ঠাকুরগাঁওয়ে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পেল সেই ৩৬ পরীক্ষার্থী
- রুহিয়া (ঠাকুরগাঁও) সংবাদদাতা
- ২৯ জুন ২০২৪, ২০:৫৯
রাত পোহালেই এ বছরের এইচএসসি পরীক্ষা। কিন্তু প্রবেশপত্র পায়নি ৩৬ শিক্ষার্থী। প্রবেশপত্র না পেয়ে তারা কলেজের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেছে। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া ডিগ্রী কলেজে আজ শনিবার এ ঘটনা ঘটে।
পরে প্রশাসনের আশ্বাসে তালা খুলে দেয়া হয়। বিকেলে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ওই শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের ব্যবস্থা করা হয়।
রুহিয়া ডিগ্রী কলেজের দফতর থেকে জানা যায়, আগামীকাল রোববার এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। এবারে এইচএসসি পরীক্ষার অনলাইনের ফরম পূরণের কার্যক্রমের শেষ তারিখ ছিল গত ৫ মে পর্যন্ত। আর ‘সোনালী সেবার’ মাধ্যমে ফি পরিশোধ করা গেছে ৬ মে পর্যন্ত। বিলম্ব ফিসহ ফরম পূরণের সময় ৭ মে থেকে শুরু হয়ে চলে ১২ মে পর্যন্ত। ‘সোনালী সেবার’ মাধ্যমে ফি পরিশোধ করা গেছে ১৩ মে পর্যন্ত।
রুহিয়া ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য সাধারণ শাখায় মোট ১৬৮ জন ও বিজনেস ম্যানেজমেন্ট শাখার প্রথম বর্ষে ১২৮ জন এবং দ্বিতীয় বর্ষে ১২৯ জন শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করে। ফরম পূরণ শেষে গত জুন কলেজ থেকে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে বলে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীরা কলেজ থেকে তাদের নিজ নিজ প্রবেশপত্র সংগ্রহ করেন। কিন্তু কলেজের বিজনেস ম্যানেজমেন্ট শাখার ২৫ ও সাধারণ শাখার ১১ জন শিক্ষার্থী প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে এসে জানতে পারেন, তাদের নামে কোনো প্রবেশপত্র নেই। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করেন। আজ শিক্ষার্থীরা এক হয়ে কলেজের মূল ফটকে তালা মেরে দেন। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। খবর পেয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরাও বিক্ষোভে যোগ দেন।
ভুক্তভোগী বিপ্লব চন্দ্র সিংহ জানান, তিনি ছাড়াও মো: নুরুল্লাহ, রবিউল আলম, আরিফ হোসেন, দুলালী রানী, আফসানা আক্তার, আবু তালেবসহ বিভিন্ন বিভাগের ৩৬ জন শিক্ষার্থী রুহিয়া ডিগ্রি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের নিয়মিত শিক্ষার্থী। কিন্তু তাদের প্রবেশপত্র পাওয়া যায়নি।
বিপ্লব চন্দ্র সিংহ আরো জানান, বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের কিছুই করার নেই। এমন অবস্থায় অনেক শিক্ষার্থী কান্নাকাটি করে বাড়ি ফিরে যায়।
সাতজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য কলেজের ল্যাব সহকারী মিজানুর রহমানের কাছে টাকা জমা দিয়েছিলেন। প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে এসে তারা জানতে পারেন, তিনি তাদের ফরম পূরণ করেননি।
খবর পেয়ে রুহিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গুলফামুল ইসলাম মন্ডল ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে সমস্যার সমাধানে আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা ফটকের তালা খুলে দেন।
কলেজের অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান বলেন, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি করে দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে ওই কমিটির মাধ্যমেই তাদের ফরম পূরণ করেছে। যারা ওই কমিটির মাধ্যমে ফরম পূরণ করেছে তাদের সবারই প্রবেশপত্র এসেছে। তবে শোনা যাচ্ছে ওই কমিটির বাইরে কেউ কেউ টাকা জমা দিয়েছে। যারা কমিটির বাইরে ফরম পূরণের টাকা দিয়েছেন, তাদের দায় আমরা নেব না।
বিষয়টি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) বেলায়েত হোসেন ও কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি পার্থ সারথি সেনের নজরে এলে তারা দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করেন। পরে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় মানবিক শাখার ১১ জন ও বিজনেস ম্যানেজমেন্ট শাখার ২৫ জন শিক্ষার্থীর ফরম পূরণ করা হয়। আগামীকাল ওই ৩৬ জন পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
এ বিষযে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন বলেন, যেসব শিক্ষার্থী প্রবেশপত্র থেকে বঞ্চিত হয়েছিল, তাদের পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এই ঘটনাটি কেন ঘটলো, তা যাচাই করে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা