অভাবের সংসারেও মেধাবী মীম-মুন পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চান
- নাটোর প্রতিনিধি
- ১৪ মে ২০২৪, ১১:২২, আপডেট: ১৪ মে ২০২৪, ১১:২৪
রোকসানা আক্তার মীম ও মোহনা আক্তার মুন, এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। পরিবারের অভাব অনটনের কথা চিন্তা করে ভালো রেজাল্ট করেও কিশোরী মনে নেই কোনো আনন্দ।
নাটোর সদরের ছাতনী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী মুনের বাবা জহুরুল ইসলাম দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র থাকায় সে তার মায়ের সাথে বসবাস করে স্থানীয় পন্ডিত গ্রাম বটতলা মোড়ের মামা আব্দুল আজিজ খলিফার বাড়িতে।
মামার বাড়ির এক কোনায় পুরাতন ভাঙা টিন জোরাতালি দিয়ে কোনো মতে গড়ে তোলা ছোট্ট একটি ঘরে মা মর্জিন খাতুনের সাথেই তার বসবাস। সেই ঘরে ভাঙা একটি চৌকি ও পড়ার টেবিল ছাড়া নেই আর কোনো আসবাবপত্র। মা নিজে কাজ করে মেয়ের লেখাপড়ার যতটা সম্ভব খরচ যোগান দেন। মুন নিজে প্রাইভেট পড়িয়ে কিছুটা টাকা যোগার করেন আর বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সহযোগিতায় এতদূর পড়েছেন। এখন কিভাবে পড়ালেখা চালাবেন তা নিয়ে ভীষণ চিন্তিত তার মা ও মামা!
মুনের ভবিষ্যতে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন আদৌ স্বপ্নই থেকে যাবে কি না সেই ভাবনায় দিন কাটছে তাদের।
অপরদিকে সদরের আগদিঘা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী রোকসানা আক্তার মীমের বাবা আব্দুল কুদ্দুস গাজী দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত। তিনি কোনো কাজকর্ম করতে পারেন না। তিন বোনের মধ্যে মীম বড়।
মা মাজরিনা বেগম বিভিন্ন কাজ করে মেয়ের পড়াশোনা চালালেও এখন আর পারছেন না। তাই টাকার অভাবে মেধাবী মীমকে তার মা-বাবা বিয়ে দিয়ে দিতে চান। কিন্তু মীম চান, পড়াশোনা চালিয়ে যেতে। বড় হয়ে ডাক্তার হয়ে তাদের মতো গরিব অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে।
মীম বলেন, নিজে এলাকার বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়িয়ে সেই টাকা দিয়ে বই খাতা কলম কিনেছি। ইচ্ছে থাকলেও কখনো ভালো পোশাক পড়িনি। মা তো ঠিকমতো খাবারই যোগার করতে পারেন না। এখন বাইরে পাঠিয়ে উচ্চ শিক্ষা দেয়ার সাধ্য তার পরিবারের নেই।
মুন ও মীম তাদের শিক্ষাজীবন অব্যহত রাখতে চান। তাই সমাজের কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই দুই শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ালেই তাদের শিক্ষাজীবন অব্যহত থাকতে পারে। নইলে অকালেই ঝরে পড়তে পারে দু’টি অদ্যম মেধাবীমুখ।