বিয়ের ১৬ দিনেই লাশ হলেন স্ত্রী, ঘাতক স্বামী আটক
- সৈয়দপুর (নীলফামারী) সংবাদদাতা
- ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:৪৫
নীলফামারীর সৈয়দপুরে বিয়ের মাত্র ১৬ দিনের মাথায় স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন মুক্তা নামের এক বিউটি পার্লারকর্মী (২২)।
রোববার (৫ জানুয়ারি) সকালে সৈয়দপুর শহরের কাজীপাড়া মরহুম কমিশনার আব্দুল লতিফ রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্বামীর বাড়ি থেকে মুক্তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। একইসাথে ঘাতক স্বামী রানাকেও (২৫) আটক করা হয়।
নিহত মুক্তা সৈয়দপুর শহরের কুন্দল পশ্চিম পাড়ার জাহেদা বেগমের মেয়ে। তার স্বামী রানা একই শহরের কাজীপাড়ার বাবলুর ছেলে।
জানা গেছে, সৈয়দপুর প্লাজা সুপার মার্কেটের গ্রিন বিউটি পার্লারের কর্মী মুক্তা পরিবারের মতে রানাকে (২৫) বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই মুক্তার ওপর রানা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। মুক্তা জানতে পারেন রানা ও তার ভাই রনি (২৭) মাদকসেবী। একইসাথে তারা মাদক বিক্রি করেন। এর প্রতিবাদ করায় বিরোধ সৃষ্টি হয় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। অতিরিক্ত নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মুক্তা পাঁচ দিন পরই মায়ের বাড়িতে চলে যান এবং এত দিন সেখানেই ছিলেন।
পরিবারের লোকজন জানায়, গত শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) উভয় পরিবারের সমঝোতায় মুক্তা স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসেন। স্বামীর বাড়ি যেতে রাজি না থাকলেও মা ও নানা জামাল উদ্দিনের অনুরোধে সেখানে ফিরে যান তিনি। ওইদিন ভালোভাবে কাটলেও শনিবার দিবাগত রাতে আবারো নির্যাতন শুরু করেন রানা। এতে মুক্তার শাশুড়ি রুমি বেগম (ঝিলপি) বউমাকে নিজের ঘরে এনে রাখেন। কিন্তু রাত আনুমানিক ৩টার দিকে রানা অনেকটা জোর করেই মুক্তাকে নিজ ঘরে নিয়ে যান।
ঝিলপি বলেন, ‘ভোরের দিকে রানা আমার ঘরের এসে বলে আমি তোমার বউকে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলেছি। আমরা তাৎক্ষণিক ছেলের ঘরে গিয়ে দেখি মুক্তার নিথর দেহ বিছানায় পড়ে আছে। এ অবস্থায় ছেলেকে কৌশলে তার ঘরে পাঠিয়ে দিয়ে বাহির থেকে ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে দেই। পরে পুলিশকে খবর দিলে সকাল ৬টায় পুলিশ এসে সুরতহাল তদন্ত করে লাশ উদ্ধার করে এবং রানাকে আটক করে নিয়ে যায়।’
নিহত মুক্তার মা জাহেদা বেগম বলেন, ‘ওরা আমার মেয়েকে নিয়ে গিয়ে মেরে ফেলেছে। স্বামী হারিয়ে অনেক কষ্টে মেয়েকে মানুষ করেছি আমি। অনেক আশা নিয়ে তাকে বিয়ে দিয়েছিলাম। অথচ মাত্র ১৬ দিনেই তার লাশ মিললো স্বামীর বাড়ি থেকে। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফইম উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং স্বামী রানাকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। মুক্তার বড় ভাই সাইদুল ইসলাম চারজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। আসামিরা হলেন স্বামী রানা, ভাসুর রনী, শাশুড়ি রুমি বেগম (ঝিলপি) ও রানার চাচা।
তিনি আরো জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে শ্বাসরোধ করে মুক্তাকে হত্যা করা হয়েছে। সঠিক কারণ জানতে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে এবং স্বামী রানাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে নেয়া হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা