২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

প্রেমিকের দেওয়া ফোন ব্যবহার করায় মেয়েকে হত্যা করল মা

প্রেমিকের দেওয়া ফোন ব্যবহার করায় মেয়েকে হত্যা করল মা - প্রতীকী

প্রেমিকের দেওয়া মোবাইল ফোন গোপনে ব্যবহার করা নিয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মেয়েকে হত্যা করেছে তারই আপন মা। রোববার গভীর রাতে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলায় বিনোদনগর ইউনিয়নের বড়মাগুড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মাকে আটক করেছে পুলিশ।

স্কুলছাত্রীর মা মোসা. রহিমা বেগম (৪৩) উপজেলার বিনোদনগর ইউনিয়নের বড়মাগুড়া গ্রামের মো. বুলু মিয়ার স্ত্রী। তাদের মেয়ে মোসা. ফাতেমা (১৩) ওই এলাকার বিনোদনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী ছিলো।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন বলেন, উপজেলার বড়মাগুড়া গ্রামের মো. বুলু মিয়ার স্ত্রী মোসা. রহিমা বেগম গত এক সপ্তাহ আগে একই ইউনিয়নের পাঠানগঞ্জ গ্রামে মেয়ে ফাতেমাকে নিয়ে বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান। সেখান থেকে গত তিন দিন আগে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। গতকাল রোববার সকালে বাড়ির পাশে আমগাছ থেকে আম নামানোর সময় মেয়ে ফাতেমার কোমরে একটি স্মার্টফোন দেখতে পায় মা রহিমা বেগম। পরে মেয়েকে মোবাইলের বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়ে ফাতেমা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি।

চেয়ারম্যান বলেন, ঘটনার পর মা ওই মোবাইল ফোনটি নিয়ে ঘরের শোকেসে তালাবদ্ধ করে পাশে গ্রামের বড় মেয়ের বাড়িতে চলে যান। এরপর বিকেলবেলা মেয়ের বাড়ি থেকে ফিরে শোকেসের তালা ভাঙা দেখে মেয়ে ফাতেমাকে আবারো জিজ্ঞাস করলে সে কোনো প্রত্যুত্তর দেয়নি। এরপর মা ও মেয়ের মাঝে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে মেয়ের গলায় থাকা ওড়না দিয়ে টান দেয় মা। পরে সেখানেই মেয়ে ফাতেমা মারা যায়।

নবাবগঞ্জ থানার ওসি অশোক কুমার চৌহান বলেন, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রাত ১২টার দিকে লাশ উদ্ধার এবং ঘাতক মা রহিমা বেগমকে আটক করে থানায় আনা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজ মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।

ওসি বলেন, রাতেই মেয়ের চাচা মো. আলম হোসেন বাদী হয়ে মা রহিমা বেগমকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মেয়ের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। মা রহিমা বেগমকে দিনাজপুর জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

সহপাঠীরা বলছেন, কয়েকদিন আগে ফাতেমা তার মায়ের সাথে উপজেলার পাঠানগঞ্জ এলাকায় নানীর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। তার নানী বাড়ি এলাকার একটি ছেলে ফাতেমাকে একটি মোবাইল উপহার দেয়। আর সেটিকে কেন্দ্র করেই এ হত্যার ঘটনাটি ঘটিয়েছে তার আপন মা।


আরো সংবাদ



premium cement