শিক্ষার্থীদের দখলে রাজশাহীর রাজপথ, শোক পালন করেননি কেউ
- রাজশাহী ব্যুরো
- ১৫ আগস্ট ২০২৪, ১৯:৪১
সদ্য বাতিল করে দেয়া জাতীয় শোক দিবসে রাজশাহীর রাজপথ দখলে রেখেছিলেন শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাজারো শিক্ষার্থী এদিন রাজশাহী মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ‘ফ্যাসিবাদের কবর রচনা ও বাংলার ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিজয়ের বিরুদ্ধে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সব ধরনের ষড়যন্ত্র’ রুখে দেয়ার আহ্বানে রাজশাহীতে এই সমাবেশ করা হয়।
তবে বৃহস্পতিবার রাজশাহীর কোথাও জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে, এমন কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কোনো নেতাকর্মীকে এদিন রাজশাহীতে দেখা যায়নি বলে অনেকে জানিয়েছেন। তাছাড়া গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপরই দলটির রাজশাহীর নেতাকর্মীরা আত্মগোপন করেছেন।
এদিকে সদ্য বাতিল করে দেয়া জাতীয় শোক দিবসে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মাঠে নামতে পারে, এমন গুঞ্জন থেকে আগের দিন বৃহস্পতিবারের কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাজশাহী।
সে অনুযায়ী বেলা ১১টা থেকে নগরীর তালাইমারী, রেলগেট ও সিঅ্যান্ডবি মোড়ে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে সবাই নগরীর সাহেববাজার জিরো পয়েন্ট গিয়ে সমাবেশে মিলিত হন। দুপুর পর্যন্ত চলা সমাবেশ থেকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেয়া হয়।
এসময় ‘টুঙ্গিপাড়ার গোলাপি, আর কতকাল জ্বালাবি’, ‘তোমার আমার জান নিতে, খুনি এখন দিল্লিতে’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, খুনি হাসিনার বিচার চাই’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই’, ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘ভারতের দালালরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘হৈ হৈ রৈ রৈ শেখ হাসিনা গেলি কই’, ‘হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই’, ‘খেলা খেলা হবে, রাজপথে খেলা হবে’ এমন সব স্লোগান দিতে থাকেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহীর সমন্বয়ক গোলাম কিবরিয়া মোহাম্মদ মেশকাত চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার, সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি মোহাম্মদ ফাহিম রেজা, মেহেদী সজিব, মেহেদী হাসান মুন্না, মোহাম্মদ মাসুদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলার রাজপথ থেকে ছাত্র-জনতার রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। আর কখনো স্বৈরাচারী শাসনের উত্থান হতে দেয়া যাবে না। বাংলার মাটিতে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের ১৫ আগস্ট পালন করতে দেয়া যাবে না। এখন থেকে জুলাই-আগস্ট মাস হবে ছাত্র-জনতার শোকের মাস।
তারা বলেন, সারা দেশের ছাত্র-জনতা আজ জেগে উঠেছে। ফ্যাসিবাদকে ক্ষমতা থেকে টেনে-হিঁচড়ে নামানোর যে অভিজ্ঞতা আমাদের হয়েছে তা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেব। এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকাসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর যেখানে যেখানে ফ্যাসিবাদ আছে, স্বৈরাচার আছে তাদের আমরা অভিজ্ঞতা শিখিয়ে দেব যে কীভাবে ফ্যাসিবাদের কবর রচনা করতে হয়। সমাবেশ থেকে বক্তারা অতিদ্রুত বিশেষ ট্রাইবুনালের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিও জানান।