২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

অচল গাড়িতেই সংসার মনছুর-মরিয়মের

অচল গাড়িতেই সংসার মনছুর-মরিয়মের - সংগৃহীত

মানসিক ভারসাম্যহীন প্রতিবন্ধী স্ত্রীকে নিয়ে অচল গাড়িতে সংসার পেতেছেন ভূমিহীন মনছুর আলী। কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের দেওয়ানের খামার গ্রামে পথের ধারে স্ত্রী মরিয়ম আক্তারকে নিয়ে রাত যাপন করেন তিনি।

স্থানীয়রা জানান, বছর কয়েক আগে ধারদেনা করে প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকায় তৈরি করেছিলেন অটোরিকশার আদলে তিন চাকার এক গাড়ি। চালকের আসনের পাশে ভারসাম্যহীন স্ত্রী মরিয়ম আক্তারকে বসিয়ে সেই গাড়িতে যাত্রী পরিবহনের মাধ্যমে সংসার চালানোর চেষ্টা করেন তিনি। সময়ের পরিবর্তনে গাড়িটি আজ অচল প্রায়। যাত্রী নিয়ে গন্তব্যের পথ পাড়ি দিতে না পারলেও অচল গাড়িটি ঝড়-বৃষ্টি আর শীতের রাতে মনছুর-মরিয়ম দম্পতির একমাত্র আশ্রয়স্থল। গাড়ির তিনদিক আর উপরের অংশ পলিথিন কাগজ, কাঠ আর জং ধরা টিন দিয়ে ঘেরা। সামনের দিকে ঝুলে আছে সস্তা দামের সামান্য কিছু খেলনা, বিস্কুট আর চানাচুর। প্রথম দেখায় মনে হবে একটি ভ্রাম্যমান দোকান। ভালো করে না দেখলে ভুলই ভাঙবে না। জরাজীর্ণ এই গাড়ির ভিতরে বসবাস করেন মনছুর আলী ও তার প্রতিবন্ধী স্ত্রী মরিয়ম আক্তার।

মনছুর আলীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তার কোনো জায়গা-জমি নেই এমনকি ঘর-বাড়িও নেই। আগে তিন চাকার অটোরিকশার মতো একটি গাড়ি চালাতেন। স্ত্রী মরিয়ম আক্তার মানসিক ভারসাম্যহীন। একা একা থাকতে পারেন না। তাই গাড়ির চালকের আসনের পাশে স্ত্রীকে বসিয়ে যাত্রী পরিবহনের মাধ্যমে আয়-রোজগারের চেষ্টা করেন। মানসিক ভারসাম্যহীন স্ত্রীর কারণে গাড়িতে যাত্রীরা তেমন উঠতে চাইতেন না। পরে রোজগারের আশায় গাড়িতে করে বিস্কুট-চানাচুর নিয়ে পথে পথে ঘুরে ফেরি করে বিক্রি করা শুরু করেন। আর রাত্রি নেমে এলে গৃহহীন মনছুর স্ত্রীসহ পথের ধারে গাড়িতেই রাত কাটান।

জাতীয় পরিচয় পত্র সংক্রান্ত জটিলতার কারণে সরকারি কোনো সহায়তাও পাননি তিনি। একমাত্র সম্বল অচল গাড়িতে দেয়া দোকানটাই। দোকানেও তেমন বেচা-বিক্রি হয় না। প্রতিবন্ধী স্ত্রীর কান্নাকাটি শুনে পথচারীরা সহায়তার হাত বাড়ালে খাবার জোটে। না হলে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটে মনছুর ও তার স্ত্রীর। মানসিক ভারসাম্যহীন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মরিয়ম আক্তারের জাতীয় পরিচয় পত্রটি পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার। তার একটি প্রতিবন্ধী কার্ড আছে। তবে পরিচয়পত্র জটিলতার কারণে তারও প্রতিবন্ধী ভাতা পেতে বিলম্ব হচ্ছে।

মনছুর আলী জানান, সরকার অথবা দেশের দানশীল বিত্তবান ব্যক্তিরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই ও গাড়িটি মেরামতের ব্যবস্থা করে দিলে দু’বেলা দু’মুঠো খেয়ে পরে বাঁচতে পারতাম।

উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা জামাল হোসেন জানান, মনছুর আলীর স্ত্রী যাতে দ্রুত প্রতিবন্ধী ভাতা পায় সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহাঙ্গীর আলম জানান, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ঘর প্রদানের জন্য মনছুর আলীর নাম তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement
বছরে ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলার জলবায়ু অর্থায়নের দাবি বাংলাদেশ অরবিসের সাথে কাজ করতে আগ্রহী : অধ্যাপক ইউনূস ঢাবি সিন্ডিকেটে এখনো বহাল আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা হাসিনা বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করতে দিগন্ত টেলিভিশনসহ অসংখ্য গণমাধ্যম বন্ধ করেছে : ফখরুল শীত শুরু হচ্ছে তবু কমেনি ডেঙ্গুর প্রকোপ ব্যয়বহুল তদন্তেও শনাক্ত হয়নি লাশটি কার ‘রহস্যজনক’ কারণে নেয়া হয়নি ডিএনএ নমুনা নবনির্মিত ওয়ামি কমপ্লেক্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন যুদ্ধবিরতির মার্কিন চেষ্টার মধ্যে লেবাননে ইসরাইলি হামলায় চিকিৎসাকর্মী নিহত অস্বস্তিতে ক্রেতারা : কমিয়ে দিতে হচ্ছে কেনাকাটা গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৪৪ হাজার ছাড়াল আমরা মানুষের সম্মিলিত প্রজ্ঞাকে সম্মান করি

সকল