২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

আশুগঞ্জে ২ দল গ্রামবাসীর ফের সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ৫০

এলাকার পরিস্থিতি থমথমে
-

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের দুর্গাপুর গ্রামের দু’পক্ষের ফের সংঘর্ষে দুই পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশত লোক আহত হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ শনিবার সকাল সাড়ে দশটায় পূর্ববিরোধের জের ধরে দুর্গাপুর গ্রামের বারোঘইরা ও নজার বাড়ির লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রায় দেড় ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২০৯ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ৩৩ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।

সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্র ও ইট-পাটকেলের আঘাতে পুলিশের এএসআই এমদাদ হোসেন, কনস্টেবল আবু বকরসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালসহ স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

উভয় পক্ষের গুরুতর আহতরা হলেন, সাদেক মিয়া, মোবারক, মতিন, জনি, বিল্লাল, গাউছ, মানিক, শাকিল, সজিব, নজরুল ও জীবন।

বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকলেও এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার সিএনজিচালিত অটোরিকশা দ্রুত চালানো নিয়ে উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বারোঘইরা ও নজার বাড়ির লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষের সূচনা হয়।

স্থানীয়রা জানায়, নজেরবাড়ি গোষ্ঠীর ফজলু মিয়ার ছেলে সিএনজি চালক সুমনের সাথে বারোঘইরা গোষ্ঠীর কাশেম মিয়ার ছেলে মহরমের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এর জের শুক্রবার উভয় গোষ্ঠীর লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

শুক্রবারের সংঘর্ষে পুলিশ কনস্টেবল জাকির হোসেনসহ উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছিলেন। পরে পুলিশ লাটিচার্জ চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় কোনো পক্ষ মামলা দায়ের না করলেও শুক্রবার রাতেই থানায় পুলিশ এ্যাসল্ট মামলা রুজু করে।

উক্ত সংঘর্ষের ঘটনা মীমাংসার জন্য শনিবার সকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক হাজী মো: ছফিউল্লাহ মিয়া, দুর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো: জিয়াউল করিম সাজু খান ও আওয়ামী লীগ নেতা ইলিয়াছসহ ৪-৫ জনের একটি প্রতিনিধিদল দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করে বিরোধ মীমাংসাকল্পে আগামী সোমবার সালিশ সভার তারিখ নির্ধারণ করে চলে আসেন।

কিন্তু সালিশকারকগণ ঘটনাস্থল থেকে চলে আসার পর পরই নজেরবাড়ি গোষ্ঠীর মনু মিয়া, কামালসহ কয়েকজন বারোঘইরা গোষ্ঠীর ইমরানকে মারধর শুরু করে। এ নিয়ে উভয় গোষ্ঠীর লোকজন আবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষের ফের সংঘর্ষে ২ পুলিশসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়।

এদিকে, সংঘর্ষের পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন।

এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো: জাবেদ মাহমুদ বলেন, আগে থেকেই সংঘর্ষে লিপ্ত এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা ছিল। শনিবার সকালে উভয় পক্ষ পুনরায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২০৯ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ৩৩ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। বর্তমানে দাঙ্গাকবলিত এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। উভয় পক্ষের অভিযোগ ও ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সাথে পরামর্শ করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement