২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

সনাতন ধর্মের শিক্ষার্থীকে শিবির আখ্যা দিয়ে হত্যার হুমকি রাবি ছাত্রলীগ নেতার

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা হলেন আতিকুর রহমান - ছবি : নয়া দিগন্ত

মধ্যরাতে হলের ছাদে ডেকে নিয়ে বেধড়ক মারধর ও শিবির আখ্যা দিয়ে এক সনাতন ধর্মের শিক্ষার্থীকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হল প্রশাসন ও প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলের ছাদে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হলেন সবুজ বিশ্বাস। বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ৩১৬ নম্বর কক্ষে দলীয় প্রভাবে অবস্থান করছিলেন।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা হলেন আতিকুর রহমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের সহ-সভাপতি। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগীর অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, গত ১৬ মে (বৃহস্পতিবার) আনুমানিক রাত ২টায় সোহরাওয়ার্দী হলের সহ-সভাপতি মো: আতিকুর রহমানসহ তার ৮-১০ জন অনুসারী ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে রুম থেকে হলের ছাদে নিয়ে যায়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বেধড়ক মারধর শুরু করে এবং শিবির আখ্যা দিয়ে হত্যার হুমকি প্রদান করেন তাকে। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী নিজেকে সনাতনী দাবি করলে আরো বেশি মারধর করা হয় তাকে। প্রাণ রক্ষার্থে দৌড়ে পালান সবুজ বিশ্বাস।

অভিযোগপত্র থেকে আরো জানা যায়, মো: আতিকুর রহমান ও তার অনুসারীরা ভুক্তভোগীর কক্ষ থেকে পানির ফিল্টার, ক্রিকেট ব্যাট, হেডফোনসহ আরো বেশ কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। এমতাবস্থায় নিজের নিরাপত্তা শঙ্কায় পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে আতঙ্কিত এই শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার চেয়ে হল প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন ওই শিক্ষার্থী।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমি সবুজ নামের কোনো শিক্ষার্থীকে চিনি না। আমার রুমে কিছুদিন আগে লুটপাট চালায় এই হলের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদের অনুসারীরা। এ বিষয়ে আমি হল প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এ বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে মিথ্যার নাটক সাজিয়েছে তারা। আমি এ বিষয়ে আইনের আশ্রয় নিব এবং প্রয়োজন অনুসারে থানায় মামলা করব।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী হলে যে ঘটনা ঘটেছে, সেটি জানার সাথে সাথে আমি উভয়পক্ষের সাথে কথা বলি। লিখিত অভিযোগ পুরোপুরি সত্য নয়। সবুজ ওই হলের আবাসিক কোনো শিক্ষার্থী নয়। আবাসিকতা ছাড়া হলে থাকার কোনো প্রশ্নই আসে না। ওই ঘটনা দুই পক্ষের সাথে কথা বলে তা সমাধান করে দেয়া হয়েছে।’

সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো: জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘সবুজ নামের ওই শিক্ষার্থী এই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী না। এতোদিন সে দলীয় পরিচয়ে এ হলে অবস্থা করছিল। গতকাল তাকে শিবির বলে মারধর করেছে এমন একটি লিখিত অভিযোগ আমাদের কাছে জমা দিয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করে দেখব এবং সত্যতা যাচাই করে আমরা সিদ্ধান্ত নিব।’


আরো সংবাদ



premium cement