০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ পৌষ ১৪৩০, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৫
`

এখনো জনপ্রিয়তায় হাজার বছরের পিঠালি মজলিস

- ছবি : নয়া দিগন্ত

এখনো জনপ্রিয়তায় হাজার বছরের গ্রামীণ ঐতিহ্যের পিঠালি মজলিস। আটার ডাইল (পিঠালি) ও ভাত একত্রে গণ খাবারের মজলিস। সুস্বাদু এ খাবার থেকে ভোরের আলো ফোটার আগেই হাজারো মানুষের জমায়েত। যেন কে কার আগে আসে। মজলিস গ্রামীণ চিরচেনা পরিবেশ হাজার বছর থেকে চলে আসছে।

এক সময় কলা গাছের পাতায় সোজা লাইনে হাজারো মানুষ এক সাথে বসে খাবার খেত। আর মজলিসের উপস্থিত সবাই মোনাজাত করতেন আল্লাহর দরকারে। কিন্তু বর্তমানে আধুনিকতার ছোয়ায় ওয়ান টাইম প্লেটে খাবার পরিবেশন করা হয়।

সোমবার সকাল ৭ টার দিকে সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া ইউনিয়নের রাঘরপুর গ্রামে ৮০ বছর বয়সী আব্দুল কাফি ব্যাপরী এ মজলিসের আয়োজন করেন।

তিনি নয়া দিগন্তকে জানান, ‘আসলে আমি কখনো কাউকে মনের মতো করে খাওয়াতে পারিনি। আজ দু’টি গরু জবাই করে চার মণ গোশতের সাথে এক মণ আটা দিয়ে পিঠালি ও আট মণ চালের ভাত রান্না করা হয়, এক শ’ জন লোককে পরিবেশনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিন হাজার লোকের ভাতসহ খাবার পরিবেশনের আয়োজন করেছি।’

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা কাঠ ব্যবসায়ী মতিয়ার রহমান বলেন, ‘বোনারপাড়ার রাঘরপুর গ্রামে আমি আটার ডাইলের পিঠলির মজলিসে এসেছি। পরিবেশ বেশ ভালো। আসলে আমরা এ খাবারটি আনন্দের সাথে খেয়ে থাকি।’

সাঘাটা উপজেলার তেলিয়ার গ্রামের রাব্বী মিয়া জানান, ‘আমি অনেক ছোট থাকতে বাবার হাত ধরে মজলিসে আসতাম। আজ মজলিসে আসার পর ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। সামাজিকভাবে মানুষের বসবাসে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে মসলিস গ্রামীণ ঐতিহ্য বহন করে আসছে।’

কবি ও সাংবাদিক প্রতিক ওমর বলেন, ‘শুনকো খরের ওপরে কলা পাতায় পিঠালি ও ভাত খেতে বেশ ভালো লাগে। মজলিস এখনো গ্রামের মানুষের মধ্যে সুসম্পর্ক ধরে রেখেছে। কবি ও লেখকরা তাদের লেখনীতে মজলিস নিয়ে বিভিন্ন লেখা তুলে ধরে থাকেন।’

কৃষি গবেষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম জানান, ‘১৯৭১ সালের আগেও আমরা মসজিসে খাবার খেতে যেতাম। এখন ২০২৪ সালে আমরা একই পরিবেশে মজলিসে খাবার খেয়ে থাকি। আসলে গ্রামের মানুষ দাওয়া বললে মজলিসের দাওয়াতেই বেশি আনন্দ পেয়ে থাকে।’


আরো সংবাদ



premium cement