২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

অলৌকিকভাবে দাঁড়িয়ে গেল ঝড়ে উপড়ে পরা বটগাছ!

নওগাঁর রাণীনগরে ঝড়ে উপড়ে পরা একটি বট গাছ অলৌকিকভাবে অবিকল দাড়িয়ে গেছে - ছবি : নয়া দিগন্ত

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য,নওগাঁর রাণীনগরে ঝড়ে উপড়ে পরা একটি বট গাছ অলৌকিকভাবে অবিকল দাড়িয়ে গেছে। বটগাছটি কাটার সময় দিনের বেলায় এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে রাণীনগর উপজেলার একডালা ইউনিয়নের যাত্রাপুর গ্রামে। ঘটনার পর থেকে প্রতি দিনই উৎসক জনতা গাছটি একনজর দেখার জন্য ছুটে আসছেন।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের মৃত যদু প্রামানিক ছোট বেলা থেকেই জ্বিন বা মাদার এর প্রতি আশক্ত ছিলেন। মাঝে মধ্যেই তার উপর ভর করতো জ্বিন বা মাদার । প্রায় অর্ধশত বছর আগে মাদারে ভর করা অবস্থায় যদু প্রামানিক ছোট একটি বট গাছ নিয়ে এসে রোপন করেন। ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলে মাদারের গাছ হিসেবে পরিচিতি পায় বটগাছটি। জ্বিন বা মাদারের স্বরণে প্রতি বছর সেখানে মাদারের পালা গানের আসরও বসে। এছাড়া দুর দুরান্তরের লোকজন নানা রোগ বালায়ে আক্রান্ত ব্যধি দূর করতে ওই গাছে মানত করতো। অনেকের দাবি এই গাছে মানত করে অনেক লোকজন রোগ থেকে মুক্তিও পেয়েছে ।

গত মাসে সারাদেশে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে গাছটি উপড়ে পার্শ্বে একটি পাকা ভবনের উপর পরে। এতে ওই ভবনের সিরি রুম এবং ছাদের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্তু হয়। কিন্তু গাছটি উপড়ে গেলেও মাদারের ভয়ে কেউ ডাল পালা পর্যন্ত কাটতে সাহস পায়নি। ফলে মাসাধীককাল ধরে গাছটি ওই অবস্থায় পরে থাকে। এর পর রোজার মাত্র একদিন আগে গাছ কাটা লেবার নিয়ে এসে গাছের ডাল পালা কাটতে থাকে। গাছের মাথার অংশ কাটার সময় হঠাৎ করেই গাছটি অবিশ্বাস্যভাবে অবিকল পূর্বের ন্যায় দাড়িয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শিরা জানান, পরে থাকা গাছের উপর একজন লেবার দাড়িয়ে কাজ করছিল। কিন্তু গাছ দাড়িয়ে গেলেও লোকটি গাছ থেকে পরেও যায়নি এমনকি তার এতটুকু ক্ষতিও হয়নি। ঘটনা জানাজানি হবার পর থেকেই প্রতিদিনই উৎসক জনতা ছুটে আসছেন গাছটি এক নজর দেখার জন্য। তবে অনেকে মনে করছেন, গাছটি উপড়ে যাবার সময় ডাল পালার কারণে মাথার অংশ অনেক ভারী ছিল। সেগুলো কেটে দিলে গোরার অংশ ভারী হওয়ায় গাছটি হয়তো দাড়িয়ে গেছে। তবে একদম আগের ন্যায় অবিকল দাড়িয়ে যাওয়া, গাছের শিকর, গোড়ালি মিলে যাওয়াটাও অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন তারা।

গাছের পাশের বাড়ীর সুফিয়া বেওয়া (৫৫)জানান, বিয়ের পর থেকে তিনি এই গাছ দেখছেন,গাছের পার্শ্বে টয়লেট ছিল তাদের । রাত-বিরাত পর্যন্ত সেখানে চলা চল করলেও কোন আলামত দেখতে পাননি তারা । তবে সেখানে লোকজন মানত করতো, প্রতিবছর মাদারের পালা গান বসে বলে জানান তিনি।

ওই গ্রামের বৃদ্ধ হেকমত আলী (৬০) জানান,গাছটি অবিকল দাড়িয়ে যাওয়াটা একদম অস্বাভাবিক এবং অলৌকিক । গাছের তদারকিকারী ও মাদারের পালা গানের আয়োজক সুরজান বেওয়া (৭৫) ও পুটি বেওয়া (৬২) জানান, ওই গাছে মাদার বাস করে। প্রতি বছরই গাছের নিচে মাদার স্বরণে পালা গান করতে হয় ,না করলে অনেক সমস্যা হয় ।তারা যুক্তি দিয়ে বলেন,একশত জন লোক এসে গাছটি খাড়া করতে পারবে না। যদিও পারে তাহলে অবিকল দাড়িয়ে রাখার ক্ষমতা নেই। তাদের পূর্ণ বিশ্বাস, গাছটি মাদারই দ্বার করে রেখেছে । 


আরো সংবাদ



premium cement