৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩১, ২৯ রজব ১৪৪৬
`

সৈয়দপুরে আগুনে পুড়লো ১১ ঘর

সৈয়দপুরে ৯ পরিবারের ১১টি ঘর আগুনে পুড়ে গেছে। - ছবি : নয়া দিগন্ত

নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৯ পরিবারের ১১টি ঘর আগুনে পুড়ে গেছে। এ সময় আসবাবপত্র, নগদ টাকা, ধান-চাল, গরু-ছাগলসহ প্রায় ৫০ লাখ টাকার মালামালের ক্ষতি হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা দাবি করেছেন।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বেলা ৩টায় উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের দেড়ানী সুতারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আগুনের সূত্রপাত নিয়ে সঠিক কোনো তথ্য জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে চুলার আগুন বা বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে এই আগুন লেগেছে। তবে এলাকার এছামুদ্দীর ছেলে বাচ্চু মামুদের রান্না ঘরেই প্রথম আগুন দেখা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। পরে আশেপাশের ঘরগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।

এতে বাচ্চু মামুদের ৪টি ঘর, তার ছেলেদের ২টি ঘর, প্রতিবেশী আছদ্দী মামুদের ছেলে হাফিজুলের ২টি ও শরিফুলের ১টি, তছদ্দী মামুদের ছেলে মন্টুর ১টি ঘর এবং আমদ্দী মামুদের ছেলে ছোবেদ আলীর ১টি ঘর সব মালামালসহ পুড়ে গেছে।

এছাড়া এজামুদ্দীর ছেলে তোফাজ্জল ও এন্দা, মন্টুর ছেলে লিটন ও আকুবুল, নান্টুর ছেলে কালা ও লালের ঘরেও আগুন লেগে আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। রংপুর জেলার তারাগঞ্জ উপজেলার ফায়ার সার্ভিস দল এসে দীর্ঘ ১ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে আরো ২০ থেকে ২৫টি ঘর আগুন থেকে রক্ষা পেয়েছে। পরে সৈয়দপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিস দলও এসে ফিরে গেছে।

ক্ষতিগ্রস্থ বাচ্চু মামুদ বলেন, আমি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেলাম। ৪টি ঘরের কিছুই বাঁচাতে পারিনি। একটা গরু ও ৩টি ছাগল মরে গেছে। ধান-চাল, আসবাবপত্র ও টিভি-ফ্রিজসহ সব পুড়ে ছাই হয়েছে। আমার ছেলেদের ঘরগুলোরও একই অবস্থা। প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমার ঘরে নগদ ৩ লাখ টাকা, আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক সামগ্রীসহ ২টা গরু পুড়ে মারা গেছে। প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল সব শেষ। আমার ভাই শরিফুলেরও প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। একইভাবে আরো ৪টি পরিবারের প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লানচু হাসান চৌধুরী বলেন, আগুনের ভয়াবহতা ব্যাপক ছিল তাই মুহূর্তে ৯টি পরিবারের ১১টি ঘর পুড়ে গেছে। এসব পরিবার একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। আমরা প্রাথমিকভাবে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় কম্বল দেয়াসহ শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করেছি।

তারাগঞ্জ উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শরিফ আব্দুল্লাহ বলেন, খবর পাওয়া মাত্রই আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। কিন্তু পথে অসংখ্য স্পিড ব্রেকার থাকায় সময় বেশি লেগেছে। আগুনের সূত্র নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কেউ বলছেন চুলার আগুন, আবার কেউ বলছেন বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। সার্বিক তদন্ত শেষে ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা যাবে।

এ অঞ্চলে কয়েকদিন যাবত ব্যাপক শীত বিরাজ করছে। শীতের প্রকোপের মাঝে এমন অগ্নিকাণ্ডে সর্বস্ব হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রায় ৪০ জন নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। ঘটনার পরপরই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মীর্জা আবু সাইদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কম্বল, চাল, ডাল, চিনি, ভোজ্য তেল, লবন, টোস্ট বিস্কুট বিতরণ করেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement