আত্রাইয়ে ফল প্রত্যাখান করে ফের নির্বাচনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
- কাজী আনিছুর রহমান, রাণীনগর (নওগাঁ)
- ০৮ জুন ২০২৪, ১৯:৩৪
নওগাঁর আত্রাইয়ে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয় ধাপে গত ২৯ মে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ফল প্রত্যাখান করে ফের নির্বাচনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পরাজীত প্রার্থীরা।
শনিবার (৮ জুন) দুপুরে আত্রাই উপজেলা সদরের আহসানগঞ্জ স্কুল মার্কেটে আক্কাছ আলীর নিজস্ব অফিসে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পরাজীত প্রার্থীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন চেয়ারম্যান প্রার্থী ও আত্রাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্কাছ আলী প্রামানিক।
সম্মেলনে কালো টাকা ছড়িয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে জয়লাভ করার অভিযোগ তোলা হয়েছে নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবাদুর রহমান প্রামানিকের বিরুদ্ধে।
লিখিত বক্তব্যে মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী আক্কাছ আলী প্রামানিক অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, চেয়ারম্যান এবাদুর রহমান প্রামানিক একজন বাক প্রতিবন্ধী। তার মুখের ভাষা কেউ বুঝতে না পারায় জনসাধারণের মাঝে চরম ভোগান্তি বিরাজ করছে।
নির্বাচনে ব্যাপক অবৈধ কালো টাকা ছড়িয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে প্রশ্ন বিদ্ধ করেছেন। তিনি নির্বাচন চলাকালে আচরণ বিধি ভঙ্গ করে মসজিদ, মন্দির, ঈদগাহ, মাদরাসা ও গোরস্থানসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনে ইট ও লাখ লাখ কালো টাকা প্রদানের মাধ্যমে ধর্মভীরু ভোটারদের প্রভাবিত করে নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। তার টাকায় একটি ঈদগাহ মাঠে মাটি ভরাট করার সময় নির্বাচনী দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের জানালে তাৎক্ষণিক মাটি ভরাট কাজ বন্ধ করে দেন। এছাড়া অন্য বিষয়ে অভিযোগ করলেও সংশ্লিষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আজিজুর রহমান পলাশ (জোড়া ফুল প্রতিক), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী আলমগীর হোসেন বাবর (আনারস প্রতিক), উপজেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সভাপতি প্রার্থী মমতাজ বেগম (কাপ-পিরিচ প্রতিক) এবং প্রার্থী সন কুমার প্রামানিক (ঘোড়া প্রতিক)।
এছাড়া অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও নওগাঁ জেলা পরিষদ সদস্য চৌধুরী গোলাম মোস্তফা বাদল এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফছার আলী প্রামানিকসহ প্রমুখ।
চেয়ারম্যান এবাদুর রহমান এবাদের অবৈধ কালো টাকা ছাড়া আর কোনো যোগ্যতা নেই জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আক্কাছ আলী প্রামানিক আরো অভিযোগ করে বলেন, গত ১৫ বছর আগে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার আগে তার ব্যক্তিগত যে সম্পদ ছিল বর্তমানে তা কয়েক শ’ গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। সিমাহীন দুর্নীতি, অনিয়ম ও সেচ্ছাচারিতায় এবাদুর রহমান এবাদ ও তার পরিবার এই সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। এই অর্জিত অবৈধ কালো টাকার জোরে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনী আইন উপেক্ষা করে সাধারণ নীরিহ ভোটারদের চরিত্র হরণের মধ্য দিয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। উপজেলায় যোগ্য প্রার্থী থাকলেও তার কালো টাকার কারণে জযলাভ করতে পারে না। তাই অনুষ্ঠিত নির্বাচনী ফলাফল প্রত্যাখান করে ফের নির্বাচনের দাবি জানান। এছাড়া ফলাফল বাতিল করে ফের নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষে উচ্চ আদালত ও নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছেন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পরাজীত প্রার্থীরা।
এ ব্যাপারে নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবাদুর রহমান প্রামানিকের পক্ষে তার ভাতিজা মনিরুজ্জামান রনি বলেন, সংবাদ সম্মেলনে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পন্ন মিথ্যে এবং বানোয়াট। নির্বাচনে তারা পরাজীত হয়ে এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছেন।
উল্লেখ্য,গত ২৯ মে আত্রাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আটজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে এবাদুর রহমান প্রামানিক কৈ মাছ প্রতিকে ২১ হাজার ৪৮৬ ভোট পেয়ে চতুর্থ বারের মতো উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা