কর্মচালঞ্চল্য হয়ে উঠছে ফুলবাড়ীর জনজীবন, পুরো উপজেলা পুলিশ শূন্য

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার জনজীবন।

সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় মঙ্গলবার সকাল থেকেই কর্মচালঞ্চল্য হয়ে ওঠে সর্বত্রই। তবে পুলিশশূন্য রয়েছে পুরো ফুলবাড়ী উপজেলা।

বুধবার (৭ আগস্ট) সকালে সড়কে যানবাহনের সংখ্যা কম থাকলেও বেলা বাড়ার পর থেকে তা বাড়তে থাকে। তবে রিকশা-ভ্যান, অটোরিকশাসহ সিএনজি চালিত তিন চাকার যানবাহনের অধিক্য ছিল লক্ষ্যণীয়। স্কুল-কলেজে খোলা থাকলেও শিক্ষক-কর্মচারীদের উপস্থিতি থাকলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল কম। চাপা আতঙ্ক নিয়েই জরুরি প্রয়োজনে রাস্তায় বেরুচ্ছে মানুষ। শহরের কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

বেলা সাড়ে ১১টায় ফুলবাড়ী পৌরশহর ঘুরে দেখা যায়, অন্য সময় শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করলেও বুধবার শহরে কোথাও কোনো পুলিশ সদস্যকে দেখা যায়নি। থানার প্রধান ফটক বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। সরকারী প্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজে, ব্যাংকসহ সাহিত্য স্বাশিত প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা থাকলেও মানুষের তেমন উপস্থিতি ছিল না। তবে কিন্ডার গার্টেন স্কুলগুলোতে তুলনামূলক শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ছিল বেশি। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক না হওয়ায় রেল স্টেশন একেবারে নীরব হয়ে আছে। দোকানপাট খোলা থাকলেও ক্রেতা সংখ্যা কম।

এ দিকে ফুলবাড়ীতে শান্তি-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং কোনো প্রকার সহিংসতার ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীরাসহ উপজেলা ও পৌর শাখা বিএনপি, উপজেলা শাখা জামায়াতে ইসলামী পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক মাইকিং করা হয়েছে। উপজেলার প্রত্যেকটি পাড়া-মহল্লাকে সার্বিকভাবে নিরাপদ রাখতে বিভিন্ন দলীয় নেতাকর্মীরা নজরদারি করছেন।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী শিহাব ও বিশাল বলেন, দেশ আমাদের সবার, তাই এ দেশ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। কোনো প্রকার অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটানো যাবে না। এদিকে সাধারণ মানুষের মাঝে সস্তি দেখা গেলেও দ্রুত সরকার গঠন করে দেশে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।

সুজাপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস কে মোহাম্মদ আলী বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা যথাসময়ে উপস্থিত থাকলেও একজন শিক্ষার্থীও উপস্থিত হয়নি। আগামী দু-এক দিনের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে মনে করছেন তিনি।

ফুলবাড়ী গোলাম মোস্তফা (জিএম) পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোজাম্মেল হক বলেন, বিদ্যালয় খোলার পর শিক্ষকরা যথাসময়ে উপস্থিত হলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নেই। তবে আগামী দু-এক দিনের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

সুজাপুর মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমার চক্রবর্তী বলেন, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। উপস্থিত শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়া হয়েছে। দ্রুতই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়বে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, পুলিশ বাহিনীর সংস্কারের আন্দোলনের জন্য তারাও কর্মবিরতিতে আছেন। ফলে কোনো প্রকার দায়িত্ব পালন করছেন না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মো: আল কামাহ তমাল বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন।