতামিম মাওলানা আবুল খায়ের বলেন, নিঃসন্দেহে এটা আমার মহান রবের মহা অনুগ্রহ। সব প্রশংসা শুধু তাঁরই। যিনি তাওফিক দিয়েছেন কোরআন পড়ার, কোরআন ছোঁয়ার ও কোরআন মুখস্ত করার। প্রশংসার যত শব্দ; যত বাক্য সবই তাঁর-ই জন্য।


আরো সংবাদ



premium cement