শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের পর হত্যা, দায় স্বীকার ৪ জনের
- বগুড়া অফিস
- ২৬ ডিসেম্বর ২০২০, ২০:০২
বগুড়ার ধুনটে আট বছরের শিশু তাবাসসুমকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা অপরাধের কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে বগুড়া পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার নশরতপুর গ্রামের তোজাম্মেল হকের ছেলে কলেজছাত্র বাপ্পি আহম্মেদ (২২), দলিল উদ্দিন তালুকদারের ছেলে মুদি দোকানদার কামাল পাশা (৩৫), সানোয়ার হোসেনের ছেলে রাজমিস্ত্রি শামীম রেজা (২২) ও মৃত সাহেব আলীর ছেলে রং মিস্ত্রি লাবলু শেখ (২১)।
শনিবার পুলিশ সুপার তার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গ্রেফতার বাপ্পির পরিবারের সাথে শিশু তাবাসসুমের পরিবারের দ্বন্দ্ব ছিল। ঘটনার তিন মাস আগে বাপ্পি শিশু তাবাসসুমকে হত্যা করে প্রতিশোধ নেয়ার পরিকল্পনা করেন। ঘটনার দিন ১৪ নভেম্বর বাপ্পিসহ গ্রেফতারকৃতরা তাবাসসুমকে ধর্ষণ করে হত্যার পরিকল্পনা করে। ওই দিন তাবাসসুম দাদা-দাদি ও দুই ফুফুর সাথে নসরতপুর গ্রামের ওয়াজ মাহফিলে যায়। ওয়াজ মাহফিল চলাকালে তাবাসসুম শিশুদের সাথে পাশের দোকানে বেলুন কিনতে যায়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী বাপ্পি রাত ৯টায় বাদাম কিনে দেয়ার লোভ দেখিয়ে তাবাসসুমকে ফুসলিয়ে হাজী কাজেম জুবেদা টেকনিক্যাল কলেজে নিয়ে যান। সেখানে বাপ্পি, কামাল পাশা, শামীম রেজা ও লাবলু শেখ ওই শিশুকে মুখ চেপে ধরে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে শিশুটি নিস্তেজ হয়ে পড়লে বাপ্পি তাবাসসুমকে গলা টিপে হত্যা করে এবং কাটিং প্লাস দিয়ে হাতের আঙ্গুল কাটে যাতে সবাই মনে করে কোনো জন্তু কামড়ে দিয়েছে। পরে বাপ্পি শিশুটির লাশ কাঁধে নিয়ে বাদশার বাঁশঝাড়ে ফেলে রেখে যান যাতে করে বাদশার ছেলে রাতুলকে সবাই সন্দেহ করে।
এদিকে শিশুর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় মামলা করেন শিশুর বাবা বেলাল হোসেন খোকন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ওই চারজনকে তাদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ব্রিফিংকালে পুলিশ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
শেরপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান জানান, গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছেন। শনিবার তাদেরকে আদালতে হাজির করে আট দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। তবে রিমান্ড আবেদনের আদেশ জানা যায়নি।