২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বগুড়ায় অসুস্থ্ ব্যবসায়ীও নাশকতা মামলার আসামি

- প্রতীকী ছবি

আমি দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ। পায়ের হাড় এবং নার্ভ সমস্যাজনিত কারণে ঠিক মতো হাঁটা-চলা করতে পারি না। ধীর পায়ে কোনো রকম চলাফেরা করি। দিনের বেশির ভাগ সময় আমার ওষুধের দোকানে কাটাই। রাজনীতির সাথে আমার নূন্যতম যোগাযোগ নেই। নাশকতা মামলায় আমার নাম আসলো কী করে আমি ভাবতেই পারছি না। আমাকে দেখানো হয়েছে বগুড়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের নায়েবে আমির। পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা এই তথ্য কোথায় পেলো? জামায়াতের সাথে আমার নূন্যতম সম্পর্কের প্রমাণ দিতে পারবে পুলিশ?

বগুড়া শহরের খান্দার এলাকার ওষুধ ব্যবসায়ী আরিফুর রহমান নিজেকে নির্দাষ দাবি করে এভাবেই সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনে বগুড়া সদর থানায় দায়ের করা ১৩ মামলার একটিতে তার নাম এসেছে ২৮ নম্বর আসামি হিসেবে। এমন খবর শোনার সাথে সাথে আকাশ ভেঙ্গে মাথায় পড়ার অবস্থা। ওই মামলায় উল্লেখ আছে দলবদ্ধভাবে সরকারি কাজে বাঁধা প্রদান, সরকারি কর্মচারিকে মারধর, বিস্ফোরক দ্রব্য দিয়ে মৃতু ঘটানো এবং জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছেন আসামিরা।

আরিফুর রহমানের পরিচয় উল্লেখ করা হয়েছে বগুড়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের নায়েবে আমির। অথচ খোঁজ নিয়ে দেখা যায় তিনি জামায়াত-বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত নন। নিজে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে নিজের ওষুধের দোকানে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সময় দেন । শারীরীকভাবে তিনি অসুস্থ । দুই পায়ের সমস্যা দীর্ঘ দিনের। ঠিকমত হাঁটাচলা করতে পারেন না। ২০১৮ সালের আগে থেকে তিনি ঢাকার আনোয়ার খান মর্ডাণ মেডিক্যাল কলেজের নিউরো মেডিসিন বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. ফিরোজ আহম্মেদ কোরাইশীর কাছে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জামায়াতে ইসলামী বগুড়া শহর শাখার একাধিক নেতার কাছে আরিফুর রহমান সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, ওই নামের কেউ আমাদের দলের নায়েবে আমির নেই। উল্লেখিত ওয়ার্ডে ওই নামে কোনো কর্মীও নেই। তাকে কেন কী কারণে ওয়ার্ড জামায়াতের নায়েবে আমির উল্লেখ করা হয়েছে সেই ব্যাখ্যা পুলিশ দিতে পারবে। তবে এ বিষয়ে পুলিশের কেউ কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

অসুস্থ্ আরিফুর রহমান বলেন, কেউ শত্রুতা করে আমার নাম পুলিশের কাছে দিয়েছে। আর পুলিশ যাচাই-বাছাই না করেই মামলায় আমার নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে। পুলিশের এমন গাফিলতির কারণে আমি এখন হয়রানির শিকার হচ্ছি। গ্রেফতার আতঙ্কে আমি এখন বাড়ি ছাড়া। স্ত্রী-সন্তানরাও চিন্তিত। তার মতো বহু নিরাপরাধ মানুষ নতুন নতুন মামলায় আসামি হয়ে ঘর-বাড়ি ছেড়েছেন। অমানবিক হয়রানির শিকার হয়ে গা ঢাকা দিয়ে আছেন জেলার বহু মানুষ। যারা বিরোধী রাজনীতির সাথে জড়িত আছেন, দলীয় মিছিল মিটিংয়ে অংশ নিয়ে থাকেন তাদের অবস্থা আরো খারাপ। পুলিশের অভিযান নিয়মিত তাদের বাড়িতে হচ্ছে। পরিবারে স্ত্রী সন্তানরাও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।

ইতোমধ্যেই বগুড়ায় ১৩ মামলায় আসামি করা হয়েছে সহস্রাধিক।

রোববার পর্যন্ত (২৮ জুলাই) গ্রেফতার করা হয়েছে দেড় শতাধিক।


আরো সংবাদ



premium cement