করোনায় মরিচ তোলার কাজ করে সংসার চালান নারীরা
- আপেল মাহমুদ রুহিয়া (ঠাকুরগাঁও)
- ০২ মে ২০২১, ১০:০২
করোনারভাইরাস রোধে সরকারি বিধি-নিষেধের ফলে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না পুরুষরা। তাই সংসার চালাতে মরিচ তোলার কাজ করছেন বগলী, অলিফা, রুনা ও রিনা দাসের মতো সংগ্রামী নারীরা।
শনিবার সকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া ঘনিমহেষপুর (কুড়ালি) এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রখর রোদে পাকা মরিচ তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন নারীরা। রোদের মধ্যে পাকা মরিচ কে বেশি তোলতে পারে সেই প্রতিযোগীতায় ব্যস্ত তারা।
মরিচ তোলার ফাঁকে কথা হয় রুনা বেগমের (৩০) সাথে। তিনি জানান, বাসে হেলপারের কাজ করেন তার স্বামী আকবর আলী। লকডাউনের কারণে বাস চলাচল বন্ধ। তাই বাড়িতে আছেন তিনি। কিন্তু সংসারে রোজগার করার মতো উপযুক্ত আর কেউ নেই। তাই সংসারের হাল ধরতে খালার সাথে মরিচ তোলার কাজে আসছি। ৩শ’ টাকার মতো পাই। তা দিয়ে এখন সংসার চলছে।
তিনি আরো বলেন, গত বছর সরকারসহ বিভিন্ন মানুষ ত্রাণ দিলেও এ বছর ত্রাণের কোনো খবর নেই। এখন সব মরণ আমাদের মতো গরীবদের। ত্রাণের কথা শুনে এগিয়ে আসেন অলিফা বেগম, বগলি বেগম, রিনা দাসসহ অন্যরা। একে একে তাদের সমস্যার কথা বলেন।
বগলি বেগম বলেন, আমার স্বামী ভাড়ায় অটো গাড়ি চালায়। লকডাইনের সময় গাড়ি নিয়ে বাহিরে যেতে দেইনি। এরপর থেকে তিনি বাড়িতেই। এখন বুড়া স্বামী অন্যকোনো কাজও করতে পারে না। তাই দু’বেলা খাবার জোগাড় করতে মরিচ তোলতে আসছি। তিনি আরো বলেন, রোদের মধ্যে মরিচ তুলতে অনেক কষ্ট হয়। এছাড়া মরিচের ঝাঁজে নাক দিয়ে পানি পড়তে থাকে। তারপরও নগদ টাকা পেলে ভালোই লাগে। রিনা দাস (৩৫) কাঁশতে কাঁশতে সামনে আসেন।
তিনি বলেন, মরিচের তোলার কাজ করলে হাত-মুখ জ্বালা করে। হাঁচি-কাঁশি তো আছেই। তারপরও করতে হয়। এছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। লকডাউনে কৃষি কাজ ছাড়া অন্যসব কাজ বন্ধ রয়েছে। গত ১৫দিন যাবত মরিচ তোলার কাজ করতেছি। প্রথম দিকে আরো কষ্ট হতো এখন অভ্যাস হয়ে গেছে।
তিনি আরো বলেন, লকডাউনের কারণে স্বামী বাসায় বসে আছেন। তাই বোনের সাথে মরিচ তোলার কাজ করতে আসছি। পাশে বসে মরিচ তোলছেন মরিচ ক্ষেতের চাষী এনামুল হক।
তিনি বলেন, মরিচ তোলার কাজটি সাধারণত নারীদের দিয়েই করানো হয়। পুরুষরা এ কাজ করলেও নারীদের মতো নিখুঁত হয় না। ঢাকি প্রতি কোনদিন ৫০ টাকা কোনদিন ৬০ টাকা দিই, দিনে ছয় থেকে সাত ঢাকি পর্যন্ত মরিচ তোলা যায়। ক্ষেত থেকে মরিচ মাঠে শুকানোর জন্য নেয়ার কাজটাও পুরুষের পাশাপাশি নারীদের সিংহভাগ অংশই করে থাকেন। একইভাবে মরিচ শুকানো ও বাছাইয়ের কাজটিও নারীরাই করে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা