এনায়েতপুরের রাজার হাতে বাদশাহীর স্বাদ
- এ এস সফিক, এনায়েতপুর (সিরাজগঞ্জ)
- ১৪ মে ২০২৪, ০৯:৫৮
দেখতে এক রকম ঝুপড়ি ঘরের মতো। যেখানে কড়াইয়ে কসানো হচ্ছে গরুর গোশত। অন্যদিকে, প্রস্তুত হচ্ছে চিংড়ি ভাজা ও মুরগির গোশত এবং যমুনা নদীর টাটকা মাছ। সব মিলিয়ে যেন এক মহাভোজের আয়োজন। মাটির চুলায় দাউদাউ আগুনে রান্না হয় খেতে আসা মানুষদের সামনে। এরপর খাবারগুলো সাজিয়ে রাখা হয় বড় বড় থালায়।
লোভনীয় এসব খাবারের স্বাদ নিতে আপনাকে আসতে হবে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরের নৌকার ঘাটের রাজার হোটেলে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এক পাশে যমুনা নদীর টাটকা মাছ কেটে প্রস্তুত করা হচ্ছে। আরেক পাশে চলছে মসলা বাটার কাজ।
প্রতিদিন স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয় দেশী জাতের মুরগি এবং দেশীয় গরুর টাটকা গোশত কিনে এনে রান্না করা হয় রাজার হোটেলে। এখানে রান্না করা চিংড়ি ভুনা, গরুর গোশত ও নদীর মাছের সুনাম সবার মুখে মুখে।
নদীর ঘাটের রাজার হোটেলে মৎস্য আইটেমের মধ্যে থাকে চিংড়ি, বোয়াল, আইর, বাইম, পিয়ালী, বাইলা, ইলিশ, বাচা, বাঁশপাতা, রুই, কাতলসহ নানান প্রকার নদীর মাছ।
জানা গেছে, প্রতিদিন এখানে ৫০০ থেকে ৭০০ লোকের দুপুরের খাবার তৈরি হয়। ১৩ জন কর্মচারীদের পরিশ্রম ও যত্নে এ হোটেলের খাবার যেন মায়ের হাতের স্বাদ নিয়ে ডাকতে থাকে। এর আগে অন্যের দোকানে কাজ শিখে ১৭ বছর ধরে চালাচ্ছেন নিজের পেশা। শুরুতে এখানে খেতে আসতো ঘাটে আসা মানুষেরা। এরপর টাটকা খাবার এবং নদীর মাছের খ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে একবেলা খেতে আসেন ভোজনরসিকরা।
মানিকগঞ্জ থেকে খাবার খেতে আসা রবিউল ইসলাম নামে এক কলেজছাত্র বলেন, ‘রাজার হোটেলের সুনাম শুনে খাবার খেতে আসছি। খাবারের স্বাদ অতুলনীয়। এখানে নদীর মাছের আইটেমগুলো ভালো লেগেছে।’
নাটোর থেকে আসা মোকছেদ দম্পতি বলেন, ‘আমরা রাজার হোটেলে খাবারের স্বাদ নিতে এসেছি। গরুর গোশত অসাধারণ লেগেছে।’
রাজা হোটেলের মালিক রাজা মিয়া নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘দেশীয় গরুর গোশত, দেশীয় জাতের মুরগি, বোয়াল, আইর, বাচামাছসহ প্রায় সকল প্রকার মাছ রান্না করি। আমরা ভোজনরসিকদের সব সময় টাটকা খাবার দেই। আমাদের এখানে বাসি খাবার দেয়া হয় না।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিদিন দুই মণ চালের ভাত, এক মণ গরুর গোশত, ২০ হাজার টাকার মাছ অনায়সে বিক্রি হয়।’
প্রতিদিন গড়ে ৬০ হাজার টাকার খাবার বিক্রি হয় এখানে বলেও জানান তিনি।