ফারাক্কার সব গেট খুলে দেয়ায় পদ্মায় পানি বাড়ছে
- রাজশাহী ব্যুরো
- ২৬ আগস্ট ২০২৪, ২১:১২
ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেট খুলে দেয়ায় বাংলাদেশের নদ-নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। পদ্মায় প্রতি তিন ঘণ্টায় ১ সেন্টিমিটার করে বাড়ছে পানি।
সোমবার (২৬ আগস্ট) ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেট খোলার কথা বলা হলেও গত রোববার (২৫ আগস্ট) থেকেই পানি বাড়ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উত্তরাঞ্চলীয় পানিবিজ্ঞান পরিমাপ বিভাগ জানিয়েছে। এদিকে রাজশাহীর বড়কুঠি পয়েন্টে এখন পদ্মার পানি বিপৎসীমার ১ দশমিক ৭৫ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সূত্র বলছে, ভারতের বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বন্যার জেরে সোমবার ফারাক্কা ব্যারেজের সব গেট খুলে দিয়েছে ভারত। এতে একদিনে বাংলাদেশে ঢুকবে ১১ লাখ কিউসেক পানি। বাঁধ খুলে দেয়ায় বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে।
ভারতের ফারাক্কা বাঁধ কর্তৃপক্ষের উদ্ধৃতি দিয়ে সোমবার গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, খুব কম সময়ের মধ্যে পানির চাপ তৈরি হয়েছে। ফলে ১০৯টি পানিকপাটের সব কটি খুলে না দিলে বাঁধের ওপর বড় চাপ তৈরি হচ্ছিল। সে কারণে ফিডার ক্যানেলে ৪০ হাজার কিউসেক ও ডাউন স্ট্রিমে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।
পানিবিজ্ঞান পরিমাপ বিভাগের তথ্যানুযায়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাংখা এলাকা দিয়ে ভারতের গঙ্গা নদী পদ্মা নাম ধারণ করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এই পয়েন্টে সোমবার ভোর ৬টা ও সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা পাওয়া গেছে ২০ দশমিক ৪৮ মিটার। বিকেল ৩টায় তা হয় ২০ দশমিক ৫০ মিটার। পাংশায় পদ্মার পানির বিপৎসীমা ২২ দশমিক ৫ মিটার।
পাংশার ভাটিতে রাজশাহী নগরীর বড়কুটি পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানির বিপৎসীমা ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। সোমবার ভোর ৬টায় এখানে পানির উচ্চতা ১৬ দশমিক ২৭ মিটার। সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা আরো এক সেন্টিমিটার বেশি পাওয়া যায়। বিকেল ৩টায় পানির উচ্চতা পাওয়া যায় ১৬ দশমিক ৩০ মিটার।
বড়কুঠির আরো ভাটিতে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সারদায় পদ্মার পানির বিপৎসীমা ১৬ দশমিক ৯২ মিটার। সোমবার সকাল ৬টায় এখানে পানির উচ্চতা ১৫ দশমিক ৫ মিটার এবং সকাল ৯টা ও বিকেল ৩টায় পানির উচ্চতা পাওয়া গেছে ১৫ দশমিক ৬ মিটার। এখন রাজশাহীর বড়কুঠি পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ১ দশমিক ৭৫ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
উত্তরাঞ্চলীয় পানিবিজ্ঞান পরিমাপ বিভাগের একটি সূত্র জানায়, সাধারণত ১০ দিনের জন্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ১০ দিনের মধ্যে পদ্মাসহ অন্যান্য নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করবে না। তবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না পানি বাড়ার কারণে। রোববার দুপুর থেকেই পানি বাড়ছে। আরো ২-৩ দিন পার হলে বোঝা যাবে প্রকৃত অবস্থা।
ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্প সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতের গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে- বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বিপুল পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ায় এবং ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পের পানির স্তর বাড়ায় সব গেট খুলে দেয়া হয়েছে। যে পরিমাণ পানি আসছে, সেই পরিমাণ পানি ছাড়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই ৭৭.৩৪ ডেঞ্জার লেভেল অতিক্রম করেছে। ফারাক্কা ব্যারেজে পানি ধরে রাখার ক্ষমতা নেই, ফলে পানি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে তারা। পানি না ছাড়া হলে ফারাক্কা ব্যারেজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে ফারাক্কা ব্যারেজ থেকে পানি ছাড়ার কারণে বাংলাদেশ প্লাবিত হচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে এদেশের (বাংলাদেশ) পক্ষ থেকে।