২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

সৈয়দপুরে ওসির চেষ্টায় ২ শিশু ফিরলো মায়ের কোলে

থানায় মায়ের সাথে মীম ও রাব্বী -

নীলফামারীর সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আবুল হাসনাত খানের প্রচেষ্টায় নানীর বাড়িতে বেড়াতে এসে হারিয়ে যাওয়া দুই অবুঝ শিশু ফিরে পেলো মায়ের কোল। শিশুরা তাদের নাম ও স্কুলের নাম ছাড়া আর কিছুই বলতে না পারলেও হারিয়ে যাওয়ার মাত্র ৩ ঘণ্টার মধ্যেই পরিচয় ও ঠিকানা উদ্ধার করেন ওসি। সে অনুযায়ী খবর পেয়ে শিশুদের মা থানায় আসলে রাত সাড়ে আটটায় তার তুলে দেয়া হয় শিশু দুজনকে।

ওসি আবুল হাসনাত খান জানান, দুপুর ২টার দিকে ৯৯৯-এ কল দিয়ে উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়ন থেকে জানানো হয় যে, ইউনিয়নের পাশারীপাড়া এলাকায় অজ্ঞাত পরিচয় একটি মেয়ে ও একটি ছেলে অবুঝ শিশু পাওয়া গেছে। তারা সম্ভবত পথ ভুলে এখানে এসে পড়েছে। নিজের নাম ছাড়া আর কিছুই বলতে পারছে না।

এ খবর পাওয়ামাত্রই বিষয়টি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো: জুয়েল চৌধুরীকে জানাই এবং দুইজন পুলিশ সদস্যকে চিপস ও চকলেটসহ ঘটনাস্থলে পাঠাই। তারা গিয়ে শিশু দুইজনকে থানায় নিয়ে আসে। মেয়ে শিশুটির নাম মীম, বয়স আনুমানিক ৬ বছর ও ছেলটির নাম রাব্বী, বয়স সাড়ে ৩ বছর। তাদের সাথে আরো ঘনিষ্ট হয়ে জিজ্ঞেসাবাদের এক পর্যায়ে মেয়েটি জানায় সে শালহাটী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে। সে অনুযায়ী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে নিশ্চিত হই উল্লেখিত স্কুলটি নীলফামারী সদর উপজেলার কুন্দপুকুর ইউনিয়নে।

পরে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সাহায্যে শিশুদের পরিবারে খবর দেয়া হলে সন্ধ্যায় তারা থানায় উপস্থিত হয়। এ সময় শিশুরা মাকে পেয়ে আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে উঠে। দৃশ্যটা দেখে অকৃত্রিম তৃপ্তি অনুভব করি।

শিশুদের মা তাহমিনা আক্তার ও বাবা মো: মজনু বলেন, মীম ও রাব্বী তাদের নানীর সাথে কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে সকাল ১১টায় সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের সেপাইগন্জে যাওয়ার জন্য বের হয়। পথে কামারপুকুর বাজারে এসে ভ্যান পরিবর্তন করার সময় বৃদ্ধ নানী সাদেকা তাদেরকে ভ্যানে তুলে দিয়ে শিশুদের জন্য দোকান থেকে বিস্কুট কিনতে যায়। ফিরে এসে দেখেন ভ্যান ছেড়ে চলে গেছে। তখন থেকে তিনি অনেক খোঁজাখুজি করেও কোন হদিস না পেয়ে বাজারের লোকজনকে দিয়ে আমাদের মোবাইলে জানান। তারপর থেকে আমরাও হতাশ হয়ে পড়ি এবং সাধ্যমত খোঁজার চেষ্টা করি। পরে চেয়ারম্যান বিকেলে জানায় আমাদের ছেলে ও মেয়েকে পাওয়া গেছে তারা সৈয়দপুর থানায় পুলিশের হেফাজতে আছে। এখানে এসে জানতে পারলাম ওসি সাহেব আন্তরিকভাবে চেষ্টা করার কারণেই হারানো ছেলে-মেয়েকে ফিরে পেলাম।

খাতামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: জুয়েল চৌধুরী জানান, খবর পেয়ে দ্রুত গিয়ে শিশু দুটিকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে পরিচয় জানার চেষ্টা করি। কিন্তু তারা নিজেদের নাম ছাড়া কিছু বলতে না পারায় তাদের ছবি ফেসবুকে দিয়ে প্রচার করি। কিন্তু তাতেও কোন তথ্য না পেয়ে পুলিশের হেফাজতে দেই। পরে ওসি স্যারের প্রচেষ্টায় শিশুদুজন তাদেরও মায়ের কোলে ফিরে গেছে যেনে খুশি হয়েছি।


আরো সংবাদ



premium cement