১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫ মাঘ ১৪৩১, ১৮ রজব ১৪৪৬
`

জাতীয় সরকার গঠন না করলে কোনো রাজনৈতিক সরকার টিকতে পারবে না : নুর

রংপুরে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখছেন নুরুল হক নুর। - ছবি : নয়া দিগন্ত।

আওয়ামী লীগ এবং ফ্যাসিবাদের দোসররা ছাড়া সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন না করলে আগামী দিনে কোনো রাজনৈতিক সরকার টিকতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের আগের মতো রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য ধরে রাখতে না পারলে ফাটল যত দ্রুত ঘটবে ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থানও তত তারাতারি হবে।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা অডিটোরিয়ামে গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন নুর। এ সময় পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান, উচ্চতর সদস্য আবু হানিফ খান সজিবসহ স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

গণঅভ্যুত্থানের আগের মতো রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য ধরে না রাখতে পারলে দ্রুত ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান হবে মন্তব্য করে নুর বলেন, ‘এই গণঅভ্যূত্থানের পরে রাজনৈতিক দলগুলো এখন অল্প সময়ের মধ্যে গণঅভ্যূত্থানের পূর্বে তাদের মধ্যে যে ঐক্য তৈরি হয়েছিল সেই ঐক্যে আমি ফাটল দেখেতে পাচ্ছি। বিভাজন দেখতে পাচ্ছি। এই বিভাজন ও ফাটল যত দ্রুত ঘটবে, ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান তত তারাতারি হবে। সুতরাং রাজনৈতিক দলগুলোকে বলি যার আছে সে দিতে পারে। যে যত বড় তার দায়িথ্ব তত বড়। বিএনপি জামায়াত অন্যান্য সকল রাজনৈতিক দলকে এই ঐক্য ধরে রাখার জন্য আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। আরো আন্তরিক হতে হবে।’

জাতীয় সরকার গঠন না করলে আগামীতে একক রাজনৈতিক সরকার হওয়ার আশঙ্কা উল্লেখ করে নুর বলেন, ‘ আমি মনে করি আগামীর নির্বাচন হওয়া উচিৎ, আগামীর সরকার হওয়া উচিত জাতীয় সরকার। আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট ও ফ্যাসিবাদের দোসররা ছাড়া সবাই মিলে সরকার। কারণ দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো রাজনৈতিক দল যদি এককভাবে সরকার গঠন করে। তাহলে সেই সরকার টিকে থাকতে পারবে না। তার পরিস্থিতি হতে পারে ৭৫ এর মতো। আওয়ামী লীগের জয়জয়কার। আওয়ামী লীগই সব করেছে। দেশ স্বাধীনের পর ৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের এই যে অত্যাচার নির্যাতন, দুঃশাসন, আধিপত্য, শেষ পর্যন্ত শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ডের মতো একটা নির্মম পরিস্থিতি ডেকে এনেছিল। তারপরে বাংলাদেশ সামরিক শাসনের আবর্তনে ঘূর্নায়মান ছিল অনেকদিন ধরে। ’

অভ্যুত্থানের পর জাতীয় সরকার হলে ইউনুস সরকার চাপে পড়তো না দাবি করে নুর বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা আশা করেছিলাম। গণঅভ্যুত্থানের পরে গণঅ্যভ্যুত্থানের অংশিজন বিএনপি-জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, গণপরিষদ, ইনডিভিজ্যুয়াল পর্যায়ে, সাংবাদিক, নাগরিক সবার প্রতিনিধিদের নিয়ে একটা যদি সর্বদলীয় জাতীয় সরকার হতো। তাহলে আজকে ইউনূস সরকার যেই পরিস্থিতি ও চাপ ফেইস করতেছে এটা তাদের ফেইস করা লাগতো না।’

ইউনূস সরকারের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা না থাকায় দ্রুত নির্বাচনের চাপ বাড়ছে দাবি করে নুর বলেন, ‘এখন বিদেশীরা নির্বাচনের জন্য চাপ দিতেছে। দেশের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো এতদিন যেভাবে বলেছিল রাষ্ট্র সংস্কার করে আগামী নির্বাচন। এখন সময় বেঁধে দিচ্ছে ৬ মাসের মধ্যে সংস্কার, জুলাই মাসের মধ্যে নির্বাচন। নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন। কারণ এই সরকারে যারা আছেন তাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নাই। রাষ্ট্র পরিচালনার ওইভাবে অভিজ্ঞতা নাই। ‘’

মতবিনিময় সভায় গণঅধিকার পরিষদ নেতাকর্মী ছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে বিএনপি জামায়াত নেতারাও অংশ নেন।


আরো সংবাদ



premium cement