‘এখন আমি কী নিয়ে বাঁচব’
- বড়াইগ্রাম (নাটোর) সংবাদদাতা
- ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:০৮
‘দুই বছর আগে মাদরাসাশিক্ষক স্বামীকে হারিয়েছি। একমাত্র ছেলেকে বুকে নিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছিলাম। কিন্তু একটা দুর্ঘটনায় আল্লাহ আমার অন্ধের যষ্ঠি সন্তানটিকেও কেড়ে নিলেন। এখন আমি কী নিয়ে বাঁচব, ফাঁকা বাড়িতে কিভাবে বাঁচব আমি।’ দু’চোখের অশ্রু মুছতে মুছতে কথাগুলো বলছিলেন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মাদরাসাছাত্র খায়রুল বাশার সাগিরের মা।
তিনি নাটোরের বড়াইগ্রামের গোপালপুর গ্রামের মরহুম মাওলানা ইউনুস আলীর স্ত্রী।
জানা যায়, গত ১২ এপ্রিল শুক্রবার উপজেলার ধামানিয়াপাড়া গ্রামের এনজিও কর্মী সাইদুল ইসলামের সাথে গোপালপুর গ্রামের আব্দুল খালেকের মেয়ে খায়রুন্নাহার আফরিনের বিয়ে হয়।
১৫ তারিখ সোমবার সাইদুলের বাড়িতে বৌভাতের অনুষ্ঠান ছিল। সে অনুষ্ঠান শেষে দুলাভাইয়ের মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়িতে ফিরছিল মাওলানা আব্দুল খালেকের ছেলে আকিব হাসান, মরহুম মাওলানা ইউনুস আলীর ছেলে খায়রুল বাশার সাগির ও মাওলানা রুহুল আমিনের ছেলে জাওহার আমিন লাদেন।
তারা সম্পর্কে পরস্পর মামাতো-ফুফাতো ভাই। পথে বড়াইগ্রাম কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে মোটরসাইকেলের ধাক্কা লেগে তিনজনই গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে স্বজনরা তাদেরকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিনই আকিব হাসান (১৫) এবং গত শনিবার খায়রুল বাশার সাগির মারা যান। সবশেষে বুধবার রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ এ জাওহার আমিন লাদেন মারা যান।
নিহত আকিব বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির, সাগির রাজশাহী মারকাজুল ইসলামিয়া সালাফিয়া মাদরাসার আলিম প্রথম বর্ষে এবং জাওহার বড়াইগ্রাম সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল। একই গ্রামের তিনজন মেধাবী শিক্ষার্থীকে এক সাথে হারিয়ে গোটা গ্রাম যেন বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।
নববিবাহিতা খায়রুন্নাহার আফরিন বলেন, বিয়ের পর হাসি-আনন্দে সংসার জীবন শুরু করার স্বপ্ন দেখছিলাম। কিন্তু একটা দুর্ঘটনায় আমার আদরের ছোট ভাইসহ তিনজন মানুষ হারিয়ে গেলো। সংসার জীবনের শুরুতেই এতো বড় আঘাত পাব, এভাবে ভাইসহ স্বজনদের হারাব তা কল্পনাও করিনি। তাদের এমন বিদায় কিছুতেই মানতে পারছি না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা