বেরোবির শিক্ষার্থী নিহতের দুই দিন পর তদন্ত কমিটি গঠন
- রংপুর অফিস
- ১৮ জুলাই ২০২৪, ১৫:০৯
পুলিশের গুলিতে নিহত রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের মৃত্যু এবং সংঘাত সংঘর্ষের ঘটনা অনুসন্ধানে দুই দিন পর তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দিলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একই সাথে আহতের জন্য চিকিৎসা কমিটি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক ও অফিস প্রধান মোহাম্মদ আলী এই তথ্য জানিয়ে বলেন, তিন সদস্য বিশিষ্ট এই তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড: মতিউর রহমান। কমিটির সদস্য সচিব বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. শফিকুর রহমান ও রসায়ন বিভাগের প্রফেসর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. বিজন মোহন চাকি।
মোহাম্মদ আলী জানান, ভিসির নির্দেশক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ কমিটি গঠন করা হয় এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে কমিটিকে উক্ত বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য বলা হয়।
মোহাম্মদ আলী আরো জানান, ‘আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সহায়তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র উপদেষ্টা সৈয়দ আনোয়ারুল আজিমকে আহ্বায়ক করে পৃথক আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারের সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার ডা: অলক কুমার দাস সদস্য এবং উপ-প্রধান মেডিক্যাল অফিসার ডা: এস এম শাহরিয়ার সদস্য-সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। এই কমিটিকে আহত শিক্ষার্থীদের সু-চিকিৎসার জন্য আর্থিকসহ সকল ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এ দিকে, গতকাল বুধবার আবু সাঈদ নিহত এবং অন্যান্য ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সায়ফুজ্জামান ফারুকীকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রংপুর মহানগর পুলিশ। দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে কমিটি।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে পুলিশ কোটা আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ গুলি, টিয়ারশেল ছোড়ে। আর ছাত্রলীগ হেলমেট পড়ে মুখে গামছা বেধে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ধাওয়া দেয়। এমন মুহূর্তেই রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটের সামনে দাড়িয়ে আন্দোলনকারীদের নেতা আবু সাঈদ পুলিশ এবং ছাত্রলীগকে উদ্দেশ্যে করে বলে ‘আপনারা আমার ভাই-বোনের ওপর আর গুলি ছুড়বেন না। ওদের মারবেন না। এরপর দুই হাতে তুলে বলে আপনারা আমাকে গুলি করেন, তবুও ওদেরকে গুলি করবেন না।’ সাথে সাথে ১ নম্বর গেট থেকে পুলিশ তার বুক বরাবর তিন রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে। তারপরও কিছুটা সময় দাড়িয়ে থাকে সাঈদ। পরে সামান্য দূরে গিয়ে একটু পরেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সাঈদ। শিক্ষার্থীরা তাকে দ্রুত রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনি রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র। তার বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জের জাফরপাড়ায়। তার বাবা মকবুল হোসেন আওয়ামী লীগের সক্রিয়কর্মী।
মঙ্গলবার চার ঘণ্টাব্যাপী ওই সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ সাংবাদিক পুলিশসহ শতাধিক আহত হয়েছে। ভাংচুর করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হল, ভিসির বাংলো। পুড়িয়ে দেয়া হয়, দুই পুলিশের গাড়ি, ছাত্রলীগ সভাপতির গাড়িসহ ১০ থেকে ১২টি মোটরসাইকেল। হামলা করা হয় র্যাবের গাড়িতেও।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা