২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

রাজশাহীতে প্রতীকী বিষপান কর্মসূচি : অসুস্থ হয়ে ১১ শিক্ষার্থী হাসপাতালে

রাজশাহীতে প্রতীকী বিষপান কর্মসূচি : অসুস্থ হয়ে ১১ শিক্ষার্থী হাসপাতালে - ছবি : নয়া দিগন্ত

রাজশাহীতে সড়কের ওপর ‘প্রতীকী পরীক্ষা’ ও ‘প্রতীকী বিষপান’ কর্মসূচি পালন করেছেন বৈষম্যবিরোধী নার্সিং অনুষদের শিক্ষার্থীরা। এ কর্মসূচি পালনকালে অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন।

পরে চিকিৎসার জন্য তাদের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর চারজন সুস্থ হয়ে ফিরলেও ১১ জন এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে ব্যতিক্রমী এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এতে অংশ নেন রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (রামেবি) অধিভুক্ত রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট সরকারি নার্সিং কলেজ এবং বগুড়া, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন বেসরকারি নার্সিং কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

কর্মসূচিতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, ২০১৯-২০ সেশনের বিএসসি-ইন-নার্সিং কোর্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা শনিবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তারা এরইমধ্যে নানা কারণে নয় মাস পিছিয়ে গেছেন। কবে নাগাদ তাদের পরীক্ষা হবে এর কোনো নিশ্চয়তা তারা পাচ্ছেন না। সংশ্লিষ্টদের গাফিলতির কারণে ২৩টি কলেজের প্রায় তিন হাজার নার্সিং শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ এখন চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছে।

এ দিন বিএসসি চতুর্থ বর্ষের রিসার্চ-ইন-নার্সিংয়ের প্রতীকী পরীক্ষা দেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচি চলাকালে (প্রতীকী) শিক্ষার্থীদের ভেতর থেকেই চারজনকে এক এক করে ভিসি, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও কক্ষ পরিদর্শক (এক্সটারনাল ও ইন্টারনাল) করা হয়। এসময় হঠাৎ পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়। এরপর আন্দোলনকারী সিংহভাগ পরীক্ষার্থীকে ফেল দেখিয়ে ফলাফলও প্রকাশ করা হয়েছে।

পরে হতাশ হয়ে প্রতীকীভাবে বিষপান করেন শিক্ষার্থীরা। এতে অসুস্থ হলে অন্তত ১৫ জনকে রামেক হাসপাতালে নেয়া হয়। এরমধ্যে চারজন সুস্থ হয়ে ফিরলেও তাদের ১১ জন এখনো ভর্তি আছেন। এদের মধ্যে দুজন রাজশাহী নার্সিং কলেজের, একজন উদয়ন নার্সিং কলেজের ও বাকিরা রংপুর এবং লালমনিরহাট নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থী বলে সূত্র জানিয়েছে।

প্রতীকী পরীক্ষা দেয়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এভাবেই ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের ফেল করানো হয়। আন্দোলনে দাবি আদায় হলেও ফলাফলে প্রভাব বিস্তারের শঙ্কায় তারা আতঙ্কিত। অসুস্থ হয়ে অনেককেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ায় আল্টিমেটাম দিয়ে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালানোর ঘোষণা দেন নার্সিং শিক্ষার্থীরা।

এ আন্দোলনের একজন সমন্বয়ক রায়হান আলী বলেন, যে সময়ে পড়ার টেবিলে বই-খাতা নিয়ে থাকার কথা, হাসপাতালে ইন্টার্নশিপে গিয়ে রোগীদের সেবা করার কথা; সেই সময়ে রোদ-বৃষ্টি ও অসংখ্য বাধা মোকাবিলা করে আন্দোলন করতে হচ্ছে। তাদের পীঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এজন্য রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ থেকে এসে দিনের পর দিন রাস্তায় পড়ে আছেন। বেশ কয়েকজন অসুস্থ। দাবি না মানলে মৃত্যু ছাড়া পথ নেই বলেও জানান তিনি।

রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ (ইএমও) ডা. শংকরকে বিশ্বাস গণমাধ্যমকে বলেন, নার্সিং শিক্ষার্থীদের দাবি যুক্তিসংগত। আন্দোলন কর্মসূচি চলাকালে অসুস্থ হওয়ায় অন্তত ১১ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তাদের চিকিৎসা চলছে। তাদের শারীরিক অবস্থা এখন কিছুটা স্থিতিশীল বলে জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement