২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

‘যারা এই সময়ে মানুষের অধিকার হরণের পক্ষে দাঁড়িয়েছে, তারা প্রত্যেকে এই যুগের রাজাকার’

- ছবি : নয়া দিগন্ত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, সুবিচারের পক্ষে যারা দাড়ানোর সাহস রাখেন, তারা প্রতেকেই এই সময়ের মুক্তিযোদ্ধা। ৭১-এ গিয়ে আর মুক্তিযুদ্ধ করার সুযোগ নেই। তাই এই সময়ে মানুষের অধিকার আদায়ে যারা দাঁড়িয়েছে তারা মুক্তিযোদ্ধা। আর এই সময়ে মানুষের অধিকার হরণের পক্ষে যারা দাঁড়িয়েছে, তারা প্রত্যেকে এই যুগের রাজাকার।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশ এবং দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলমান হামলা ও সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। নিপিড়ন বিরোধী ছাত্র-শিক্ষক ঐক্যের ব্যানারে এই মানববন্ধন করা হয়।

তিনি আরো বলেন, আমি সারাজীবন লেখাপড়া ও গবেষণা নিয়ে থাকতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাকে এখানে এসে দাঁড়াতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের উপেক্ষা করে এই রাষ্ট্র চলবে না। শিক্ষার্থীরা সেটি বুঝিয়ে দিয়েছে। আমাদের রাজনীতি সচেতন হওয়া দরকার।

এ সময় মানববন্ধনে রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সমন্বয়ক আব্দুল মজিত অন্তরের সঞ্চালনায় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা ও শিক্ষকরা যখনই তাদের অধিকারের বিরুদ্ধে কথা বলে তখনই তাদেরকে রাজাকার বলা হয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে দূরে সরানোর জন্য পরিকল্পিতভাবে প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের সন্ত্রাসীলীগ দ্বারা শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতনের নমুনা রংপুরের আবু সাইদ থেকে আমরা স্পষ্ট দেখতে পাই।

আরবি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইফতেখার আলম মাসুদ বলেন, এই ফ্যাসীবাদি সরকার শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি থেকে দূরে সরানোর জন্য ইউজিসিকে ব্যাবহার করেছে। তাদের পেটুয়াবাহিনী দ্বারা শিক্ষার্থীদের উপর অন্যায়ভাবে নির্যাতন করেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের বুকের উপর তারা গুলি চালিয়েছে। এমনকি দলের সাধারণ সম্পাদক তার বক্তব্যে স্পষ্ট বলেছেন, শিক্ষার্থীদের দমিয়ে রাখতে আমার সন্ত্রাসীলীগই যথেষ্ট। সন্ত্রাসীলীগের এমন কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক আন্দোলনের সাথে আমরা নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষক সমাজ সব সময় পাশে থাকব। সরকারকে অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক আন্দোলন মেনে নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

নাগরিক ছাত্র ঐক্যের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পুলিশ দিয়ে হামলা করে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। এই যে ছত্রভঙ্গের যে নমুনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে দাশ হয়ে গেছে তার নমুনা। আমরা দেখছি তারা এই দাশ প্রথা থেকে বের হতে পারবে না। কারন তারা একটি দলের তাবিদার করে যাচ্ছে। যখন কৃতদাস হয়ে যায় একজন মানুষ সে কখনো ন্যায়ের পক্ষে কথা বলতে পারে না, বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে না, শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কথা বলতে পারে না। তাই আজকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের জন্য এই শিক্ষার্থীদের কেই লড়াই করতে হবে।

মানববন্ধন প্রায় দুই শতাবধি শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement