রাজশাহীতে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর বিক্ষোভ, হামলা-ভাঙচুর-আগুন
- রাজশাহী ব্যুরো
- ০৩ আগস্ট ২০২৪, ১৯:৫৮
রাজশাহীতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেন। কর্মসূচি চলাকালে রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। এছাড়া ট্রাফিক পুলিশ বক্স ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শনিবার (৩ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। এ সময় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) নগর বিশেষ শাখার (সিটিএসবি) উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। নগরীর শহীদ কামারুজ্জামান চত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘বিতর্কিত’ সমন্বয়ক রাফিন হাসান অর্নবকেও পিটিয়ে আহত করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর তালাইমারী মোড়ে জড়ো হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী বিনোদপুর বাজারে যান তারা। এ সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশের রাস্তায় আরএমপির বিশেষ শাখার (সিটিএসবি) উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলামকে লাঠিসোঁটা দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। এরপর আন্দোলনকারীরা বিনোদপুর থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পুনরায় তালাইমারী মোড়ে যান। এখানে একটি পুলিশ বক্সে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। তালাইমারী থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ভদ্রার দিকে যেতেই নর্দার্ন মোড়ে ছাত্রলীগের একটি ওয়ার্ড কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ভদ্রা মোড় ও রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের মাঝামাঝি স্থানে থাকা আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কার্যালয়েও ভাঙচুর করা হয়।
এরপর হাজার হাজার শিক্ষার্থীর বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্বরে (আগের বিন্দুর মোড়) গিয়ে সমবেত হয়। এসময় সেখানে পুলিশ বক্সে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
একপর্যায়ে কামারুজ্জামান চত্বরে রাস্তার ওপর কাঠের খড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ চলাকালে সেখানে রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাফিন হাসান অর্নবকে ‘বিতর্কিত’ বলে দাবি করে তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়। সম্প্রতি রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের এক কর্মসূচি চলাকালে অর্নব বলেছিলেন যে, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে দুর্বৃত্তরা ঢুকে গেছে। আর শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। অর্নব তাই ওই সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সবাইকে চলে যাওয়ার জন্য মাইকে আহ্বান জানিয়েছিলেন।’
এদিকে কামারুজ্জামান চত্বরে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী অবস্থানকালে গৌরহাঙ্গা রেলগেইট-নিউমার্কেট-সাহেববাজার এবং রাজশাহী-চাঁপাইনবাগঞ্জ-নওগাঁ মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আর এই এলাকা ছেড়ে ফেরত যাওয়ার সময় ভদ্রা এলাকায় থাকা আরো একটি পুলিশ বক্সে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
আরএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) জামিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শককে (এসআই) লাঠিসোঁটা দিয়ে মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুতর আহত করা হয়েছে। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন সড়কে থাকা তিনটি পুলিশ বক্স ও সরকারি দুয়েকটি স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। পরিস্থিতি বুঝে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা