২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

রংপুরে পুকুর থেকে উদ্ধার হাওয়া লকারটিতে কী ছিল?

আটক মৎস্যজীবী দলের সাবেক সভাপতিকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার
পাওয়া ব্রিফকেস - ছবি : নয়া দিগন্ত

রংপুর মহানগরীর কলেজপাড়ার একটি পুকুর থেকে ব্রিফকেসে থাকা ২৫ কেজি ওজনের একটি শক্তিশালী লকার উদ্ধার করেছে যৌথবাহিনী। পুলিশ বলছে ওই লকারে ৭৩ হাজার ইউএস ডলার থাকার একটি লিখিত কাগজ পেয়েছেন তারা। আর লকারটি ভাঙ্গার সাথে জড়িতরা বলছেন ১৮টি বান্ডেল ছিল কালো কাগজের। আসলে কী ছিল ওই লকারে এ নিয়ে মানুষের কৌতূহল বাড়ছে।

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক রংপুর জেলা মৎস্যজীবী দলের সাবেক সভাপতি রশিদুস সুলতান বাবলুকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে নগরীর কলেজপাড়া বাহিন ছাত্রাবাসের পশ্চিমপাশ লাগোয়া পুকুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় যৌথবাহিনী উদ্ধার করে এই রহস্যময় লকার।

যৌথ বাহিনীর তরফে জানানো হয়, বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) ভোরে রংপুর মহানগরীর নজরুল পাঠাগারের পাশে একটি পরিত্যাক্ত লাল রংয়ের ব্রিফকেস পান আতিকুর রহমান নামের এক নাইট গার্ড। বাড়িতে নিয়ে এসে খুলে সেখানে একটি শক্তিশালী লোহার তৈরি লকার দেখতে পান তিনি। লকারটি ছিল স্বয়ংক্রিয়। পরে আতিক স্থানীয় নজরুল পাঠাগারের সভাপতি রশিদুল সুলতান বাবলু এবং তার বন্ধু মিলনের কাছে হস্তান্তর করেন পুলিশে দেয়ার জন্য। কিন্তু তারা সেটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর না করে নগরীর কারমাইকেল কলেজ সংলগ্ন কলেজ পাড়ায় মিলনের ছাত্রাবাস মাহিম ছাত্রাবাসে উপরে নিয়ে গিয়ে ভেঙে ফেলে। এবং লকারে থাকা সবকিছু নিয়ে পাশের পুকুরে লকার ফেলে দেয়।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে মিলন ছাত্রাবাসের আশপাশে অভিযান পরিচালনা শুরু করে যৌথ বাহিনী। রাত দেড়টায় বাসটির পশ্চিম পাশের পুকুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের সহযোগিতায় লকার এবং একটি কালো ডলারের মতো বান্ডিল উদ্ধার করে যৌথ বাহিনী।

ব্রিফকেসটি কুড়িয়ে পাওয়া নাইট গার্ড আতিকুর রহমান জানান, ‘আমি ব্রিফকেসটি পাওয়ার পর খুলে যখন দেখলাম সেখানে লোহার লকার। তখন সেটি স্থানীয় বাবলু এবং মিলনের কাছে হস্তান্তর করি পুলিশকে দেয়ার জন্য। কিন্তু তারা পুলিশকে না দিয়ে সেটি ভিন্ন এক জায়গায় নিয়ে গিয়ে ভেঙে ফেলে এবং ওর ভিতরে যা ছিল সবকিছু আত্মসাৎ করেছে।’

অভিযুক্ত রশিদুস সুলতান বাবলু স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী নজরুল সভাপতি। তিনি জানান, ‘বন্ধু মিলনের পরামর্শে তারা লকারটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর না করে মিলনের মালিকানাধীন মাহীন ছাত্রাবাসের ছাদে নিয়ে আসেন। লকারটির ওজন কেজির উপরে ছিল। এবং স্বয়ংক্রিয় ছিল। পাসওয়ার্ড দেয়ার চেষ্টা করে আমরা খুলতে পারিনি। পরে ভেঙে ফেলি। ওই লকারের মধ্যে একটি কাগজ এবং ১৮টি কালো টাকার মতো বান্ডিল ছিল। এছাড়া অন্য কিছু ছিল না। ভেঙে ফেলার পর সেই বান্ডিলগুলোসহ লকারটি আমরা ছাত্রাবাস লাগোয়া পুকুরে ফেলে দেই।’

‘পুলিশকে না দিয়ে লকারটি ভেঙ্গে ফেলা আমার অমার্জনীয় অন্যায় হয়েছে,’ বলেন তিনি।

অভিযানে অংশ নেয়া কোতোয়ালি থানার এসআই খালিদ আহমেদ জানান, লকারের মধ্যে ইংরেজিতে লেখা একটি কাগজ ছিল। সেই কাগজটি ৭৩ হাজার ইউএস ডলার থাকার কথা লেখা আছে। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে পুকুর থেকে কোনো ডলার উদ্ধার হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবলু ও আতিককে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে যৌথ বাহিনী। অভিযানের খবর পেয়ে পালিয়ে গেছে মিলন।

তিনি আরো জানান, বিষয়টি তদন্ত করে লকারের মধ্যে কি কি ছিল এবং তা কোথায় রাখা হয়েছে সেগুলো বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তবে স্থানীয়দের দাবি, ডলারগুলো আত্মসাৎ করে সেখানে কালো কিছু টাকার মতো বান্ডিল করে রাখে বাবলু ও মিলন।


আরো সংবাদ



premium cement