সৈয়দপুরে স্বামী-স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা : আটক ৬
- জাকির হোসেন, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
- ২৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১০:৫৩, আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১৪:১৬
নীলফামারীর সৈয়দপুরে বৃদ্ধ স্বামী-স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ রোববার সকালে উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের বালাপাড়ার একটি গবাদী পশুর খামার থেকে গলাকাটা জোড়া লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে আরো একজনকে।
নিহতরা হলেন- পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী মো: নজরুল ইসলাম (৬৫) ও তার স্ত্রী সালমা বেগম (৫৫)। এ ঘটনায় জমির মালিকসহ সন্দেহভাজন ছয়জনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নেয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুর শহরের পুরাতন বাবুপাড়া দারুল উলুম মোড় সংলগ্ন সবুজ সংঘ মাঠ এলাকার মৃত রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে মো: নজরুল ইসলাম চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর বিগত প্রায় পাঁচ বছর আগে উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের বালাপাড়ার হাজী আসলামের একটি জমি ১০ বছরের মেয়াদে লিজ নিয়ে ভেড়ার খামার গড়ে তোলেন।
সম্প্রতি ওই খামারের জায়গাটি ছেড়ে দেয়ার জন্য হাজী আসলাম ক্রমাগত চাপ দিয়ে আসছেন। কিন্তু মেয়াদ উত্তীর্ণ না হওয়ায় এবং খামার লাভজনক হওয়ায় তা এই মুহূর্তে ছেড়ে দেয়া সম্ভব হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন নজরুল ইসলাম।
এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল।
এমতাবস্থায় গত ২০ জানুয়ারি নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সালমা বেগম ওই খামারে যান এবং কয়েকদিন থেকে সেখানেই অবস্থান করছেন। রাতে দুর্বৃত্তরা খামারে ঢুকে নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সালমা বেগমকে হত্যা করে। এ ঘটনা দেখে ফেলায় খামারের দারোয়ান রফিকুল ইসলাম বাধা দেয়ায় তাকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে তারা।
পুলিশ সকালে এলাকার লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে খামারে তিনজনের গুরুতর জখম রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এসময় দারোয়ান রফিকুলকে জীবিত অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাৎক্ষণিক তাকে তারাগঞ্জ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রাথমিক সুরতহাল করার সময় দেখা যায়, নাজমুল হকের পায়ের রগ, গলা, নাক ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা এবং সালমা বেগমের গলা কাটা হয়েছে। রফিকুলের মাথা শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারাত্মক জখম করা হয়েছে।
খবর পেয়ে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জয়নুল বারী ও নীলফামারী জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন, জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম গোলাম কিবরিয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। প্রাথমিক সুরতহাল তদন্ত করে লাশগুলো ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বিভাগীয় কমিশনার জানান, এটি খুবই নৃশংস ঘটনা। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে খামারের জায়গার মালিক হাজী আসলাম, তার ছেলে লেবু, সজল ও এলাকার আব্দুর রশিদ, আব্দুল আজিজসহ কাজের মেয়ে রহিমাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে সৈয়দপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অপরাধীদের সনাক্ত করে খুব দ্রুততম সময়ে এ হত্যাকান্ডের বিচার করা হবে।
নীলফামারী জেলা পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন। বলেছেন, ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি আনা হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা