জামায়াত-বিএনপির সংঘাত নেই : দুদু

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো দিনক্ষণ বেঁধে দেয়নি। না জামায়াত, না বামপন্থী, না দক্ষিণপন্থী, না উত্তরপন্থী। সেহেতু জামায়াত-বিএনপি বিভক্তি করার দরকার নেই। সবাই নির্বাচন চাচ্ছে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে, প্রয়োজনীয় সংস্কার করে। অর্থাৎ সংস্কার আর নির্বাচনের মধ্যে কোনো সংঘাত নেই।’

তিনি বলেছেন, ‘জামায়াত-বিএনপির সংঘাত নেই। একটি ভালো নির্বাচনের জন্য যেটুকু সময় দরকার। এর অতিরিক্ত সময়ে যেন না হয়।’

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় শহরের স্কাইভিউ রেস্টুরেন্টে নীলফামারী জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শামসুজ্জামান দুদু আরো বলেন, ‘এটি একটি সাংগঠনিক সভা। নীলফামারীর বন্ধুদের সাথে মতবিনিময় হচ্ছে। সংগঠনের সার্বিক পরিস্থিতি কী সেটা দেখা, সংগঠনকে তৈরি করা, সংগঠনকে শক্তিশালী করা ও ঐক্যবদ্ধ করা। সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করে সমস্যাগুলোকে সমাধান করা।’

তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম করেছি ১৬-১৭ বছর। গণতন্ত্রের পিপাসার প্রত্যাশায়, স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে ফ্যাসিবাদকে তাড়িয়ে বাংলাদেশে এখন জঞ্জাল মুক্ত হওয়ার পথে আছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা চাইছি যাতে বাংলাদেশে সঠিক, স্বাভাবিক, গ্রহণযোগ্য ও অংশীদারিত্বমূলক একটি নির্বাচন করে। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ, তার পছন্দের দল ও প্রার্থীকে নির্বাচিত করবে এবং এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার তৈরি হবে, যারা দেশ পরিচালনা করবে।’

বিগত সরকারের দুর্নীতি নিয়ে দুদু বলেন, ‘সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে এই দেশে। হাজার হাজার মানুষকে গুম-খুন-নিখোঁজ করা হয়েছে এই দেশে।’

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রত্যাশায় একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। সর্বশেষ চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান। ছাত্র-জনতার রক্ত দিয়ে দেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছে। এখন বাংলাদেশের প্রত্যাশা, মানুষের সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের। কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ একটু স্বস্তির সাথে বসবাস করতে চায়। শ্রমিক তার অধিকার চায়। সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে জীবনযাপন করতে চায়। সেই জায়গায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল তার নেতা তারেক রহমান সংগঠনকে মানুষের প্রত্যাশা পূরণের জন্য পূর্বের মতোই মানুষের পাশে দাঁড় করাতে চায়। সেই লক্ষ্যে আজকের এই সভা। এই সভা থেকেই আমরা আগামী দিনের যে কর্মসূচি সেই কর্মসূচি গ্রহণ করব।’

নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা যে অধিকার মানুষের ছিল না, ভোটের অধিকার। সেই অধিকার যত দ্রুত সম্ভব, আমরা প্রত্যাশা করি ফেরত দিয়ে এ দেশে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। এটি আমাদের সরকারের কাছে চাওয়া। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা যেন মানুষ স্বাভাবিকভাবে জীবনধারণ করতে পারে। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা। এ বিষয়গুলো আমরা আগেও বলেছি এখনো বলছি। ভবিষ্যতে এটা মীমাংসা করা যায় কিভাবে, বিএনপির সে দায়িত্ব গ্রহণ করতে চায় বলে আমরা রাস্তায় নেমেছিলাম। রাস্তার আন্দোলনে যেটি আমাদের নেতা বলেছিলেন যে ফয়সালা হবে কোথায়। এই রাজপথেই ফয়সালা হয়েছে। ভবিষ্যতে আমরা মনে করি গণতন্ত্রের প্রত্যাশা যদি পূরণ না হয় তাহলে সঙ্কট আরো বাড়বে। এই সঙ্কটকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নির্বাচিত একটি সরকার দরকার।’

সাংগঠনিক সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) আব্দুল খালেক, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম।

জেলা বিএনপির সভাপতি আ খ ম আলমগীর সরকারের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলমের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান চৌধুরী।