২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

‘দীপ্তর মৃত্যুর সাথে ঢামেক হাসপাতালে হামলা-ভাঙচুরের সম্পর্ক নেই’

‘দীপ্তর মৃত্যুর সাথে ঢামেক হাসপাতালে হামলা-ভাঙচুরের সম্পর্ক নেই’ - ছবি : নয়া দিগন্ত

ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহসানুল ইসলাম দীপ্তর মৃত্যুর সাথে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভাঙচুর ও হামলার ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই।

বিনা চিকিৎসায় ৯ ঘণ্টা জরুরি বিভাগে ফেলে রাখায় মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন নিহত দীপ্তর বাবা ও বন্ধুরা।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ সংক্রান্ত মামলায় দীপ্তর বন্ধুদের না জড়ানোর আহ্বান জানিয়ে গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় এ ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটন ও সুষ্ঠু তদন্ত দাবিও করেন তারা।

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি-বিইউবিটির সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসানুল ইসলাম দীপ্ত শুক্রবার রাতে (৩০ আগস্ট) ঢাকার কুর্মিটোলায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় দীপ্তর মৃত্যু হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন তার বন্ধুরা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় দুর্ঘটনার পর আহত দীপ্তর মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন দুর্বৃত্তরা হাতিয়ে নেয়। পরে নিলয় নামে এক পথচারী তাকে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ বন্ধে একটি অস্ত্রোপচার ও আইসিইউ সেবা পেতে সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু আইসিইউ বেড ও অন্য আনুষ্ঠানিকতা বাবদ সাত হাজার টাকা দাবি করা হয়। দীপ্তর স্বজনরা না থাকায় টাকা না পেয়ে তাকে চিকিৎসা সেবা না দিয়ে জরুরি বিভাগের মেঝেতে ফেলে রাখা হয়। পরের দিন শনিবার সকালে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে দুপুর নাগাদ দীপ্তর বন্ধু সঞ্জয় পাল জয়সহ অন্য বন্ধুরা হাসপাতালে আসেন এবং বিনা চিকিৎসায় দীপ্তর মৃত্যুর বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে সুষ্ঠু বিচার দাবি করে। ওই দিন রাতেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আরো দুটি মৃত্যুর ঘটনায় উত্তেজনা তৈরি হয়। এ সময় হাসপাতালে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। বিনা চিকিৎসায় দীপ্তর মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে তার বন্ধুদের মামলায় জড়ানো হয়। এমনকি কাতার প্রবাসী বন্ধুকেও আসামি করা হয়।

দীপ্তর বাবা শহীদুল ইসলাম মাজু এই ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটন ও সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে ন্যায় বিচার ‘ইনসাফ’ প্রতিষ্ঠায় সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। সংবাদ সেম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দীপ্তর বন্ধু রাশেদ স্বর্ণ বাবু। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আব্দুল্লাহ সানি ও মো: তামিজিদ রায়হান প্রমুখ।

এ দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় সোমবার ভোরে গাইবান্ধা শহরের বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে সঞ্জয় পাল জয় (২৫) নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে গাইবান্ধা শহরের মাস্টারপাড়ার বারিধারা এলাকার রঞ্জিত পালের ছেলে।

গাইবান্ধা জেলার পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সঞ্জয় পালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে ঢাকায় সোর্পদ করা হবে।

উল্লেখ্য, ঢামেকে চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় রোববার ছিল দিনভর উত্তেজনা। হামলাকারীদের গ্রেফতার বিচার, নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করাসহ চার দফা দাবিতে রোববার সকাল থেকে কমপ্লিট শাটডাউন (কর্মবিরতি) পালন করেন দেশের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।


আরো সংবাদ



premium cement