২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
শিবির নেতা হত্যায় মামলা

রাজশাহীতে সাবেক মেয়র লিটনসহ সহস্রাধিক আসামি

রাজশাহীতে সাবেক মেয়র লিটনসহ সহস্রাধিক আসামি - ছবি : নয়া দিগন্ত

আ’লীগ সরকারের পতনের দিন রাজশাহীতে ছাত্রজনতার আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজশাহী মহানগরীর সাংগঠনিক সম্পাদক আলী রায়হানের (২৮) মৃত্যুর ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে।

এতে প্রধান আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সদ্য সাবেক (অপসারিত) সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনকে। মামলার এজাহারে মোট ৫০ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের আরো এক হাজার ২০০ জন নেতাকর্মীকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

সোমবার (১৯ আগস্ট) রাতে নিহত আলী রায়হানের ছোট ভাই রানা ইসলাম (২১) নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলাটি করেন।
বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদ পারভেজ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, তার ভাই জেডু সরকার, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি, যুবলীগের কর্মী জহিরুল হক রুবেল, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রকি কুমার ঘোষ ও শফিকুজ্জামান শফিক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাজীব, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ডা. সিরাজুম মুবীন সবুজ, রাজশাহী কলেজের সভাপতি রাশিক দত্ত, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম জাফর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ-হিল গালিব ও সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার নাম রয়েছে।

এছাড়া রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন আনার, মাহাতাব উদ্দীন, তৌহিদুল হক সুমন, শাহাদত হোসেন শাহু, আবদুল মমিন, সরিফুল ইসলাম বাবু, নিযাম-উল-আযীম ও আরমান আলী, যুবলীগ নেতা নাহিদ আক্তার নাহান, আওয়ামী লীগ নেতা আতিকুর রহমান কালু ও আনোয়ার হোসেন রাজার নাম রয়েছে আসামির তালিকায়।

ওসি মাসুদ পারভেজ জানান, নিহতের ভাই এজাহার নিয়ে এলে সোমবার রাতেই মামলা রেকর্ড করা হয়। মামলা নম্বর ১৫। মামলা তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে। এখন আসামিদের গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

নিহত আলী রায়হান রাজশাহী কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন। জেলার পুঠিয়া উপজেলার মঙ্গলপাড়া গ্রামের মুসলেম আলীর ছেলে আলী রায়হান। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কিছু আগে নগরীর আলুপট্টি এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সাথে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় আ’লীগ-যুবলীগের গুলিতে গুলিবিদ্ধ আলী রায়হান। পরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টায় মারা যান তিনি।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আ’লীগ নেতা খায়রুজ্জামান লিটন ও ডাবলু সরকারের নেতৃত্বে গত ৫ আগস্ট আন্দোলনকারী ছাত্রদের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে শিবির নেতা আলী রায়হানসহ আরো অনেকে গুলিবিব্ধ হন। পরে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টায় মারা যান রায়হান।

পরদিন রাজশাহী কলেজ মাঠে আলী রায়হানের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। পরে শহীদ আলী রায়হানের লাশ গ্রামের বাড়ি জেলার পুঠিয়া উপজেলার মঙ্গলপাড়ায় দাফন করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement