২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

স্বর্ণের জন্য ইটভাটায় দিনরাত চলছে খোঁড়াখুঁড়ি

স্বর্ণের জন্য ইটভাটায় দিনরাত চলছে খোঁড়াখুঁড়ি - ছবি : নয়া দিগন্ত

ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলার কাতিহার এলাকার আরবিবি ইটভাটার মাটির স্তুপ দিনরাত খুঁড়ছেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ। কিন্তু কেন এই মাটি খননের প্রতিযোগিতা?

ইটভাটাটির মাটির স্তুপে স্বর্ণ পাওয়া যাচ্ছে, এমন খবরেই মাটি খননে ব্যস্ত হয়ে পড়ে গ্রামবাসী।

স্বর্ণ পেলে ভাগ্য বদলাবে, তাই যোগ দিয়েছেন আশপাশের এলাকার বাসিন্দারাও। কাতিহারের মানুষের দাবি, ইটভাটার মাটির স্তুপ খুঁড়লেই মিলছে স্বর্ণ! এরইমধ্যে ভাটার মাটি খুঁড়ে স্বর্ণ পেয়েছেন শতাধিক মানুষ। তাই দিনের পাশাপাশি রাতের আঁধারেও আলো জ্বেলে চলছে খোঁড়াখুঁড়ি।

জ্বিনের সোনার হাঁড়ি পেয়ে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণে এবার দিন-রাত ইটের ভাটার মাটি খুঁড়ে চলেছেন কয়েক হাজার মানুষ। কেউ কোদাল, কেউ বাসিলা, কেউ খুন্তি দিয়ে সোনার সন্ধানে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রাণান্তর চেষ্টা। তবে ভাটায় সংবাদকর্মী দেখলেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলার কাতিহার আরবিবি ইট ভাটায় গত কয়েকদিন ধরে চলছে মাটি খননের প্রতিযোগিতা। গ্রামের বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষ বাড়ি থেকে কোদাল, বাসিলা নিয়ে ওই ভাটায় আসছেন এবং ইট তৈরির জন্য স্তূপ করে রাখা মাটির স্তুপ খনন করছেন। এদের মধ্যে শ্রমিক শ্রেণির মানুষই বেশি। সোনা পেলে ভাগ্য বদল হবে এই আশায় গভীর রাত পর্যন্ত মানুষের ভিড় দেখা যাচ্ছে ইট ভাটায়।

জানা যায়, এপ্রিল মাসে হঠাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ওঠে রানীশংকৈল উপজেলার কাতিহার আরবিবি ইটভাটা। বলা হচ্ছে, ওই ভাটায় মাটির স্তুপের নিচে পাওয়া যাচ্ছে সোনা। এমন একটি সংবাদ ভাইরাল হওয়ার পর দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই ছুটে আসছেন ভাটায়। সোনা পাওয়ার আশায় ইট তৈরির জন্য স্তূপ করে রাখা মাটির ঢিবিতে চালাচ্ছেন ইচ্ছামতো খনন কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ইসলাম, মাজেদুল হকসহ আরো কয়েকজন বলেন, ভাটার মাটির স্তূপে সোনা পেয়েছেন কয়েকজন। কিন্তু কে পেয়েছেন এ কথা স্বীকার করছেন না কেউ। তাদের দাবি অনেকেই পেয়েছে, তাই আমারাও খুঁড়ে দেখছি।

আরবিবি ইটভাটার ব্যবস্থাপক লিটন আলী বলেন, কাতিহার সামরাই মন্দিরের পাশ থেকে মাটি খনন করে ইটভাটায় স্তূপ করা হয়েছে। গুজব উঠেছে ওই মাটির স্তূপ থেকে সোনার জিনিস পাওয়া গেছে। এরপর থেকেই সাধারণ মানুষ দিনরাত ওই মাটির স্তূপ খনন করে বাছাই শুরু করেছে। তবে কেউ সোনার কোনো অংশ পেয়েছে, এমন খবর তারা পাননি। তারপরও প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ মাটি খুঁড়তে আসছে।

এ বিষয়ে রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রকিবুল হাসান বলেন, বিষয়টি এর আগেও জেনেছি। বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু দু’দিন ধরে জনতা আবার একই কাজ শুরু করেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement