০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

‘আবু সাঈদের বুক গুলিতে ঝাঁঝরা ছিল, ৬ বার প্রতিবেদন চেঞ্জ করা হয়’

ফরেনসিক প্রতিবেদন টেম্পারিংয়ের বিষয়ে কথা বলছেন ডা. রাজিবুল ইসলাম - ছবি : নয়া দিগন্ত

শহীদ আবু সাইদ হত্যাকাণ্ডের ফরেনসিক প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী চিকিৎসক রংপুর মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. রাজিবুল ইসলাম বলেছেন, ‘শহীদ আবু সাঈদের বুক গুলিতে ঝাঁঝরা ছিল। আমাকে ঢাকা থেকে হুমকি দেয়া হয়েছে তুমি সরকারি চাকরি করে কিভাবে সরকারের বিপক্ষে এ রিপোর্ট দিতে পারো। আমি রিপোর্ট যখন ফাইনালি দিতে যাই, তার আগে ছয়বার আমাকে রিপোর্ট চেঞ্জ করতে হয়েছিল। তারপরেও ওনাদের মনের মতো হয় নাই।

আজ বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে নব নিযুক্ত অধ্যক্ষ ডা. মাহফুজুর রহমানের অপসারণ ইস্যুতে চলমান বিক্ষোভের সময় ফরেনসিক প্রতিবেদন টেম্পারিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

ডা. রাজিবুল বলেন, ‘ওনারা (ডা. মাহফুজসহ উপস্থিত অন্যান্যরা) চেয়েছিলেন আমি যেন হেড ইনজুরি দিয়ে ইউরেজোনিক শক দেখিয়ে দেই।’ কিন্তু আমি তাদের চাপের কাছে মাথানত করিনি। আমার রিপোর্টে উল্লেখ আছে যে দ্যা ডেড ওয়াজ ডিউ টু এভোব মেনশন ইনজুরিস হুইচ ওয়াজ অ্যান্টিমন্টেম অ্যান্ড হোমিসাইডাল।

তিনি বলেন, ‘ওই সময় ভাইস প্রিন্সিপাল মাহফুজুর রহমান চার্জে ছিলেন, স্বাচিপের নেতারা ছিলেন। আরো পুলিশ প্রশাসনের লোকজন ছিলেন। তাদের সামনে আমাকে বাধ্য হয়েই রিপোর্টে সাইন করতে হয়েছিল।’

তিনি আরো বলেন, ‘সবাই ভাবতেছেন হেড ইনজুরি হেড ইনজুরি। হেড ইনজুরি হলে সাধারণত ব্রেনে রক্তক্ষরণ থাকে। ইন্টারক্রিমিনিয়াল থাকে। স্ক্যামবোল ফ্রাকচার থাকে। সাঈদের ক্ষেত্রে কিন্তু এগুলো কোনোটাই ছিল না। আমি প্রচণ্ড চাপে ছিলাম। ওই সময়টা এমন গেছে আমাকে এটাও ভয় দেখানো হয়েছে আপনার নামে গোয়েন্দা রিপোর্ট হয়ে গেছে ঢাকায়। তারপরেও আমি মাথা নত করিনি।’

এ ব্যাপারে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অধ্যক্ষ ডা. মাহফুজুর রহমান।

আজ বৃহস্পতিবার ( ৩১ অক্টোবর) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘আবু সাঈদ হত্যা মামলার ঘটনায় ফরেনসিক প্রতিবেদন টেম্পারিং করার জন্য তিনি চাপ দেননি বরং সঠিক রিপোর্ট দেয়ার কথা বলেছি। আর প্রশাসনের লোক হিসেবে শুধু প্রশাসনিক সহযোগিতা দেয়ার থাকে। প্রতিবেদন দেয়ার এখতিয়ার সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের।’

তিনি বলেন, ‘এর আগে ডা. রাজিবুলের ফরেনসিক প্রতিবেদন দেয়ার ব্যাপারে কলেজ প্রশাসনের নয়, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর চাপে ছিলেন। কিন্তু এখন তিনি আমাদের কথাও বলছেন।’


আরো সংবাদ



premium cement