২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গিয়ে নিখোঁজ শাহিন ও আসিফের হদিস মেলেনি আজও

- ছবি : নয়া দিগন্ত

সিরাজগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে গিয়ে নিখোঁজ কলেজছাত্র শাহিন ও আসিফের হদিস মেলেনি এখনো। তারা বেঁচে আছেন, নাকি মারা গেছেন, নাকি গুম হয়েছেন জানেন না পরিবারের লোকজন। এই ঘটনায় সিরাজগঞ্জ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে পরিবার।

মর্গে থাকা আগুনে পোড়া দু’টি লাশের দাবিদার চারজন। এই দু’টি লাশ হতে পারে আসিফ ও শাহিনের। এমনটাই ধারণা পরিবারের। ইতোমধ্যে লাশের ডিএনএ টেস্ট করা হয়েছে।

শাহিন শেখ সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার জানপুর ওপর বটতলার মহল্লার মদন সেখের ছেলে। তিনি এবার এসএসসি পাস করেছেন। আর আসিফ হোসেন সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার একডালা পুনর্বাসন এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে। তিনি এবার সিরাজগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী।

আসিফ হোসেনের মামা শাহীন শেখ ও মদন শেখ বলেন, গত ৪ আগস্ট তারা ছাত্রদের সাথে মিছিলে যান। যাওয়ার সময় মাকে বলে আমি মিছিলে যাচ্ছি। দুপুরের পর থেকে আর তাদের খোঁজ পাওয়া যায় নাই। এরপর থেকে তাদেরকে বিভিন্ন স্থানে খুঁজেও পাওয়া যায়নি। এদিকে এক মাস পার হয়ে গেলে তারা বাড়ি ফিরে আসেনি।

শাহীন শেখ আরো বলেন, মিছিলে অংশ নেয়া অনেকে বলে, গত ৪ আগস্ট আন্দোলন চলাকালীন চৌরাস্তা মোড়ে তুমুল সংঘর্ষ চলে। ওই দিন দুপুর ১২টার দিকে শহরের চৌরাস্তায় সংঘর্ষ এলাকায় দেখা যায় শাহিন ও আসিফকে। এরপর থেকে শাহিন ও আসিফ বাড়ি ফেরেনি। আন্দোলন চলাকালে সিরাজগঞ্জ সদরের এমপি জান্নাত আরা হেনরীর বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ওই বাড়িতে আটকা পড়ে থাকতে পারে তারা। পরে জান্নাত আরা হেনরীর বাড়ির বিভিন্ন কক্ষে তাদেরকে খুঁজেছি। তবে গভীর রাতে ওই বাসা থেকে আগুনে পোড়া দু’টি কঙ্কাল পুলিশ উদ্ধার করে বলে জানা যায়। মর্গে আগুনে পোড়া দু’টি লাশ আছে। কিন্তু চেনার উপায় নাই। শরীর পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি।

অন্যদিকে, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে অংশ নেয় শাহিন শেখ (১৬)। এরপর থেকে তাকেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পড়ে থাকা দু’টি লাশের একটি শাহিনের বলে দাবি পরিবারের। ওই লাশের দাবিদার আরো কয়েকজন থাকায় তাদের ডিএনএ পরীক্ষা করাতে পরিবারের সদস্যদের ঢাকায় নিয়ে যায় পুলিশ।

মদন শেখ বলেন, শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে লাশ নিতে চাইলে দুই লাশ আরো চারজন নিজেদের দাবি করে। যে কারণে পুলিশ কাউকে লাশ দেয়নি। গত সোমবার ওই লাশের ডিএনএ টেস্ট হয়েছে। রিপোর্ট এলে লাশ হস্তান্তর করবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

সিরাজগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অফিসার আতাউর রহমান বলেন, গত ৫ আগস্ট ভোরে খবর পেয়ে আমরা সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীর অগ্নিদগ্ধ বাসায় যাই। সেখান থেকে আমরা দু’জনের লাশের পড়ে থাকতে দেখি। তাদের শরীর পুরোটাই আগুনে পুড়ে কালো হয়ে গেছে। লাশ চেনা যাচ্ছিল না। পরে লাশের কঙ্কাল উদ্ধার করে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠাই।

সিরাজগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাকারিয়া বলেন, মর্গে রাখা যে দু’টি লাশ আছে তার দাবিদার চারজন। যে কারণে লাশ কাউকে হস্তান্তর করা হয়নি। ডিএনএ টেস্ট করা হয়েছে। যাদের সাথে রিপোর্ট মিলে যাবে তাদের লাশ হস্তান্তর করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল