২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

আন্দোলনের সহিংসতা ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে সরকারি দলের নেতাকর্মী জড়িত : জিএম কাদের

আন্দোলনের সহিংসতা ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে সরকারি দলের নেতাকর্মী জড়িত : জিএম কাদের - ছবি : নয়া দিগন্ত

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সহিংসতা ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে সরকারি দলের নেতাকর্মী এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জড়িত। কিন্তু সরকার এটাকে একটি বিশেষ গোষ্ঠির ওপর চাপানোর যে চেষ্টা করছে তা জনগণ গ্রহণ করেনি, সরকার প্রমাণও করতে পারেনি।

বুধবার (৩১ জুলাই) বিকেল ৩টায় সার্কিট হাউজে এসে তিন দিনের রংপুর সফরে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সরকার নিজেদের রক্ষায় সেনাবাহিনীসহ পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে, যার পরিণাম হচ্ছে ভয়াবহ। এই সময়ে জামায়াত শিবির নিষিদ্ধের বিষয়টি আরো জুলুম নিপিড়ন নেমে আাসার আলামত বলে উল্লেখ করেন তিনি।

গার্ড অব অনার গ্রহণ শেষে মুখোমুখি হন সাংবাদিকদের। সেখানেই এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় তার সাথে ছিলেন কো চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান এসএম ইয়াসির, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন লেবু, মহানগর সিনিয়র সহ-সভাপতি লোকমান হোসেনসহ স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

এ সময় তিনি আবু সাঈদকে শহীদ বীর সেনানী উল্লেখ করে কোটা আন্দোলনে শিশুসহ নিহত ছাত্রজনতার জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন জি এম কাদের। বলেন, ‘রংপুরের বীর সন্তান, বীরমুক্তিসেনা যাকে অভিহিত করেছি। শহীদ আবু সাঈদেও প্রতি গভির শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। নতুনভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যে বীর মুক্তি সেনারা শহীদ হয়েছেন তাদের সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। আল্লাহ তাদের বেহেস্তে দান করুক‘।

সরকারই ইচ্ছে করেই আবারো কোটা পদ্ধতি পুনর্বহালের চেষ্টা করেছিল। প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ছিল যৌক্তিক। এই প্রথম কোনো আন্দোলন দেখলাম। যেখানে জনগণও সম্পৃক্ত হয়েছে উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, ‘বর্তমানে যেটা চলছে বাংলাদেশে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক পরিস্থিতি। বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ ছাত্রদের সাথে যুক্ত হয়েছিল। ছাত্রদের একটা যুক্তি সংগত দাবি তারা কোটা পদ্ধতি বাতিল চেয়েছিল। যেটা বাতিলই ছিল। পরবর্তীকালে কোর্টের অর্ডারে যখন এটাকে পুর্ণবহাল করার ব্যবস্থা করা হল এবং যখন বুঝতে পারল ছাত্ররা এটা সরকারের ইন্দোনে হচ্ছে। সরকার কোটা ব্যবস্থাকে নিজের দলীয় স্বার্থে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য এটা করছেন। সেই সময় জনগণ ছাত্ররা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াল। তাদেরও পর পুণরায় সরকার বিভিন্নভাবে সরকার দলীয় অঙ্গসংগঠন, অস্ত্রসস্ত্রসহ পুলিশের সহযোগিতায় নির্যাতন করা শুরু করল। তারা তখন প্রতিরোধ করল এবং সেই প্রতিরোধে সাধারণ জনগণ, তাদের ছেলে, তাদের মেয়ে, তাদের আত্মীয় স্বজন, সবাইকে বাচানোর জন্য, তাদের আত্মরক্ষার্থে জন্য সাধারণ জনগণ তখন মাঠে নেমে এসেছিল।‘

জি এম কাদের বলেন, ‘সরকার নিজেদের বাঁচাতে সেনাবাহিনীসহ রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে যেটা ঠিক নয়। আমার জীবনদশায় এই ধরণের আন্দোলন এবং জনগণের সমর্থপুষ্ট একটি দাবিদফা সামনের দিকে যে এগিয়ে নেয়া হয়েছে এটা একটা অভূতপূর্ব অবস্থার সৃষ্টি করেছে। আমরা অনেক সংগ্রাম দেখেছি আমাদের জীবনে। অনেক আন্দোলন দেখেছি। এমন আন্দোলন, এতো সক্রিয়ভাবে মানুষের অংশ গ্রহণ, মানুষের ক্ষোভের বহিপ্রকাশ, দীর্ঘদিন থেকে মানুষ নানাভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছিল, বঞ্চনার শিকার হচ্ছিল, নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার হচ্ছিল। সবগুলো একসাথে যুক্ত হয়ে জনগণ মাঠে নেমে গেছিল ছাত্রদের সাথে।’


আরো সংবাদ



premium cement