মিষ্টি পানের জিআই নিবন্ধন চেয়ে আবেদন করেছে রাজশাহী
- রাজশাহী ব্যুরো
- ৩১ আগস্ট ২০২৩, ১৯:২৪
রাজশাহীর কৃষকের অন্যতম অর্থকরী ফসল মিষ্টি পানের জিআই নিবন্ধন চেয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদফতরে (ডিপিডিটি) আবেদন করেছে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়।
বুধবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে জিআই আবেদনের সব প্রক্রিয়ার সম্পন্ন করেছেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, মিষ্টি পান রাজশাহীর ঐতিহ্য। জিআই এর গুরুত্ব অনুধাবন করে আবেদনের উদ্যোগ নিয়েছি। যেমনটা নাটোরের কাঁচাগোল্লা করেছি।
তিনি আরো বলেন, রাজশাহীবাসীর কাছে সারা জীবনের একটা বিষয় থাকবে যে, পানের স্বত্ব হলো। যখন জিআই পণ্যের স্বীকৃতি মিলবে তখন মিষ্টি পানের চাহিদাও বাড়বে। আমাদের যারা প্রান্তিক কৃষক আছে তারা পানের দাম পাবে। অন্য পানের চেয়ে আমাদের পানের চাহিদা দেশসহ সারা বিশ্বে বাড়বে। এর ফলে আমাদের প্রান্তিক কৃষকের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে এবং বিশ্ব দরবারে রাজশাহীর পরিচিতি ও সুনাম বাড়বে। রাজশাহীর ঐতিহ্য এই মিষ্টি পানের ডকুমেন্টেশনসহ আবেদন প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করায় তিনি ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টারকে (ইডিসি) ধন্যবাদ দেন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কল্যাণ চৌধুরী, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর শামসুল ইসলাম, ই-কমার্স ডেভেলপমন্টে সেন্টার (ইডিসি) সদস্য প্রতাপ পলাশ প্রমুখ।
পান হলো রাজশাহীর অন্যতম অর্থকরী ফসল। এই জেলার মাটি ও জলবায়ুর কারণে প্রচাীন আমল থেকে মিষ্টি পানের উৎপাদন হয়ে আসছে। পান চাষে কৃষকরা জড়িয়ে আছে বংশ পরম্পরায়। জেলার মোহনপুর, বাগমারা, দুর্গাপুর উপজেলায় রয়েছে অসংখ্য শতবর্ষী পানের বরজ। পান চাষে ভাগ্য বদলেছে হাজার হাজার কৃষকের। লাখো মানুষের জীবীকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন রাজশাহীর মিষ্টি পান। পানের কারণে রাজশাহীতে বেড়েছে সরিষা আবাদ, বাঁশ, নালিয়াসহ বিভিন্ন সহযোগী পণ্যের চাহিদা। এর ফলে নানাভাবে রাজশাহীর অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছে মিষ্টি পান।
জেলা কৃষি সম্পসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪ হাজার ৪৯৬ হেক্টর জমিতে মিষ্টি পানের আবাদ হয়েছে। এর ফলন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৬ হাজার ৬৭৮ টন। এর আগে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ নাটোর জেলার দায়িত্বে থাকাকালে নাটোরের কাঁচা গোল্লার জিআই নিবন্ধন চেয়ে আবেদেন করেছিলেন। যা দেশের ১৭তম জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
এদিকে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের একটি সূত্র জানিয়েছে, রাজশাহীতে বছরে দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার পান বেচাকেনা হয়। যা রাজশাহীর গ্রামীণ অর্থনীতিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অনেক সময় সঠিক পরামর্শ না পেয়ে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নতুন নতুন রোগের প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। একারণে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে গত আড়াই মাস আগে রাজশাহীতে ‘পান গবেষণাকেন্দ্র’ তরির প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে একটি দল মোহনপুরের মৌগাছি এলাকাকে পছন্দ করে গেছেন। এখন পর্যন্ত ইতিবাচক সাড়া মিলেছে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, দ্রুতই পান গবেষণাকেন্দ্র স্থাপিত হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা