নজরুলকে ধারণ করে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হবে : আবদুল হাই শিকদার
- সরকার মাজহারুল মান্নান, রংপুর ব্যুরো
- ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:১৫, আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:৩৭
নজরুলকে ধারণ করে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হবে মন্তব্য করে নজরুল গবেষক ও দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার বলেছেন, ‘বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কবি কাজী নজরুল ইসলাম উপেক্ষিত। প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগগুলোতে কমপক্ষে ১০০ নম্বর সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ২০২৪ জুলাই বিপ্লবের পরতে পরতে ছিল নজরুলের উপস্থিতি।’
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সভাকক্ষে বাংলা সাহিত্যে নজরুল শীর্ষক সেমিনারে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কলা অনুষদের ডিন ও বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ডক্টর শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মো: শওকাত আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক আব্দুল লতিফ, রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. ইলিয়াস প্রামানিক প্রামানিক প্রমুখ।
সেমিনারে দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক বলেন, ‘ফোর্ট উইলিয়াম যেভাবে বাংলা ভাষাকে প্রমিতের নামে বিকৃত করেছিলেন। সেটাকে ভেঙেচুরে খান খান করে দিয়ে নজরুল আাবার নতুন ভাষা, নতুন বাক্য বিনির্মাণ করেছিলেন। এটা হচ্ছে নজরুলের ভাষা বিদ্রোহ। সাম্রাজ্যবাদের তল্পি বহনকারী বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে নজরুল প্রথম গণমুখী করেছিলেন। এবং স্বাধীনতার পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন।’
কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িক, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অনিবার্য গ্যারান্টি হলেন নজরুল ইসলাম। অসাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে নজরুলের মতো উচ্চারণ কেউ করতে পারেনি। সে কারণেই যুগে যুগে অধিকার আদায়ের জন্য নিষ্পেষিত মানুষের জন্য নজরুল হয়ে উঠেছেন কালের অনিবার্য চরিত্র। তার প্রমাণ মিলেছে ২০২৪ জুলাই অভ্যুত্থানে। অভ্যুত্থানের প্রতিটি গান প্রতিটি স্লোগান, প্রতিটি কথা, প্রতিটি গ্রাফিতিতে নজরুল জীবন্তভাবে উপস্থিত হয়েছিল। যার ফলশ্রুতিতে ফ্যাসিজমের পতন হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সাহিত্য সংস্কৃতি গান নাটক কবিতা চলচ্চিত্র সাংবাদিকতার প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে মানুষের মানবিক চরিত্র হয়ে উঠেছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। তার অন্য বিষয়ে পিএইচডি গবেষণা হলেও সাংবাদিকতার ক্ষেত্র নিয়ে গবেষণা না হওয়ায় আশ্চর্য প্রকাশ করেন তিনি। গণমুখী সাংবাদিকতা প্রথম উপহার দিয়েছিলেন কবি কাজরুন কাজী নজরুল ইসলাম। তার সাংবাদিকতা নিয়ে গবেষণা করা হলে আধুনিক সাংবাদিকতা আরো সমৃদ্ধ হবে।’
সেমিনার শেষে তিনি রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবু সাঈদ বইমেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।